
অনশন ভাঙছেন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী শাহীন আলম। ছবি: ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
চাকরির দাবিতে আমরণ অনশন শুরু করা সেই দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী শাহীন আলম অবশেষে চাকরি পাওয়ার আশ্বাস পেয়েছেন। জেলা প্রশাসক গতকাল সোমবার (৯ মে) রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাকে চাকরি প্রদানের আশ্বাস দেন। এ আশ্বাস পাওয়ার পরেই তিনি গতকাল অনশন ভাঙেন।
এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্স শেষ বর্ষের ওই দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী নিজ জেলা ঝিনাইদহের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে গতকাল সোমবার (৯ মে) সকালে আমরণ অনশন শুরু করেছিলেন।
স্থানীয়রা জানান, গতকাল বিকেল ৪টার দিকে শাহীনকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় নিয়ে যাওয়ার জন্য নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন ঝিনাইদহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে আসেন। তিনি তাকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। তখন তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন সরকারি চাকরির নিশ্চয়তা না পাওয়া পর্যন্ত অনশন ভঙ্গ করবেন না। পরে ওইদিন সন্ধ্যায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সেলিম রেজা শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে আসেন। তাকেও সরকারি চাকরির নিশ্চয়তা না পাওয়া পর্যন্ত অনশন ভঙ্গ করবেন না বলে জানিয়ে দেন তিনি। পরে জেলা প্রশাসকের আশ্বাসে গতকাল রাত সাড়ে ১০টার দিকে তিনি অনশন কর্মসূচি স্থগিত করেন।
জেলা প্রশাসক ঢাবি শিক্ষার্থী দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শাহীন আলমকে আপাতত একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে এবং পরবর্তী সময়ে সরকারি চাকরি দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, জীবনের কঠিনতম বাঁধা পেরিয়ে ২০১৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতক শেষ করেন শাহীন। বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে চাকরির পরীক্ষার লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও তিনি চাকরি পাচ্ছিলেন না।
করোনাকালীন সময়ে ২০২১ সালে দেশ বিদেশের ১১৩ জন শিক্ষার্থীকে অনলাইনে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ দিয়ে সাড়া ফেলে দেন শাহীন। অনলাইন মাধ্যমে এ প্রশিক্ষণ দিতে কারো কাছ থেকে কোনো টাকা নেননি তিনি। নিজে একজন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী হয়ে দেশ বিদেশের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার পর থেকে আলোচনায় উঠে আসেন তিনি।