
বিক্রি করতে না পেরে নালায় বাঙ্গি ফেলে দিচ্ছেন কৃষকরা। ছবি: গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় তরমুজ ও বাঙ্গি বিক্রি নিয়ে বিপাকে পড়েছেন এলাকার কৃষকরা। অধিক লাভের আশায় দেরি করে বাঙ্গি চাষ করায় বিক্রি হচ্ছে না এই সুস্বাদু ফল। সড়কের পাশে, আড়তে ও বিভিন্ন অস্থায়ী বাজারগুলোতে পড়ে রয়েছে তরমুজ ও কাঁচা পাকা বাঙ্গি।
কিছুদিন আগেও এর কদর ছিলো খুব বেশি। ক্রেতারা এই ফলটি ক্রয়ের জন্য ছিল খুবই আগ্রহী। কিন্তু এখন বাজারে গ্রীষ্মকালীন অন্যান্য ফল ওঠায় ক্রেতারা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে এই ফল থেকে। শুধু বাঙ্গি নয় কিছুদিন আগেও যার প্রতি কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হতো, যা সাধারণ মানুষের হাতের নাগালের বাইরে ছিল সেই রসালো ফল তরমুজও।
উপজেলার কলাবাড়ি ইউনিয়নের দোলভিটা ও চকপুকুরিয়ায় পাকা বাঙ্গির অস্থায়ী বাজার গুলোতে দেখা যায় এক গামলা বাঙ্গির দাম ২০ থেকে ৩০ টাকা মাত্র। প্রত্যেকেই দশ থেকে পনের গামলা বাঙ্গি বিক্রি করতে আসে। এক একটা গামলার আকার অনুযায়ী দশ থেকে পনেরটা বাঙ্গি রাখা থাকে। বিগত বছরে বাঙ্গির দাম অনেক বেশি ছিল এবং চলতি বছরে বাঙ্গি ওঠার শুরুতে ভালো দাম থাকায় অনেক চাষিরা লাভবান হয়েছেন।
অপরদিকে দেড়িকরে যে সব চাষিরা বাঙ্গি চাষ করেছেন তাদের গুনতে হচ্ছে লোকসানের টাকা। বিভিন্ন এনজিও এবং ব্যাংক থেকে কিস্তির টাকা উঠিয়ে অধিক পরিমাণে চাষিরা বাঙ্গি ও তরমুজের চাষ করেছেন। দাম না থাকায় এখন তাদের খরচের টাকাও উঠছে না।
হিজল বাড়ি থেকে বাঙ্গি বিক্রি করতে আসা সজল বাড়ৈ বলেন, আমি দেড় বিঘা জমিতে বাঙ্গি চাষ করেছি আমার খরচের টাকাও উঠবে না। এখানে পাকা বাঙ্গি বিক্রি করতে এসেছি কেউ কিনছে না। এক গামলা বাঙ্গি বিক্রি করতে হয় ৩০ থেকে ৫০ টাকায়। প্রতিটি বাঙ্গির দাম ৩ থেকে ৫ টাকায় বিক্রি হয় এতে সার কীটনাশকের মূল্য হবে না।
পাকা বাঙ্গি ক্রেতা মৃনাল বৈদ্য বলেন, কৃষকের কাছ থেকে পাকা বাঙ্গি খুব কম দামে ক্রয় করে ভোক্তাদের কাছে সীমিত লাভে বিক্রি করতে হয়। এখন বাঙ্গি কম খায় এর কারণ হচ্ছে গ্রীষ্মকালীন বিভিন্ন প্রকারের ফল বাজারে পাওয়া যায়।
অপরদিকে কালিগঞ্জ বাঙ্গি ও তরমুজের আড়তের একই অবস্থা। আড়ত ভর্তি কাঁচা পাকা বাঙ্গি ও তরমুজ পড়ে রয়েছে কিন্তু নেই কোনো পাইকার।
আড়তদার মনিমোহন বল্লভ জানান, হঠাৎ করে তরমুজ ও বাঙ্গির কোনো পাইকার নেই। দেশের বিভিন্ন স্থানে কাঁচামালের আড়তদারদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেন দেশের অন্যান্য স্থানের তরমুজ ওঠায় তরমুজের দাম খুব কমে গেছে, অন্যদিকে অন্যান্য ফল বাজারে আসায় তরমুজের প্রতি মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন ক্রেতারা।