-627cc87eb0296.jpg)
বোরো ধান নিয়ে বিপাকে কৃষক। ছবি: ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
ঝিনাইদহে বৈরী আবহাওয়ায় ইরি বোরো ধান নিয়ে বিপাকে পড়েছে কৃষকরা। চলতি মৌসুমে ধানের উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি, মাঠে পাকা ধান শ্রমিক সংকটে কাটতে না পারা এবং ধান কাটার পর প্রাকৃতিক দুর্যোগ আসানির বৃষ্টিপাতে দিশেহারা হয়ে পড়েছে ধান চাষিরা।
গতকাল বুধবার (১১ মে) জেলাতে উৎপাদিত ধানের ৪৭ শতাংশ কাটা শেষ হয়েছে। জমিতে কাটা ধান বৃষ্টির পানিতে ভেসে আছে। ধানে চারা গজানো শুরু হয়েছে। নিম্নাঞ্চল পানিতে প্লাবিত হয়ে গেছে।
কৃষকরা বলেন, বৈরী আবহাওয়ার কারণে কৃষি শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। আর এই সুযোগে কিছু শ্রমিক পাওয়া গেলেও মজুরি দ্বিগুণ। জেলাতে এক সাথে ধান পেকে যাওয়া এবং দুর্যোগের খবরে এমন অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ডেফলবাড়ি গ্রামের কৃষক মিজানুর রহমান বলেন, গত মৌসুমের তুলনায় এবার বিঘা প্রতি জমিতে প্রায় ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে। গত মৌসুমের তুলনায় চলতি মৌসুমে (২০২১/২২) ডিজেল, বীজ, কীটনাশক, শ্রমিকসহ নানা ধরনের খরচ বৃদ্ধিতে এই অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। আবার বিদ্যুতের দাম না বাড়লেও বিদ্যুৎ মোটর সেচে মালিকরা বিঘা প্রতি জমিতে দেড় হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ বাড়িয়েছে। এখন ধান কাটতে শ্রমিক সংকটের পাশাপাশি অধিক দাম বৃদ্ধি।
তিনি আরো বলেন, যে সকল কৃষক ধান কেটেছে বৃষ্টির কারণে জমিতে পানি জমে ধান ভেসে আছে। বাধ্য হয়ে তারা বেশি দামে শ্রমিক নিচ্ছে। শ্রমিক সংকটের কারণে একজন শ্রমিক সাড়ে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকাতে পাওয়া যাচ্ছে না।
জেলার কোটচাঁদপুর উপজেলার শিবনগরের কৃষক মহিউদ্দিন বলেন, গত বছর প্রতি লিটার ডিজেলের দাম ছিল ৬৫ টাকা। আর এবছর ৮০ টাকা। কিন্তু গ্রামের বাজার ও দোকান গুলোতে ১ থেকে ৫ টাকা পর্যন্ত বেশি দামে বিক্রি হয়। একই অবস্থা সারসহ কীটনাশকের দামের বিষয়ে। সে হিসেবে গত বছর প্রায় ১৪ থেকে ১৬ হাজার টাকা খরচ হলেও এবছর প্রায় ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ হবে।
পাশে পাঁচলিয়ার কৃষক জাহিদুল ইসলাম বলেন, এখন ধান কাটা শুরু হয়েছে। কিন্তু শ্রমিক সংকট। প্রতি বিঘা জমির ধান কাটার জন্য প্রায় সাড়ে ৭ হাজার থেকে ৮ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। যেখানে প্রতি বিঘা ধান কাটার জন্য ২ হাজার ৪০০ থেকে আড়াই হাজার টাকা। জমি থেকে আঁটি ( ছোট) বাঁধতে ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা। দূরত্ব হিসেবে গাড়িতে করে আনতে ১ হাজার টাকা দেড় হাজার এবং ঝাড়তে ২ হাজার থেকে আড়াই হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ হচ্ছে। কিন্তু বৃষ্টির কারণে জমিতে পানি জমে গেছে। যারা ধান কেটেছে বৃষ্টির পানি জমে ধান ভেসে আছে। জমিতে ধানের চারা গজিয়ে গেছে।
ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আজগর আলী বলেন, জেলায় ৭৯ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে ধানের আবাদ হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রা থেকে ২৯৫ হেক্টর বেশি। এখন পর্যন্ত উৎপাদনের ৪৭ ভাগ জমির ধান কাটা হয়েছে। উৎপাদন খরচ কমাতে কৃষকদের প্রণোদনার আওতায় সহযোগিতা করা হয়েছে।