বিপৎসীমার ১৫ সেমির উপরে সুরমার পানি, কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৭ মে ২০২২, ১২:৩৩

সুনামগঞ্জের ১০টি গ্রাম বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। ছবি: সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। এলাকার হাওরাঞ্চলসহ নিম্নাঞ্চল ও সীমান্ত এলাকা তলিয়ে গেছে। এমনকি এসব অঞ্চলের উঁচু এলাকাও তলিয়ে যাচ্ছে। নষ্ট হচ্ছে মৌসুমি সবজি। পরিস্থিতি অবনতির কারণে ভোগান্তির হাত থেকে সহসাই মুক্তি পাবেন না স্থানীয়রা।
পাউবো সূত্রে জানা গেছে, আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে অতিক্রম করছে। পরিস্থিতি ক্রমান্বয়ে আরো খারাপের দিকে যাচ্ছে।

জেলার ছাতক, দোয়ারা বাজার, তাহিরপুর, সুনামগঞ্জ সদর, শাল্লা, দিরাই, জগন্নাথপুর, বিশ্বম্ভরপুর, মধ্য নগরসহ ১২টি উপজেলার নিম্নাঞ্চল পাহাড়ি ঢলের পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে। হাওর প্রধান সুনামগঞ্জের রক্তি, গজারিয়া, সুরমা নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় বিভিন্ন স্থানে বন্যা দেখা দিয়েছে। বিশ্বম্ভরপুরে সলুকাবাদ ইউনিয়নের অবস্থাও অবনতি হয়েছে। সেখানে কয়েকটি রাবার ড্রাম উপচে গ্রাম ও ফসল ডুবেছে।
খবর নিয়ে জানা গেছে, সদর উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের ইব্রাহীম, সদরগড়, সৈয়দপুর ও দোয়ারাবাজার উপজেলার তিন ইউনিয়নের বরকতনগর, শরীফপুর গোজাইড়া, মহব্বাতপুর মামদপুর, মারফতি গ্রামসহ অনন্ত ১০ গ্রামের মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন। এছাড়াও জেলার তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার নিম্নাঞ্চলের সব সড়ক ও ঘরবাড়ি তলিয়ে গেছে।
কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, ঢলের পানিতে তাহিরপুর ও সদর উপজেলার উচ্চ এলাকার ২০ হেক্টর বোরো জমি তলিয়ে গেছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনই বলা যাচ্ছে না।

হাওরপাড়ের ক্ষতিগ্রস্তরা জানিয়েছেন, ঢলের পানিতে তাদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে এবার অনেক বেশি হতে পারে।
সদর উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের ইব্রাহীমপুর গ্রামের বাসিন্দা উজ্জ্বল মিয়া জানান, ঢলের পানিতে রাস্তাঘাট ডুবে গেছে। পানির কারণে চলাচল করা যাচ্ছে না। অনেক ঘরে পানি উঠেছে।
দোয়ারাবাজার উপজেলার লক্ষীপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা মুন্না মিয়া জানান, ঢলের পানি দোয়ারাবাজার উপজেলার কাংলা, নাইন্দা, গোজাউরা, সিংরাই হাওরের স্কিমের ধান তলিয়ে গেছে। পাহাড়ের সীমান্তবর্তী অন্তত ১০টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ পরিচালক বিমল চন্দ্র সোম বলেন, ঢলের ক্ষয়ক্ষতির তথ্য এখনো পুরোপুরি নিরূপণ করা হয়নি। আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। পানি নেমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এখন পর্যন্ত তাহিরপুর উপজেলা ১০ হেক্টর ও সদর উপজেলার ১০ হেক্টর জমির ধান তলিয়ে গেছে বলে জানান তিনি।
সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার রাবার ড্রামগুলোকে দুই ফুট নামানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নতুবা আরো গ্রাম ডুবে যাবে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।