পদ্ম ফুলে ছেয়ে থাকায় বিলটির নামই ছিল ‘পদ্ম’ বিল। কিন্তু কালের বিবর্তনে হারিয়ে গেছে সেটি। বিলের জায়গায় চাষ হচ্ছে ধান। বিস্তীর্ণ এলাকায় বহু বছর দেখা নেই পানির। সম্প্রতি সেখানেই ঘের বানিয়েছেন কয়েকজন চাষি। এতেই যেন ফিরে এসেছে হারিয়ে যাওয়া সেই বিলটি!

ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলায় উমেদপুর ইউনিয়নের হাবিবপুর এলাকার একটি বিলে ফুটেছে অসংখ্য পদ্ম ফুল। নয়নাভিরাম এ দৃশ্য দেখতে ভিড় করছেন সাধারণ মানুষ।

স্থানীয়রা জানান, হাবিবপুর, বারইপাড়া, ষষ্টিবর ও ইব্রাহিমপুর গ্রামের মধ্যবর্তী স্থানে এক বিরাট বিল ছিল। এ বিলে পদ্ম ফুলের সমারোহ ছিল বলে নাম ছিল পদ্ম বিল। কিন্তু বর্তমানে বিলের অস্তিত্ব নেই। বিল জুড়ে ধান চাষ হচ্ছে। জি কে প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় এ বিলের মৃত্যু হয়। কয়েক বছর আগে বিলের নিচু এলাকায় ঘের তৈরি করে মাছের চাষ করা হচ্ছে। তার মধ্যে সুজন নামের এক জনের ঘেরে পদ্ম গাছ গজাতে শুরু করে। এখন ঘের পদ্ম গাছে ভরে গেছে। ফুটছে পদ্ম ফুল। তবে এ পদ্ম দেখতে শ্বেতশুভ্র। আকারে বেশ বড়।

সরেজমিনে দেখা যায়, অসংখ্য পদ্ম ফুল ফুটে আছে, সাথে ফুলের কুঁড়িও। সাধারণত শরত কালে বিলে ঝিলে পদ্ম ফুটে থাকে। কিন্তু গ্রীষ্মের খরতাপের মধ্যে হাবিবরপুরে মাছের ঘেরে পদ্ম ফুল ফুটেছে। 

স্থানীয় সুজন মন্ডল বলেন, বর্ষা শুরু হলে আরো বেশি ফুল ফুটবে। 

উমেদপুর ইউনিয়নের হাবিবপুর গ্রামের সাবেক মেম্বর দেলওয়ার হোসেন বলেন, তারা মুরব্বীদের কাছে শুনেছেন পদ্ম বিল বর্ষা মৌসুমে পানিতে থৈ থৈ করতো। আর শরতের আগমনে পদ্ম ফুলে ঢেকে যেত বিল। সৃষ্টি হতো এক অপরূপ দৃশ্যর। অনেকগুলো ঘেরের মধ্যে ৮০ বছর পর ৫ - ৬ বছর আগে একটি ঘেরে পদ্ম ফুটতে শুরু করে। গাছ কেটে ফেললে ফের চারা গজিয়ে গাছে ভরে যায়। পদ্মের শোভা দেখতে মানুষের সমাগম হচ্ছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ঝিনাইদহের উপ-পরিচালক মো: আজগর আলি বলেন, পদ্ম ফুলের কন্দ (মোথা) দীর্ঘ দিন মাটির নিচে সুপ্ত অবস্থায় থাকতে পারে। অনুকূল পরিবেশ পেলে আবার গাছ গজায়। তবে বর্ষার শেষে বিল ঝিলে পদ্ম বেশি ফুটে থাকে। বিল বাঁওড় শুকিয়ে যাওয়ায় পদ্ম ফুলের কম দেখা পাওয়া যায়।