
আগুন নিয়ন্ত্রণে থাকলেও এখনো পুরোপুরি নেভেনি। ছবি : স্টার মেইল
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোর আগুন ৬০ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে থাকলেও এখনো নেভেনি। আগুন পুরোপুরি নির্বাপণে টানা চেষ্টা করে যাচ্ছেন ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা। ঘটনাস্থলে কাজ করছেন সেনাবাহিনী সদস্যরাও।
ফায়ার সার্ভিস বলছে, টানা কাজ করতে করতে বেশ কয়েকজন দমকলকর্মী ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। ডিউটি ভাগ করে দেওয়ার পরও আগুনের তীব্রতা থাকায় ক্লান্ত তারা।
আজ মঙ্গলবার (৭ জুন) সকালে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ সহকারী পরিচালক পূর্ণ চন্দ্র মুৎসুদ্দী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, বিএম ডিপোর আগুন এখনও নেভেনি। আমাদের টিম কাজ করছে। এখন আমরা রোটেশন অনুযায়ী কাজ করছি। আগুন পুরোপুরি নেভাতে সময় লাগবে।
তিনি আরো বলেন, একটি কনটেইনার নামাতে সেটিং করতে অনেক সময় লেগে যায়। নামানোর পরে আগুনের তাপের কারণে দরজা খোলা যায় না। দেখা যায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দরজার লোহা বড় হয়ে গেছে। তখন দরজাকে কাটতে হয়। স্টিলের দরজা কাটতেও অনেক সময় লেগে যায়। এরপর এগুলোতে পানি দিয়ে আগুন নেভাতে হয়। কনটেইনার মুভার যদি আরো কয়েকটি পাওয়া যায় তাহলে কাজটি দ্রুত এগিয়ে নেওয়া যেতো।
আগুন নিয়ন্ত্রণে গত রবিবার (৫ জুন) থেকে কাজ করছে সেনাবাহিনীর একটি টিম।
ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা জানান, এখনো ২৮টি কনটেইনারের ভেতরে থেমে থেমে আগুন জ্বলছে। উত্তপ্ত হয়ে আছে কনটেইনারগুলো। এর মধ্যে রাসায়নিক ভর্তি কনটেইনারও আছে। তবে সেগুলো এখনো চিহ্নিত করা যায়নি। জ্বলতে থাকা যেসব কনটেইনারে রপ্তানি পোশাক পণ্য আছে বলে তারা মনে করছেন, সেগুলোর দরজা খুলে ভেতরে থাকা পণ্যের আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন।
তারা আরো জানান, কিন্তু এখনো ঝুঁকিপূর্ণ ১২টি রাসায়নিক ভর্তি কনটেইনার শনাক্ত করতে না পারার কারণে তাদের আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতে বেগ পেতে হচ্ছে।
আজ সকাল ৯টার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি বড় ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। চারটি কেমিক্যালযুক্ত কনটেইনার সরিয়ে নেওয়া হয়েছে নিরাপদ স্থানে। তবে সেই কনটেইনারগুলো সরিয়ে নিলেও ফায়ার সার্ভিস বলছে সেগুলো পরবর্তীতে বিস্ফোরণের আশঙ্কা রয়েছে।
মূল আগুন নিয়ন্ত্রণের পরে কেমিক্যালযুক্ত এই কনটেইনার নিয়ে কাজ করবে ফায়ার সার্ভিসের বিশেষজ্ঞ ইউনিট।
বৃহত্তর কুমিল্লা ফায়ার স্টেশনের সহকারী পরিচালক মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, এখন যে কনটেইনারগুলো জ্বলছে সেগুলোতে গার্মেন্টসপণ্য রয়েছে বলে নিভছে না। এ কারণে আমাদের বেগ পেতে হচ্ছে। তবে আশা করছি আজকের মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণ আসবে। আগুন নিভে গেলে সেখানে সরাসরি প্রবেশ করে উদ্ধার অভিযান চালানো হবে। সেখানে যদি কোনো মরদেহ থেকে থাকে তা উদ্ধার করা হবে।
গত শনিবার (৪ জুন) রাত ৯টার দিকে বিএম কনটেইনার ডিপোর লোডিং পয়েন্টের ভেতরে আগুনের সূত্রপাত হয়। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করার সময় রাসায়নিক থাকা একটি কনটেইনারে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে।
এ অগ্নিকাণ্ডের এখন পর্যন্ত ৯ ফায়ার সার্ভিস কর্মীসহ ৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন চার শতাধিক।