Logo
×

Follow Us

জেলার খবর

মাশরুম চাষে শফিউলের বাজিমাত

Icon

আজিজুর রহমান পায়েল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

প্রকাশ: ২২ জুন ২০২২, ১৫:৫১

মাশরুম চাষে শফিউলের বাজিমাত

প্রতিনিয়তই মাশরুমের চাহিদা বাড়ছে। ছবি: ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় প্রথমবারের মতো মাশরুমের চাষ শুরু হয়েছে। চাষি মো. শফিউল আজম খান আগে ঢাকায় এটা চাষ করতেন। তবে এখন নিজ এলাকায় এটা চাষ করে সফলতা দেখতে পাচ্ছেন।

শুরুতেই তিনি মাশরুম চাষ করে বাজিমাত করে ফেলেছেন। প্রতিনিয়তই মাশরুমের চাহিদা বাড়ছে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে নিজের চাষের পরিধি বাড়ানোর পাশাপাশি ছড়িয়ে দিতে চান সর্বত্র।

শফিউল আজম খান ঢাকায় মাশরুম চাষ শুরু করেন ২০০৫ সালে। নিজে চাষ করার পাশাপাশি একটি বেসরকারি উদ্যোগে প্রকল্পের আওতায় মিরপুর বস্তিতে বসবাসকারীদেরকে প্রশিক্ষণও দেন। সেখানে বেশ ভালোভাবে প্রকল্প শুরু হলেও শেষ পর্যন্ত থমকে যায়। শফিউল আজম আখাউড়া পৌর এলাকার রাধানগরে মাশরুম চাষ শুরু করেছেন বছর দুয়েক আগে। টিনশেড একটি দোচালা ঘরে মাশরুমের চাষ করছেন। তার ঘরের বেশ কয়েকটি তাকে মাশরুমের উৎপাদনের হাজারো প্যাকেট। এসবের কোনোটিতে ছোট-বড় আকারের মাশরুম চোখে পড়ে। পাশের একটি দালানে মাশরুম উৎপাদনের কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন যন্ত্রপাতি রাখা আছে।   

তার বাগানে মো. শাহ আলম নামে এক ব্যক্তি মাশরুম চাষ বিষয়ে জানান, চালের গুঁড়া, গমের ভুসি, কাঠের গুঁড়া, চুনসহ আরও কিছু জিনিস মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করা হয়। এটিকে প্রথমে বিশেষভাবে পলিথিনের প্যাকেটে পরিমাণমতো রাখা হয়। এরপর অন্তত ৬০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় পাঁচ ঘণ্টার মতো সেদ্ধ করা হয়। ওই প্যাকেটটি নির্ধারিত তাপমাত্রায় ২১ দিন পর্যন্ত রাখা হয়। এরপর প্যাকেটের সামনের অংশ কেটে দিয়ে তাকে রাখা হয়। নিয়মিত পরিমাণ মতো পানি দেওয়া হয় এসব প্যাকেটে। চার-পাঁচ দিন পর থেকেই ওসব প্যাকেটে মাশরুম উৎপাদন শুরু হতে থাকে।         

মো. শাহ আলম আরও জানান, তিনি কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাসিন্দা। দীর্ঘদিন চীনে ছিলেন। সেখানেই মাশরুম চাষ দেখে উদ্বুদ্ধ হন। প্রথমে নিজে চেষ্টা করেন। এরপর বিভিন্ন মাশরুম উৎপাদনের প্রতিষ্ঠানে চাকরি নেন। প্রায় ২০ বছর ধরেই তিনি মাশরুম চাষের সঙ্গে জড়িত। যেখানেই কাজ করেছেন, সেখানেই এর চাহিদা দেখেছেন। দিন দিন এর চাহিদা বেশ বাড়ছে বলে জানিয়েছেন তিনি। 

শফিউল আজম খান বলেন, ‘ছায়াযুক্ত ঠান্ডা ভেজা স্থান মাশরুম চাষের জন্য উপযুক্ত। শীতের দিনে মাশরুম উৎপাদন ভালো হয়। মাশরুম চাষে কোনো আবাদি জমির প্রয়োজন হয় না। বসতঘরের পাশে অব্যবহৃত জায়গা ও ঘরের বারান্দা ব্যবহার করেও মাশরুম উৎপাদন করা সম্ভব।’

তিনি আরও জানান, মাশরুম ২০০-৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হয়। তবে শুকনো মাশরুমের দাম একটু বেশি। সবজি হিসেবে মাশরুমের ব্যবহার খুব বেশি। তবে এখন বেসন দিয়ে ভেজে খাওয়ার প্রচলন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। 

প্রতি মাসে এখান থেকে ৩০-৪০ হাজার টাকা আয় হচ্ছে বলে জানিয়ে শফিউল আজম খান বলেন, ‘আমি চাই মাশরুম চাষের আরও প্রসার ঘটুক। কেউ যদি আমার কাছে এ বিষয়ে পরামর্শ চায় কিংবা প্রশিক্ষণ নিতে চায় তাহলে আমি রাজি আছি।’ 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহানা বেগম বলেন, ‘আখাউড়ায় প্রথমবারের মতো মাশরুম চাষ হচ্ছে। চাষি শফিউল আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। আশা করছি, শিগগিরই সরকারিভাবে মাশরুম চাষের একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হবে। তখন তাকে সহায়তা করা যাবে।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫