মহানবীকে নিয়ে ফেসবুকে কটূক্তি
সংখ্যালঘুদের বাড়ি-মন্দিরে হামলায় ২৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেপ্তার ৫
অভিযুক্ত তিন দিনের রিমান্ডে

নড়াইল প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৮ জুলাই ২০২২, ১০:৩৫

আকােশ সাহাকে আদালতে নিয়ে যাওযার সময় তোলা ছবি। ছবি: নড়াইল প্রতিনিধি
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার দিঘলিয়া এলাকায় হযরত মোহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে ফেসবুকে কটূক্তির অভিযোগে কলেজছাত্র আকাশ সাহার (২০) বিরুদ্ধে তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। একইদিনে এই কটূক্তিকে কেন্দ্র করে ওই এলাকায় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা চালানোর ঘটনায় ২৫০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই মামলার পর পাঁচজন হামলাকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গতকাল রবিবার (১৭ জুলাই) বিকেলে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোরশেদুল আলমের আদালতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা লোহাগড়া থানার এসআই মাকফুর রহমান অভিযুক্ত আকাশের সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করলে বিচারক শুনানি শেষে তিনদিনের মঞ্জুর করেন।
এর আগে শনিবার (১৬ জুলাই) রাতে খুলনা থেকে আকাশ সাহাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এদিকে মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে দিঘলিয়া গ্রামের সালাহ উদ্দিন কচি সরদার বাদী হয়ে লোহাগড়া থানায় আকাশের নামে ‘ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে দাঙ্গা সৃষ্টির অপরাধ’ সংক্রান্ত মামলা দায়ের করেন।
অন্যদিকে, গতকাল রবিবার রাতে সাহাপাড়ার বাড়িঘর ও দোকান ভাংচুর এবং দুটি মন্দিরে হামলার ঘটনায় ২০০ থেকে ২৫০ জনকে আসামি করে লোহাগড়া থানায় মামলা দায়ের করেন এসআই মাকফুর রহমান। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন লোহাগড়া থানার ওসি শেখ আবু হেনা মিলন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ১৫ জুলাই লোহাগড়া উপজেলার দিঘলিয়া সাহাপাড়ার কলেজছাত্র আকাশ সাহার ফেসবুকআইডি থেকে মহানবীকে কটূক্তিমূলক একটি স্ট্যাটাস দেওয়া হয়। বিষয়টি ওইদিন জুম্মার নামাজের পর বিভিন্ন পেশার মানুষের নজরে আসে। এরপর বিক্ষুব্ধ লোকজন আকাশ সাহার গ্রেপ্তার ও বিচার দাবিতে তাদের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ করেন। ওইদিন বিকেল থেকে উত্তেজনা আরো বাড়তে থাকে।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে একদল সহিংস মানুষ একপর্যায়ে সাহাপাড়ার পাঁচ থেকে ছয়টি বাড়িতে ভাংচুর চালান এবং একটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন। আগুনে দুই রুম বিশিষ্ট টিনের শেডের দেয়াল ঘরটি পুড়ে গেছে। এছাড়া সাহাপাড়ার মন্দিরের চেয়ার ও সাউন্ডবক্স এবং আখড়াবাড়ি মন্দিরের টিনের চালা ভাংচুরসহ ইট ছুঁড়েছে বিক্ষুব্ধরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও র্যাব মোতায়েন রয়েছে। এছাড়া পুলিশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি করেছে। ঘটনার পর আকাশের বাবাকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়।
পুলিশ সুপার প্রবীর কুমার রায় বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে নিশ্চিত করেছেন।