
সিলেটে এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পালন করছেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। ছবি: সংগৃহীত
সিলেটে এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তৃতীয় দিনের মতো আজ বুধবার (৩ আগস্ট) ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ধর্মঘট পালন করছেন। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন রোগীরা।
গুরুত্ব বিবেচনায় হাসপাতালের জরুরি ও হৃদরোগ বিভাগ ছাড়া আর অন্য সব বিভাগে চিকিৎসাসেবা বন্ধ রয়েছে, যার ফলে স্বাস্থ্যসেবায় চরম সংকট দেখা দিয়েছে।
তবে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়া দাবি করেন, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যসেবা থেমে নেই।
জানা গেছে, হাসপাতালে কর্মরত অবস্থায় নারী ইন্টার্ন চিকিৎসককে উত্ত্যক্ত ও মেডিকেল কলেজের দুই শিক্ষার্থীর ওপর হামলার অভিযোগে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা গত সোমবার (১ আগস্ট) রাতে এই ধর্মঘট শুরু করেন।
ধর্মঘটের প্রথম দিন গত সোমবার রাতে প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টার ধর্মঘটে হাসপাতালের জরুরি সেবায় ধ্বস নেমে যায়। পরে প্রশাসনের আশ্বাসে হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও কলেজে স্থায়ী পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপনের দাবির জন্য গতকাল মঙ্গলবার (২ আগস্ট) বেলা ২টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়ে তারা অবরোধ তুলে নেন।
কিন্তু দাবি পূরণ না হওয়ায় গতকাল মঙ্গলবার বিকেল ৫টা থেকে ফের আন্দোলন শুরু হয়। পরে তারা আজ বুধবার বেলা ১১টা পর্যন্ত দাবি পূরণের জন্য সময় বেঁধে দেন। বেঁধে দেওয়া সময়ে তাদের দাবি পূরণ করা হয়নি। এ কারণে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন না ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। তবে এখনো নতুন কোনো কর্মসূচির ঘোষণা দেননি তারা।
হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ডা. আহমদ মুন্তাকিম চৌধুরী জানিয়েছেন, জরুরি বিভাগ ও হৃদরোগ বিভাগের গুরুত্ব বিবেচনায় তারা দায়িত্ব পালন করবেন। তবে ধর্মঘট চলবে। দাবি পূরণ হলেই ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হবে।
হাসপাতালে কর্মরত অবস্থায় নারী ইন্টার্ন চিকিৎসককে উত্ত্যক্ত ও মেডিকেল কলেজের দুই শিক্ষার্থীর ওপর হামলার অভিযোগে পৃথক মামলা হয়েছে। এই মামলায় মহানগর আওয়ামী লীগ নেতার ভাতিজাকে মূল অভিযুক্ত করা হয়েছে।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলী মাহমুদ জানান, দুই শিক্ষার্থীকে ‘হত্যা চেষ্টার’ অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সাত জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত তিন থেকে চার জনকে আসামি করা হয়েছে। নারী ইন্টার্ন চিকিৎসককে উত্ত্যক্তের ঘটনায় একজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত তিন থেকে চার জনকে আসামি করা হয়।
এদিকে ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করছেন মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা। মেডিকেল কলেজে বহিরাগত প্রবেশ বন্ধ, শিক্ষার্থী ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।