
সাতক্ষীরায় পতিত জমিতে তিলের আবাদ। ছবি: সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
দেশজুড়ে ভোজ্য তেলের অব্যাহত মূল্যবৃদ্ধির প্রেক্ষিতে সাতক্ষীরায় পতিত জমিতে ব্যাপকভাবে তিল চাষ শুরু করেছে কৃষকরা। কোনো ধরনের পরিচর্যা ছাড়াই পতিত জমিতে বিঘা প্রতি সাত মন তিল উৎপাদন হচ্ছে।
নিত্য প্রয়োজনীয় প্রায় সব পণ্যের দাম ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। এ অবস্থায় সাতক্ষীরার কৃষকরা পতিত জমিতে তিল চাষ করে পাচ্ছেন প্রত্যাশার চেয়ে বেশি লাভ। পাশাপাশি নিজেদের ঘরের ভোজ্য তেলের চাহিদাও মিটছে।
জলবায়ু পরিবর্তন জনিত কারণে বারবার দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ এ জেলার মানুষ, তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কৃষক। তার সাথে এবার যখন সারাদেশ যখন বন্যায় ডুবছে, তখন সাতক্ষীরায় চলছে অনাবৃষ্টি জনিত ক্ষরা। যার ফলে এ জেলায় তিল চাষে এসেছে প্রত্যাশার চেয়েও বেশি ফলন।
চাষীরা এই জেলার জলবায়ু এবং আবহাওয়ায় যথাযথ সহনশীল ‘বিনা তিল ২’। যা দেশের পরমাণু কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট উদ্ভাবিত তিল চাষাবাদে সফলতা পাচ্ছেন এবং তাদের চাওয়ার সবটাই পূরণ হচ্ছে।
এই তিল কালো এবং তিন থেকে চারটি প্রধান শাখা হয়। অনেকগুলো উপশাখা হয় ফলে পরের সংখ্যা বৃদ্ধি পায় এবং ফলন ভালো হয়। জীবনকালও ৯০দিনের মতো।
খুলনা কৃষি বিদ্যালয়ের অধ্যাপক রাকিবুল হাসান বলেন, তিলের তেল পুষ্টিকর ও ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড সম্পন্ন। তাই এই তেল খেলে ত্বক ও স্বাস্থ্য ভাল থাকে। তাছাড়া চাষাবাদের খরচও অনেক কম। আগাছা পরিষ্কার ও পানির তেমন প্রয়োজন হয় না।
বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. বাবুল আকতার বলেন, খরিপ-১ মৌসুমে পতিত জমিতে তিল চাষ করে সাতক্ষীরার কৃষকরা লাভবান হচ্ছে। এই জেলার মতো দেশের সর্বত্র এই তিল চাষাবাদ করতে পারলে প্রতিবছর প্রায় ২৭ হাজার কোটি টাকার ভোজ্য তেল বিদেশ থেকে আমদানি করতে হবে না।
প্রসঙ্গত, এবার সাতক্ষীরা জেলার উপকূলের পতিত জমিতে ৫৫টি প্রদর্শনী খামার করেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। কৃষকদের দেওয়া হয়েছে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও বিনামূল্যে ২৫০ কেজি তিলের বীজ। যা থেকে কৃষকরা ৩০০ বিঘা জমিতে তিলের চাষ আবাদ করেছে। যার অধিকাংশ কর্তন করে ভাঙানোর পর্যায়ে চলে গেছে।