বিদ্যালয়ের সভাপতি কর্তৃক শিক্ষক-কর্মচারী লাঞ্ছিত; থানায় জিডি

পিরোজপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১১ আগস্ট ২০২২, ১৪:৩৫

পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়ায় খাতুননেছা স্মৃতি বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়। ছবি: পিরোজপুর প্রতিনিধি
পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়ায় খাতুননেছা স্মৃতি বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতি মজিবুর রহমান আকন কর্তৃক ওই বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অমল কৃষ্ণ হালদারসহ কয়েকজন শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগি শিক্ষক গত সোমবার (৮ আগস্ট) রাতে ভাণ্ডারিয়া থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অমল কৃষ্ণ হালদার অভিযোগ করে জানান, এডহক কমিটির সভাপতি মজিবুর রহমান আকনের কাছে বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক ও কর্মচারীদের বেতন-ভাতা উত্তোলনের জন্য স্বাক্ষর চাইলে তিনি নানা অজুহাতে তা দিতে অস্বীকৃতি জানান।
এ নিয়ে তর্কবিতর্কের এক পর্যায়ে সভাপতি ওই বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অমল চন্দ্র হালদারের সাথে অসদাচরণ করেন। অশ্লীল ভাষায় গাল মন্দ করেন।
এ সময় বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কবির হোসাইন এর প্রতিবাদ জানালে সভাপতি মজিবুর রহমান আকন ও সহযোগী মাসুদুর রহমান উত্তেজিত হয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অমল কৃষ্ণ হালদার ও সহকারী শিক্ষক কবির হোসাইনকে হত্যার হুমকি দেন এবং চাকুরিচ্যুত করার ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী প্রধান শিক্ষক গত সোমবার (৮ আগস্ট) সন্ধ্যায় ভাণ্ডারিয়া থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। এতে বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতি মজিবুর রহমান আকন (৫৯) ও তার সহযোগী মাসুদুর রহমান মল্লিক (৩৫) এর নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
অন্যদিকে সভাপতি কর্তৃক শিক্ষকদের সাথে অসদাচরণের অভিযোগে ম্যানেজিং কমিটির অভিভাবক সদস্য মোঃ ফারুখ হোসেন মোল্লা ও শিক্ষক প্রতিনিধি সদস্য প্রানেশ চন্দ্র মন্ডল পদত্যাগ করেছেন।
এদিকে ওই বিদ্যালয়ের ১৪ জন শিক্ষক-কর্মচারী জুলাই মাসের বেতন উত্তোলন করতে না পেরে মানবেতর জীবন যাপন করেছেন।
বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক প্রাণেশ চন্দ্র মন্ডল জানান, বিনা কারণে শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন বন্ধ করা অমানবিক। এ অবস্থা চলতে থাকলে শিক্ষক কর্মচারীদের না খেয়ে থাকতে হবে।
বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতি মজিবুর রহমান আকন জানান, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাইদুর রহমান ও তার স্ত্রী শিক্ষক মাসুমা আক্তারকে নিয়ে দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে উচ্চ আদালতে একটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। তবে আদালতে ওই দুই শিক্ষকের বেতন-ভাতা প্রদানের নির্দেশ প্রদান করেন। কিন্তু ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ওই দুই শিক্ষকের বেতন ভাতা প্রদানে অস্বীকৃতি জানালে তিনি বেতন-বিলে স্বাক্ষর করেননি।
এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বলেন, আদালতের কোনো অর্ডার তিনি হাতে পাননি। তাই ১৮ বছর পূর্বে স্বেচ্ছায় পদত্যাগকৃত প্রধান শিক্ষক সাইদুর রহমান ও তার স্ত্রী সহকারী শিক্ষক (দীর্ঘ বছর অনুপস্থিত) মাসুমা আক্তারের বেতন-ভাতা বিল প্রস্তুত করা হয়নি।