টাঙ্গাইলে শিক্ষার্থীদের ৫০০ বার কান ধরে উঠবসের অভিযোগ

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৮ আগস্ট ২০২২, ১৫:৪৩

টাঙ্গাইল সরকারি শিশু পরিবার বালিকা। ছবি: টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
টাঙ্গাইলে সরকারি শিশু পরিবার বালিকায় একাধিক শিক্ষার্থীকে বেত্রাঘাত ও কান ধরে উঠবসের অভিযোগ উঠেছে।
আজ রবিবার (২৮ আগস্ট) সকালে সরকারি এ প্রতিষ্ঠানের মেয়েরা জেলা প্রশাসকের কাছে গিয়ে মৌখিকভাবে এমন অভিযোগ করেন।
জানা যায়, সরকারি শিশু পরিবার বালিকায় ৮৩ জন এতিম রয়েছে। এর মধ্যে একজন বৃদ্ধাও রয়েছে। আর ৮২ জন এতিম শিশু বাইরের বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছে। সরকারি শিশু পরিবার বালিকায় দায়িত্বে থাকা সহকারী শিক্ষক বুশরাত জাহান একাধিক এতিম শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে একদিন বিদ্যালয়ে না যাওয়ার অভিযোগ এনে সম্প্রতি কঠোরভাবে বেত্রাঘাত করে। এসময় শিশুদের কান ধরে উঠবসও করা হয়। শিশুরা প্রতিবাদ করলে শিক্ষকদের নির্যাতনের গতি আরো বেড়ে যায়। এর মধ্যে বেত্রাঘাতের ফলে কয়েকজন শিশু অসুস্থ হয়ে পড়েন।
এমতাবস্থায় রবিবার সরকারি শিশু পরিবার বালিকার একাধিক শিশু টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসকের কাছে গিয়ে মৌখিকভাবে তাদের নির্যাতনের বিষয়টি জানান। তখন জেলা প্রশাসক ড. আতাউল গনি অভিযুক্ত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে তারা সরকারি শিশু পরিবার বালিকা কার্যালয়ে ফিরে যান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা এতিম হওয়ায় সরকারি শিশু পরিবারে থাকি। আর পাশের বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করি। বিদ্যালয়ে ক্লাস শেষে আবার এই কার্যালয়ে ফিরে আসি। এখানে শিক্ষকরা আমাদের দেখাশোনা করে।
একদিন বিদ্যালয়ে না যাওয়ার কারণে এখানে দায়িত্বে থাকা সহকারি শিক্ষক বুশরা জাহান আমাদের একাধিকবার বেত্রাঘাত করেছে। এছাড়াও সম্প্রতি ৫০০ বার কান ধরে উঠবস করিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা ডিসি স্যারের কাছে অভিযোগ দিয়েছি।
এদিকে, গত ঈদুল আযহার ঈদে এই শিশুদের নতুন পোশাক দেয়া হয়নি। এখানে নিম্নমানের খাবার পরিবেশন করা হয় বলেও অভিযোগ শিশুদের।
অভিযুক্ত শিক্ষক বুশরাত জাহান তার ভুল স্বীকার করে বলেন, আমি তাদের ভালোর জন্যই শাসন করেছি। এ ধরণের ভুল আমার দ্বারা আর হবে না।
টাঙ্গাইল সরকারি শিশু পরিবারের (বালিকা) উপ-তত্ত্বাবধায়ক তানিয়া আক্তার বলেন, বিষয়টি নিয়ে ওই শিক্ষককে কারণ দর্শানোর চিঠি দেওয়া হয়েছিল। পরে তিনি সন্তোষজনক জবাব দিয়েছেন। বিষয়টি ভুলবোঝাবুঝি ছিল। এখন সমাধান হয়েছে।
জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. শাহ আলম বলেন, বিষয়টি ডিসি স্যার গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলা প্রশাসক ড. আতাউল গনি বলেন, শিশুরা আমার কাছে এসেছিল। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।