লোডশেডিংয়ে কুষ্টিয়ায় বেড়েছে হাতপাখার কদর

এসএম জামাল, কুষ্টিয়া
প্রকাশ: ২৯ আগস্ট ২০২২, ১৫:৩৫
হাতপাখা। ছবি: সংগৃহীত
প্রচণ্ড গরম আর লোডশেডিংয়ে কুষ্টিয়ার জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। তাই জেলাজুড়ে বেড়েছে হাতপাখার কদর। ফলে ব্যস্ততা বেড়েছে পাখা তৈরির কারিগরদেরও। এ গরমে কিছুটা শান্তির পরশ দিতে দিন-রাত তাল পাতা ও কাপড়ের পাখা তৈরি করছেন তারা। আর এসব পাখা মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছেন বিক্রেতারা।
এছাড়া কুষ্টিয়ার বিভিন্ন হাট-বাজারেও এখন মিলছে বাহারি রকমের হাতপাখা। এগুলোর মধ্যে রয়েছে- তাল পাতার পাখা, সুতায় বুনানো পাখা, বিভিন্ন কাপড়ের তৈরি পাখা। প্লাস্টিকের তৈরি পাখারও চাহিদা রয়েছে বেশ। পোড়াদহ জংশন এলাকায় হাতপাখা বিক্রি করছিলেন নাটোরের লালপুর উপজেলার নবীনগর এলাকার বাসিন্দা আফজাল হোসেন।
তার সঙ্গে এ প্রতিবেদকের কথা হলে তিনি বলেন, ৩০ বছর ধরে নিয়মিত তালের তৈরি এই হাতপাখা বিক্রি করছি। স্ত্রী, এক ছেলে এক মেয়ে নিয়ে তার সংসার। তবে পাখা তৈরি করতে স্ত্রী সন্তানদেরও কাজে লাগানো হয়। সারাদিনে তিনি ১০০টি পাখা বিক্রি করে থাকেন। তবে গরমকাল চলে গেলে শীতকালে তিনি ঘটি গরম বিক্রি করে সংসার চালান।
সম্প্রতি লোডশেডিংয়ের কারণে পাখা বিক্রি বেড়েছে। আগের তুলনায় পাখা বিক্রি বেশি হলেও দাম বেশি দেন না কেউই। হাতপাখার বাতাসও ঠান্ডা। তালপাখা তৈরি করতে তালের পাতা, বাঁশের ডাঁট, রঙ, সুতা ও তার প্রয়োজন পড়ে। পাখা তৈরির উপকরণের দাম বাড়লেও আমরা একই দামে পাখা বিক্রি করে থাকি। কুষ্টিয়া পৌর শহরের সবচেয়ে ব্যস্ততম এলাকা এনএস রোডে দেখা মেলে আব্দুল করিম নামের এক হাতপাখা ব্যবসায়ীর। কুমারখালী উপজেলা সদরে তার বাড়ি। প্রায় ১০-১২ বছর ধরে কুষ্টিয়া শহরের বিভিন্ন প্রান্তে হেঁটে হেঁটে বিক্রি করেন হাতপাখা।
আব্দুল করিম জানান, গরমের সময় তিনি তাল পাতা, সুতায় বুনানো ও বাঁশবেতের রঙিন হাতপাখা বিক্রি করছেন। অন্য সময় ছোটখাটো ব্যবসা বা দিনমজুরি করে সংসার চালান।
তিনি বলেন, পাখাগুলো এলাকাতেই তৈরি হয়ে থাকে। সেখান থেকে তিনি কুষ্টিয়া শহরের বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করে থাকেন। প্রকারভেদে ২০ টাকা থেকে শুরু করে ৭০ টাকা পর্যন্ত দামের পাখা তার কাছে রয়েছে। চাহিদাও ভালো। পাখা বিক্রি করে দিনে ৭০০ থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করেন তিনি।
স্থানীয় ব্যবসায়ী হাবিবুল আলম বলেন, গ্রামাঞ্চলে এ পাখার কদর বেশি থাকলেও শহরের অনেকেই এখনো কেনেন। একটি রঙিন বাঁশবেতের পাখা কিনলাম ৬০ টাকা দিয়ে। এটা দেখতেও সুন্দর আবার বিদ্যুৎ না থাকলে বাতাসও করা যাবে। গরমে বিদ্যুৎ বিভ্রাট তো লেগেই আছে। তাই হাতপাখার কোনো বিকল্প নেই। এ পাখার বাতাস অনেক প্রশান্তি দেয়।