
ছবি : সংগৃহীত
মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে টানা
১৯ দিন আন্দোলন করেছেন চা-শ্রমিকরা। অবশেষে প্রধানমন্ত্রী শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি করেছেন।
আর এর পরপরই পাল্টে গেছে মৌলভীবাজার জেলার ৯৩টি চা বাগানের দৃশ্যপট। বাগানে উৎসবমুখর
পরিবেশে কাজ শুরু করেছেন চা-শ্রমিকরা।
সোমবার (২৯ আগস্ট) সকাল থেকে
বিভিন্ন বাগান ঘুরে দেখা গেছে শ্রমিকরা পাতা তোলায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।
এদিকে টানা ১৯ দিন পর পুরোপুরি
কাজে ফিরতে পেরে সাধারণ শ্রমিকরাও খুশি। তবে তারা বলছেন তাদের দাবি ছিল ৩০০ টাকা। দ্রব্যমূল্যের
ঊর্ধ্বগতির কারণে ১৭০ টাকা দিয়ে সংসার চালানো খুবই কঠিন। তবুও প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণাকে
স্বাগত জানিয়ে তারা কাজে ফিরেছেন।
এদিকে আসন্ন দুর্গাপূজার আগে
বকেয়াসহ অন্যান্য মজুরি পরিশোধের জন্য দাবিও জানিয়েছেন তারা। এ ছাড়া দীর্ঘ ১৯ দিন বন্ধ
থাকার পর চালু হয়েছে বাগানগুলোর কারখানা। সকাল থেকে মেশিনের চাকা ঘুরতে শুরু করেছে
চা কারখানাগুলোতে।
ভাড়াউড়া চাবাগানের নারী শ্রমিক
মিনা হাজরা বলেন, ‘চা বাগানের প্রতি আমাদের অনেক মায়া আছে। এখানেই আমাদের পুরো জীবনটা
কেটেছে। চা বাগানের প্রতিটা গাছের সঙ্গে আমাদের আবেগ-ভালোবাসা জড়িত। আমরাই এ গাছগুলো
ছোট থেকে বড় করি। গাছ বড় হলে আবার ছেঁটে ছোট করি। এতদিন চা বাগানে কাজ না করতে পেরে
খারাপই লেগেছিল। কিন্তু আমাদের কিছু করার ছিল না। ১২০ টাকা মজুরি দিয়ে আমরা খুব কষ্ট
করে সংসার চালিয়েছি। এখন ১৭০ টাকা হয়েছে। খেয়ে বাঁচতে পারব।’
কালীঘাট চা বাগানের পঞ্চায়েত
সভাপতি অভান তাঁতী বলেন, গতকাল ছুটির দিন থাকায় তাদের চা বাগানসহ অনেক বাগানেই কাজ
হয়নি। আজ সকাল থেকে শ্রমিকেরা কাজে যুক্ত হয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে
তিনি আরও বলেন, আন্দোলন চলাকালে কারও কথায় বিশ্বাস করিনি প্রধানমন্ত্রী ছাড়া। তিনি
আমাদের নিরাশ করেননি।
বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের
সাংগঠনিক সম্পাদক ও বালিশিরা ভ্যালি সভাপতি বিজয় হাজরা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার
পর গতকাল চা বাগানের ছুটির দিন থেকেই শ্রমিকেরা কাজে নেমেছিলেন। গতকাল কিছু চা বাগানে
ছুটির দিন থাকায় শ্রমিকরা কাজে না গেলেও আজ দেশের প্রতিটি চা বাগানে পুরোদমে কাজ চলছে।
উল্লেখ্য, গত ৯ আগস্ট থেকে
৩০০ টাকা মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে সারাদেশের মতো মৌলভীবাজার জেলার সবকটি চা বাগানে প্রকর্মবিরতি
পালন করেন চা-শ্রমিকরা। দাবি আদায় না হওয়ায় ১৩ আগস্ট থেকে লাগাতার কর্মবিরতিতে নামেন
শ্রমিকরা।পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার মধ্যে দিয়ে অবসান হলো চা-শ্রমিকদের টানা
১৯ দিনের আন্দোলন।