কক্সবাজারে হোটেলে টর্চার সেল কাণ্ডে আরো দুইজন আটক

কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৬:৩৩

হোটেলে টর্চার সেল কাণ্ডে আটককৃত দুই সদস্য। ছবি: কক্সবাজার প্রতিনিধি
কক্সবাজার শহরের হোটেল মোটেল জোনের শিউলি কটেজের টর্চার সেলের মুলহোতাসহ দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ। এখানে বেশকিছু আবাসিক হোটেল ও কটেজ কেন্দ্রিক চিহ্নিত চাঁদাবাজচক্র সক্রিয় রয়েছে।
তাদের দৈনিক, সাপ্তাহিক এবং মাসিক ইত্যাদি হারে চাঁদা দিতে হয়। চাঁদা না দিলে বিভিন্ন অজুহাত তুলে হোটেলে অভিযান চালানো ও জরিমানা করার হুমকি দেয়। যেখানে স্থানীয় প্রভাবশালী, রাজনীতিবিদ ও সাংবাদিকের নাম রয়েছে বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও বিভিন্ন তদন্ত সংস্থার মারফত জানা গেছে। চাঁদাবাজচক্রের বেশ কিছু সদস্য ইতোমধ্যে আটক হয়েছে।
সম্প্রতি পর্যটক আটকে রেখে চাঁদা আদায়ের ঘটনায় আলোচনায় আসে শিউলি কটেজ। এই কটেজ থেকে চাঁদা উত্তোলনকারী একটি সিন্ডিকেট শনাক্ত করেছে ট্যুরিস্ট পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাত ২ টার দিকে কটেজ মালিকসহ এক দালালকে আটক করে ট্যুরিস্ট পুলিশ। কটেজ মালিক দুইজনের একজনের নাম লোকমান সরওয়ার ( ৩৬ )। তিনি মহেশখালী শাপলাপুর ২ নং ওয়ার্ডের নূর হোসেনের ছেলে। এসময় আব্দুল গফুর ( ২৮ ) নামের আরেকজনকে আটক করা হয়েছে। তিনি লোকমানের সহযোগী এবং হোটেল মোটেল জোনের চিহ্নিত দালাল। লোকমানকে জিজ্ঞাসাবাদে বেশ কয়েকজনের নাম স্বীকারোক্তি দিয়েছে। আশ্রয় প্রশ্রয় দাতাদের ব্যাপারেও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়নের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম জানান, কটেজ জোনের আশপাশের বেশ কয়েকজনের নাম বলেছে লোকমান, যারা কটেজ থেকে নিয়মিত চাঁদা নিয়ে থাকে।
অবৈধ ব্যবসা পরিচালনা করে এমন ৬টি কটেজের সন্ধান মিলেছে। এসব কটেজে টার্গেট করে দালালদের মাধ্যমে পর্যটক আনা হয় এবং নারী ও মাদক দিয়ে তাদের ব্ল্যাকমেইল করে সবকিছু কেড়ে নেয়া হয়। লোকমানের দেয়া তথ্য মতে, পাহাড়তলীর ইমরান, লাইটহাউজ পাড়ার রমজান, কালু, খোকা, বাহারছড়ার সুমন, আজিজ, মিজান এরা প্রত্যেকেই সপ্তাহে ১০০০ টাকা করে চাঁদা নেয়। বাহারছড়ার পাগলা রফিক , লাইটহাউজ পাড়ার কালু, মুনসুর, মাহফুজ, খালেক ও জমির, পাহাড়তলীর নাছির সপ্তাহে ৫০০ টাকা করে চাঁদা নেয় বলে লোকমান স্বীকার করেন। এছাড়া লাইট হাউজ পাড়ার রাসেল, ফাহিম, কলাতলীর আমান প্রতি সপ্তাহে ৩০০ টাকা করে, মোতালেব ৬০০ টাকা, লাইটহাউজ পাড়ার শুক্কুর সপ্তাহে ১৫০০, নেজাম সপ্তাহে ২০০ টাকা করে চাঁদা নেয় বলে স্বীকার করেছে। চাঁদাবাজ সিন্ডিকেটে তিনজন সাংবাদিকও রয়েছে বলে স্বীকারোক্তিতে জানা গেছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম জানান, আটক লোকমান সরওয়ার ও আবদুল গফুরকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। প্রাপ্ত তথ্যগুলো যাচাই বাছাই করে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।