Logo
×

Follow Us

জেলার খবর

বিশখালী নদীতে পানি বৃদ্ধি, ভাঙন আতঙ্ক

Icon

ঝালকাঠি প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২২, ২১:৫২

বিশখালী নদীতে পানি বৃদ্ধি, ভাঙন আতঙ্ক

ছয়টি দোকানঘর নদীর ভাঙনে বিলীন। ছবি: ঝালকাঠি প্রতিনিধি

ঝালকাঠির রাজাপুরের বিশখালী নদীতে হঠাৎ নদী ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে ছয়টি দোকানঘর নদীর ভাঙনে বিলীন হয়েছে। 

আজ সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলার মঠবাড়ি ইউনিয়নের বিশখালী নদী সংলগ্ন বাদুরতলা বাজারে এ ঘটনা ঘটে। 

এ ঘটনায় ওই এলাকায় ভাঙন আতঙ্ক বিরাজ করছে। ঘটনার পর বিকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। 

ক্ষতিগ্রস্ত দোকান মালিকরা হলেন- নাসির হাওলাদার, জুয়েল শরীফ, শাহজাহান শরীফ, জামাল হাওলাদার, আবু খলিফা ও বাবুল ঋষি। 

প্রত্যক্ষদর্শী মো. রুহুল আমিন, তরিকুল ইসলাম সুমন ও আব্দুল গফুর জানায়, দুপুরে হঠাৎ বিশখালী নদীতে ভাঙন দেখা দেয়। এতে কয়েকটি দোকান নিয়ে মাটি দেবে পানিতে ভেসে যায়। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় নদী থেকে দোকান মালিকরা দোকানঘরসহ মালামাল উদ্ধার করে। ততক্ষণে অনেক মালপত্র ভেসে যায়। 

মঠবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান শাহ জালাল হাওলাদার জানান, দীর্ঘদিন ধরেই বাদুরতলা বাজারের দোকানগুলো ভেঙে বিলীন হচ্ছে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় হঠাৎ দুপুরে ৬টি দোকান বিলীন হয়ে গেছে। এখনো ওই বাজারের অনেক দোকান ঝুঁকিতে রয়েছে। কয়েক দফা জিও ব্যাগ ফেলেও ভাঙনরোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। দ্রুত স্থায়ী বাধ নির্মাণ করা প্রয়োজন। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুসরাত জাহান খান বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্তদের সাথে কথা বলেছি তাদের জন্য পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

এদিকে বিষখালী ও হলতা নদীর জোয়ের পানি ৩-৪ ফুট বৃদ্ধি পাওয়ায় ঝালকাঠি জেলার কাঁঠালিয়া উপজেলার অর্ধশত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ২৭টি গ্রাম ও শতাধিক আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর প্লাবিত হয়েছে। ভেঙে গেছে কাঁঠালিয়া গ্রামের বিষখালী নদীর তীরবর্তী রাস্তা ও চিংড়াখালী খালের বাঁধ। গ্রামীণ কাঁচা পাকা ১০টি রাস্তা দেবে গর্ত হয়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে এ সকল গ্রামের। ফলে হাজার হাজার মানুষের চরম দুর্ভোগ ও আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটছে। 

রবিবার থেকে মুশল ধরে বৃষ্টি, বৈরী আবহাওয়া, বিষখালী ও হলতা নদীর অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসাসহ অর্ধশত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শ্রেণি কক্ষে পানি ঢুকে পড়েছে। তলিয়ে গেছে ২৭টি গ্রাম। জোয়ারের পানিতে উপজেলার আউড়া, শৌলজালিয়া ও আওরাবুনিয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের শতাধিক ঘর পানিতে ভাসছে। ২/৩ ফুট পানির নিচে তলিয়ে গেছে এ সব ঘর। 

উপজেলা পরিষদের সবগুলো অফিস ভবন, নির্বাহী অফিসারের বাস ভবন, কাঁঠালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ, কাঁঠালিয়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র, ছৈলার চর পর্যটন কেন্দ্র, কাঁঠালিয়া লঞ্চ ঘাট, সিকদার পাড়া, পশ্চিম আউরা জেলে পাড়া, আমুয়া হাসপাতাল ও আমুয়া বন্দরসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান ৩ ফুট পানির নিচে তলিয়ে গেছে। 

উপজেলা কৃষি বিভাগ জানান, দুই/এক দিনের ভিতর পানি না কমলে রোপা আমন ধান পচে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

উপজেলা মৎস্য বিভাগ জানিয়েছেন, তাদের ৪০ শতাংশ মাছের ঘের ও পুকুর তলিয়ে গেছে। ফলে এ সকল খামারিদের অর্ধকোটি টাকা ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। 

কাঁঠালিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মিজানুর রহমান জানান, কাঁঠালিয়া উপজেলাকে সরকারের পক্ষ থেকে কোস্টাল এরিয়া ঘোষণা করা এবং ভেরিবাঁধ নির্মাণ করা না হলে এলাকার মানুষের দুর্ভোগের সমাধান সম্ভব নয়। 

ঝালকাঠি পানি উন্নয়ন বোর্ড জানান, বিষখালী ও হলতা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ অঞ্চলের সব কয়টি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। অনেক নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫