
গোপালগঞ্জ জেলার মানচিত্র
গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে তড়িঘড়ি করে রাতের আঁধারে সড়কে কার্পেটিং করার অভিযোগ উঠেছে। কাজে বাধা দেওয়ায় উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মাদ আলীকে হত্যার হুমকিসহ নানা ধরনের ভয়ভীতি দেখিয়েছে ঠিকাদারের লোকজন। সিডিউল না মেনে ও নামমাত্র বিটুমিন দিয়ে কাজ করায় সকাল হতেই উঠে যায় সেই সড়কের কার্পেটিং। ৫ সেপ্টেম্বর রাতে উপজেলার বাথানডাঙ্গা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ঠিকাদারের লোকজন স্থানীয়দের বাধা উপেক্ষা করে রাতের আঁধারে সড়কে নিম্নমানের পিচের কার্পেটিংয়ের কাজ করেছে। যা হাত দিয়ে টান দিলে বা পা দিয়ে ঘষা দিলেই উঠে যাচ্ছে। ২৫ মিলিমিটার কার্পেটিং করার কথা থাকলেও কিছু কিছু স্থানে ৫ থেকে ৭ মিলিমিটার কার্পেটিং করা হয়েছে। এতে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।
এলজিইডি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২১-২২ অর্থবছরে গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় উপজেলার বাথানডাঙ্গা-সাতাশিয়া ভায়া মাহমুদপুর ১ হাজার ১০০ মিটার সড়ক প্রশস্তকরণের কাজের টেন্ডার হয়। কাজের ব্যয় ধরা হয় ৯৫ লাখ ৬২ হাজার ৮১৩ টাকা। কাজটি পান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কে ই-বিএসিকে-(জেভি)।
বাথানডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা রুবেল শেখ বলেন, ঠিকাদারের লোকজন রাত ৮টা থেকে ৩টা পর্যন্ত কার্পেটিংয়ের কাজ করেছেন। তারা তড়িঘড়ি করে নিম্নমানের কাজ করেছেন। কোনো কোনো জায়গায় একেবারে পিচ দেয়নি বললেই চলে। আবার অনেক জায়গায় পিচ উঠে যাচ্ছে। এছাড়াও কার্যাদেশ অনুযায়ী রাস্তার কার্পেটিং কাজে পুরুত্ব ২৫ মিলিমিটার দেওয়ার কথা থাকলেও সেখানে কোনো কোনো স্থানে মাত্র ৫-৭ মিলিমিটার দেওয়া হয়েছে।
কাজে অনিয়ম হয়েছে স্বীকার করে উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মাদ আলী বলেন, সন্ধ্যার পর দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মধ্যে ঠিকাদারের লোকজন দাহ্য তরল নির্মাণ সামগ্রী নিয়ে কাজ করতে আসেন। এ সময় আমি তাদের কাজ করতে নিষেধ করি। এলাকাবাসীও কাজে বাধা দেন। এতে ঠিকাদারের লোকজন আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে ও ভয়ভীতি দেখায়। এলাকাবাসী পানি-কাদার মধ্যে কাজ করার বিষয়টি ইউএনওকে মোবাইলে জানান। পরে কাজ বন্ধ রাখা হয়। পরে বিটুমিন মিশ্রিত নির্মাণসামগ্রী নষ্টের কথা বিবেচনা করে নির্বাহী প্রকৌশলীর নির্দেশে তাদের কাজ করার অনুমতি দেওয়া হয়। এর আগে রাত পৌনে ৯টার দিকে একটি জিপে কয়েকজন লোক এসে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে এবং হত্যার হুমকি দেয়। নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে উপজেলা প্রকৌশলীর নির্দেশে রাত সাড়ে ১০টার দিকে সাইট থেকে আমি চলে আসি। এরপর ঠিকাদারের লোকজন তাদের ইচ্ছেমতো কাজ করেছে।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি নুরু শিকদার এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কাজ অনেক আগেই শেষ হয়েছে। সামান্য একটু বাকি ছিল, সেটুকু ওই দিন করা হয়েছে। কিছু লোক বাধা দিলে পরে নির্বাহী প্রকৌশলীর সহযোগিতায় অফিস থেকে লোক পাঠিয়ে করা হয়েছে। রাতে করা হয়েছে তবে কাজে অসুবিধা থাকলে ঠিক করে দেওয়া হবে।
কাশিয়ানী উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী মো. মোরশেদুল হাসান রাতে কাজ করার কথা স্বীকার করে বলেন, কাজ চলমান আছে। কোথাও কোনো সমস্যা হলে ঠিক করে দেওয়া হবে।