জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদী পার

সালাহউদ্দীন খান রুবেল, নেত্রকোনা
প্রকাশ: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৫:৫০

নেত্রকোনা জেলার মানচিত্র। ফাইল ছবি
নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার রোয়াইলবাড়ী আমতলা ইউনিয়নের রাজনগর গ্রামের মাঝখান বয়ে গেছে সুতী নদী। নদীর উত্তর পাড়ে ১৯৩৮ সালে রাজনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন স্থানীয় শিক্ষানুরাগীরা। বিদ্যালয়টিকে বর্তমানে ইউনিয়নের মডেল ক্লাস্টার হিসেবে উন্নীতকরণ করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই নদীর ওপারের রাজনগর ও রোয়াইলবাড়ী গ্রামের শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি।
বর্ষায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কলাগাছের ভেলা, ডিঙি নৌকায় পাড়ি দিয়ে স্কুলে যাওয়া-আসা করতে হয় শিক্ষার্থীদের। শুকনো মৌসুমে পানি কমলে নদীতে দেওয়া হয় বাঁশের চিকন সাঁকো। প্রতিদিন খুদে শিক্ষার্থীদের এই বাঁশের সাঁকো দিয়ে পার হতে হয়। প্রায় সময় সাঁকো পার হতে গিয়ে নদীতে পড়ে যায় শিশুরা। এ সময় তাদের বই-খাতা খোয়া যায়, ভিজে নষ্ট ও পড়ে অনেকে আহত হয়। তাদের এ সমস্যা নিত্যদিনের।
এলাকাবাসী জানান, যুগ যুগ ধরে এ এলাকার শিক্ষার্থীদের কষ্ট-দুঃখের কথা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, প্রশাসনের কাছে জানালেও কর্ণপাত করছেন না কেউ। নদীর উপর একটি ব্রিজ না থাকায় চরম দুর্ভোগে শিক্ষার্থী ও এলাকার মানুষ। একটি ব্রিজ হলে বদলে যাবে এলাকার দৃশ্যপট এমনটি দাবি এলাকাবাসীর।
রাজনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তাজুল ইসলাম জানান, তার বিদ্যালয়ের সিংহভাগ ছাত্র-ছাত্রীই নদীর ওই পাড়ের বাসিন্দা। সীমাহীন কষ্ট করে প্রতিদিন তারা স্কুলে আসে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা বৃষ্টি বাদলের দিন তাদের কষ্টের আর সীমা থাকে না। স্কুলে আসা-যাওয়ার সময় প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হয় তারা। বহুদিন ধরে শুনছি নদীতে একটি ব্রিজ হবে। ব্রিজ আর হয় না। স্কুল সংলগ্ন একটি ব্রিজ নির্মাণের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি।
এ ব্যাপারে রোয়াইলবাড়ী আমতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান আকন্দ জানান, আমি দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য একটি মাটির রাস্তা করে দিয়েছি। শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে দুর্দশার বিষয়টি সংসদ সদস্যও জানেন। তিনি ডিও লেটারও দিয়েছেন। আশা করছি খুব শীঘ্রই ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় হতে স্কুল সংলগ্ন ব্রিজ নির্মাণ করা হবে।