ঝিনাইদহে হারানো ঐতিহ্যবাহী লাঠিখেলা অনুষ্ঠিত

আহমেদ নাসিম আনসারী, ঝিনাইদহ থেকে
প্রকাশ: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৩:০৭

দুই লাঠিয়াল লড়াই করছেন। ছবি: প্রতিবেদক
ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডুতে অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠিখেলা। লাঠিখেলাকে কেন্দ্র করে উপজেলার পোলতাডাঙ্গা পরিণত হয়েছিলো উৎসবের নগরীতে। যা দেখতে দুর-দূরান্ত থেকে ভিড় করেছিলেন হাজারো দর্শনার্থী। দীর্ঘদিন পর এ আয়োজন করায় খুশি দর্শক ও খেলোয়াড়রা।
গতকাল শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ঝিনাইদহ জেলার হরিনাকুণ্ডু উপজেলার পোলতাডাঙ্গা গ্রামে পূর্বপাড়ার যুব সমাজ এ খেলার আয়োজন করে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ১২ বছর বয়সী ক্ষুদে লাঠিয়াল বিশাল হোসেনের লাঠির যাদুতে মেতে ওঠেন দর্শকরা। প্রতিযোগিতায় পেরে ওঠেননি তার চাচা আনোয়ার হোসেন। যা দেখে আনন্দ যেনো বেড়ে যায় দর্শকদের। সেই সাথে বাদ্যের তালে তালে নেচে অঙ্গভঙ্গি প্রদর্শন দর্শকদের নিয়ে যায় ঘোরের রাজ্যে। প্রতিযোগিতায় নিজের বীরত্ব প্রকাশ করতে আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন লাঠিয়ালরা। লাঠিয়ালদের লড়াই দেখে আনন্দে মেতে ওঠেন উপস্থিত দর্শকরা। দীর্ঘদিন পর এ ধরনের খেলা দেখে খুশি দর্শকরা।
দিনভর এই আয়োজনে ঝিনাইদহ ও পার্শ্ববর্তী চুয়াডাঙ্গা উপজেলা থেকে আটটি লাঠিয়াল দলের অর্ধশত খেলোয়াড় খেলা প্রদর্শন করেন। সবাইকে পেছনে ফেলে প্রথম হয় শ্রীরামপুর গ্রামের মহি সর্দার।
তোলা গ্রামের লাঠিয়াল সর্দার মন্টু হোসেন বলেন, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দর্শনার্থীদের বাড়তি আনন্দ ও বিনোদন দিতে আমরা লাঠিখেলা দেখাই। তাদের আনন্দে আমরা মজা পাই। এটি আমাদের পূর্ব-পুরুষের খেলা। তবে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে গ্রামীণ ঐহিত্যবাহী এ খেলাটি টিকিয়ে রাখা সম্ভব। অন্যথায় এটি হারিয়ে যেতে পারে।
পোলতাডাঙ্গা গ্রামের শিপন হোসেন বলেন, কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাওয়া এ লাঠি খেলা দেখতে হাজির হন নানা বয়সের মানুষ।

পোলতাডাঙ্গা গ্রামের আয়োজক কমিটির আব্দুল গাফফার বলেন, মাঠের স্বল্পতা আর ভিডিও গেমসের কারণে আমাদের শিশুরা ঘরমুখো হয়ে পড়ছে। প্রথমবারের মতো আমরা গ্রামীণ এ খেলার আয়োজন করেছি। আগামীতে আরো বড় পরিসরে লাঠি খেলা আয়োজন করার পরিকল্পনা রয়েছে। গ্রামীণ ঐতিহ্য ধরে রাখতে আর মানুষকে আনন্দ দিতেই এ আয়োজন।
সব শেষে বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। খেলা শেষে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।