Logo
×

Follow Us

জেলার খবর

প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর নির্মাণে অনিয়ম

Icon

দেওয়ান আবুল বাশার, মানিকগঞ্জ

প্রকাশ: ১২ অক্টোবর ২০২২, ১৪:০৬

প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর  নির্মাণে অনিয়ম

আশ্রয়ণ প্রকল্প।

মানিকগঞ্জের সিংগাইরে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ২২৬টি ঘর নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে এসব ঘর নির্মাণে মানা হচ্ছে না সরকারি নির্দেশনা।

প্রয়োজনের তুলনায় সিমেন্টের পরিমাণ কম মিশিয়ে তৈরি করা হচ্ছে ইটের গাঁথুনি। গাঁথুনির পর দেয়ালে দেওয়া হচ্ছে না পর্যাপ্ত পানি। পাশাপাশি ব্যবহার করা হচ্ছে প্রাক্কলনের চেয়ে কম মিলিমিটার রড ও নিম্নমানের ইট। ফলে এসব ঘরের স্থায়িত্ব নিয়ে আশঙ্কা করছেন উপকারভোগী ও স্থানীয়রা। 

জানা গেছে, মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গৃহহীন, ভূমিহীন ও হতদরিদ্রদের মাথা গোঁজার ঠাঁই হিসেবে আশ্রয়ণ প্রকল্প নামে একটি মহতী প্রকল্প হাতে নেন। আশ্রয়ণ প্রকল্প-২’ এর আওতায় দ্বিতীয় ধাপের ২০টি ও তৃতীয় ধাপের ২০৬টি ঘরসহ মোট ২২৬টি ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে সিংগাইরের বিভিন্ন ইউনিয়নে। তড়িঘড়ি ও মান নিয়ন্ত্রণের তোয়াক্কা না করে এসব ঘরে ব্যবহার করা হচ্ছে নিম্নমানের ইট, বালু, সিমেন্ট, রড, খোয়া, টিন, কাঠসহ অন্যান্য নির্মাণসামগ্রী।

সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, সিংগাইরের ফোর্ড নগরে ৭৫টি, ধল্লা কামুরায় ৮টি, চর চামটায় ২০টি ও চান্দহর সিরাজপুর এলাকায় ১২৩টি আশ্রয়ণের ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। বর্তমানে ৮০ শতাংশ ঘরের নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হয়েছে। খুব শীঘ্রই বাকি ঘরের নির্মাণ কাজ শেষ করে উপকারভোগীদের মাঝে তুলে দেওয়ার জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে।

ঘর নির্মাণকারী ঠিকাদার কাইমুদ্দিনের ছোট ভাই আলমাস আলী জানান, সিরাজপুরে ১২৩টি ঘরের মধ্যে ৪৫টি ঘর আমরা নির্মাণ করেছি। প্রতিটি ঘরের গ্রেট বিম, কলাম ও লিংটেলে ১২ ইঞ্চি পরপর খাঁচায় রিং বাঁধানো ও লিংটেলে ৩টি রড দেওয়া হয়েছে। ৬ ইঞ্চি পর পর খাঁচায় রিং বাঁধানো ও লিংটেলে ৪টি রড ব্যবহারের নিয়মের কথা জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, অফিস যেভাবে বলে আমরা সেভাবেই কাজ করেছি।

ফোর্ড নগরে ২৫টি ঘর নির্মাণ করেছেন সুজন মিস্ত্রি। তিনি জানান, কিছু ঘরের লিংটেলে ৩ রড ও কিছু ঘরে ৪ রডের খাঁচা দেওয়া হয়েছে। কলামে একটি ১০ মিলি ও বাকি ৩টি ৮ মিলি রড দিয়ে কাজ করা হয়েছে। এসব খাঁচায় ২০- ২৫ ইঞ্চি ফাঁকা রেখে রিং বাঁধা হয়েছে।

ফোর্ড নগর আশ্রয়ণ প্রকল্পের উপকারভোগী চন্দ্রবান, জাহানারা, লাইলী ও রেনু জানান, মাত্র ১৬- ১৭ দিন ধরে ঘরে উঠেছি। বৃষ্টি হলেই পানি পড়ে। ফ্লোর- ওয়াল ফেটে গেছে। সিঁড়ি বিচ্ছিন্ন হওয়ায় ওঠানামা করতে পারি না। জানালার ঝালাই খুলে গেছে, দরজাও ঠিকভাবে লাগে না।

নির্মাণ কমিটির সদস্য সচিব ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আবু নাছের বলেন, নির্মাণ সামগ্রীর দাম বেড়ে যাওয়ায় প্রাক্কলন অনুযায়ী কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। যদি কোনো ব্যত্যয় ঘটে থাকে তাহলে পুরো ফিল্ড মনিটর করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

ঘর নির্মাণ কমিটির সভাপতি ও সিংগাইর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দিপন দেবনাথ বলেন, সিডিউল অনুযায়ী কাজ করা হচ্ছে। নির্মাণ কাজে অনিয়মের যে চিত্র তুলে ধরা হয়েছে তা পুরো সত্য নয়।

এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ-২’ এর উপপ্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ মাহমুদুল হক বলেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণে কোনো অনিয়মের সুযোগ নেই। সিংগাইরে সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীকে পাঠিয়ে খোঁজখবর নিচ্ছি।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫