
চাঁদপুর পিটিআই। ছবি: সংগৃহীত
নানান সমস্যা, অনিয়ম ও অবস্থাপনায় জর্জরিত প্রাথমিক শিক্ষকদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির প্রতিষ্ঠান চাঁদপুর পিটিআই (প্রাইমারি টিচার্স ইনস্টিটিউট)। নেই পর্যাপ্ত শিক্ষক, শ্রেণিকক্ষ কিংবা আবাসিক ব্যবস্থা ও মানসম্মত ওয়াশব্লক। তীব্র সংকট রয়েছে সুপেয় পানির। এতে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন নারী প্রশিক্ষণার্থীরা। দক্ষ ব্যবস্থাপনা আর সামগ্রিক সংস্কার করা না হলে প্রতিষ্ঠানটির এমন সংকট আরও বাড়বে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চাঁদপুরেরর হাজীগঞ্জ উপজেলার আলীগঞ্জে ১৯৫৩ সালে সাড়ে ৭ একর ভূমির ওপর এ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি চালু হয়। চাঁদপুরসহ পার্শ্ববর্তী বেশ কয়েকটি জেলা থেকে প্রতিবছর প্রায় ৪০০ শিক্ষক দেড় বছর মেয়াদি ডিপিএড (ডিপ্লোমা ইন প্রাইমারি এডুকেশন) প্রশিক্ষণ নিয়ে থাকেন। বর্তমানে এখানে দুই শিফটে ৩৯৭ জন শিক্ষক প্রশিক্ষণরত। তবে কাগজ- কলমে প্রশিক্ষণ চললেও মানসম্মত প্রশিক্ষণের জন্য নেই পর্যাপ্ত শিক্ষক কিংবা শ্রেণিকক্ষ। নেই ৪০০ প্রশিক্ষণার্থীর কোনো আবাসিক ব্যবস্থা ও মানসম্মত ওয়াশব্লক। রয়েছে সুপেয় পানির তীব্র সংকট। এতে মহিলা প্রশিক্ষণার্থীদের অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন।
অভিযোগ রয়েছে- প্রতিষ্ঠানটি নিজের দায় এড়াতে প্রশিক্ষণার্থী শিক্ষকদের ওপর মানসিক চাপ অব্যাহত রাখে। প্রতিষ্ঠানটি প্রশিক্ষণের মান বৃদ্ধি, অবকাঠামোগত সংস্কারের চিন্তা না করে কোনো প্রকার ভাউচার ছাড়াই প্রতিমাসে সংস্থাপন বিল নামে দুইশ টাকা করে শিক্ষকদের কাছ থেকে আদায় করে, যা থেকে প্রতি মাসে ৮০ হাজার টাকা আদায় হয় বলে জানা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জানান, এসব বিষয়ে কথা বললে প্রশিক্ষণার্থীদের চাকরিভীতি দেখানো হয়। যেহেতু দেড় বছর শিক্ষকতা করার পর পিটিআইয়ের অধীনে ডেপুটেশনে থাকেন, এজন্য চাকরি হারানোর ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পান না। তবে এমন অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করেছে কর্তৃপক্ষ। এদিকে সামাজিক কাজের নামে শিক্ষকদের দিয়ে সপ্তাহে দুবার পুরো পিটিআই (৭ একরের) পয়ঃনিষ্কাশন করা হয়, যা নির্ধারিত শ্রমিকদের কাজ। শিক্ষকরা দিয়ে এমন কাজ করতে বিব্রতবোধ করলেও কর্তৃপক্ষ অনেকটা জোরপূর্বক কাজ আদায় করে নেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে চাঁদপুর পিটিআই-এর সুপারিনটেনডেন্ট অর্চনা কুণ্ডু জানান, সংস্থাপন বিল হিসেবে আদায়কৃত টাকা গ্যাস, বিদ্যুৎ, বাবুর্চিসহ নানা আনুষঙ্গিক কাজে ব্যয় হচ্ছে; যার সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা রয়েছে। আমি নতুন যোগদান করেছি, তার পরও এসব নিয়ে বসব। প্রতিষ্ঠানের নানা সমস্যার বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে রয়েছে বলে জানান তিনি।