র্যাবের কোনো কিছুই গোপন করবো না: ডিজি

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৬ অক্টোবর ২০২২, ১৯:২৮

র্যাবের মহাপরিচালক খুরশীদ হোসেন। ছবি: নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
এলিট ফোর্স র্যাবের কোনো কিছুই হাইড বা গোপন করা হবে না বলে জানিয়েছেন বাহিনীটির নতুন মহাপরিচালক খুরশীদ হোসেন। আজ বুধবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে নারায়ণগঞ্জের আদমজীনগরে র্যাব-১১ এর সদরদপ্তরে জব্দকৃত বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ ধ্বংসের সময় সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এ কথা বলেন তিনি।
এর আগে, গত ২৩ জুলাই সোনারগাঁয়ের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক থেকে ২ কন্টেইনার ভর্তি বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ জব্দ করে র্যাব-১১।
পার্বত্য অঞ্চলে চলমান ‘অস্থিতিশীলতা’ প্রসঙ্গে র্যাব ডিজি খুরশীদ হোসেন বলেন, এটা কোনো অস্থিতিশীল অবস্থা না, এটা মূলত জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে র্যাব ও সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযান। অপারেশনটা এখনো যেহেতু চলছে। শেষ করে আমরা সব জানাব। র্যাবের কোনো কিছুই আমরা হাইড (গোপন) করবো না।
কিছু তরুণের ঘরছাড়ার বিষয়ে তিনি বলেন, অল্পবয়সী ছেলেদের হিজরতের নামে ব্রেইনওয়াশ করা হচ্ছে। প্রত্যেকের বয়স ১৭ থেকে ২২ বছর। তাদের ব্রেইন ওয়াশ করে বিপথে নিয়ে যাচ্ছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে খুরশীদ হোসেন বলেন, আগস্ট মাসে পত্রিকায় আমরা দেখলাম, কুমিল্লা থেকে বেশ কিছু তরুণ নিখোঁজ হয়েছে। এ সূত্র ধরে তদন্ত শুরু করে ৫৫ জনের নাম পেলাম। পরে ৩৫ জন হিজরতের নামে বাড়ি ছেড়েছে বলে নিশ্চিত হলাম।
তিনি বলেন, তারা কোথায় গেল খুঁজতে গিয়ে কয়েকজন ধরা পড়লো। পরে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তাদের নেতৃত্ব দেওয়া কয়েকজনকে ধরা হলো। এই কার্যক্রম আমাদের অব্যাহত আছে।
বান্দরবানের রামুতে সেনাবাহিনী ও র্যাবের জঙ্গিবিরোধী যৌথ অভিযান অব্যাহত আছে জানিয়ে র্যাব প্রধান বলেন, এক সময় নর্থবেঙ্গল থেকে জঙ্গি আসতো। এর উত্থান হয়েছিল ২০০৫ সালে জোট সরকারের আমলে। সে জঙ্গিরা সারা বাংলাদেশে বিস্তার করলো। পরে সমগ্র আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রচেষ্টায় আমরা মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছিলাম। তারা এখন সমতলে সুযোগ না পেয়ে দুর্গম পাহাড়ি এলাকা নির্বাচন করেছে।
তিনি বলেন, পাহাড়ে কিছু বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন আছে। কোনো একটা সংগঠনের ছত্রছায়ায় তারা বান্দরবানের রামুতে অবস্থান নিয়েছে। খুবই দুর্গম এলাকা জায়গাটি। গাড়ি তো যায়ই না, হেঁটে যেতে ৮ ঘণ্টা সময় লাগে। পরে আমরা তথ্য পেলাম, কোনো একটা সংগঠন তাদের সেখানে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। সবকিছু কনফার্ম হয়ে সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলে জানালাম।
খুরশীদ হোসেন বলেন, নির্দেশ মোতাবেক পরে সেনাবাহিনীর সঙ্গে আলোচনা করে ড্রোনের মাধ্যমে তাদের অবস্থান নিশ্চিত করে আমরা অভিযান চালিয়েছি। আমরা কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছি, ২১টা অস্ত্র উদ্ধার করেছি।
পাহাড়ের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে জানিয়ে র্যাব ডিজি বলেন, তারা (জঙ্গি) পাহাড়ের উপরে যেসব জায়গায় তাঁবু করেছিল সেগুলো আমরা অলরেডি গুড়িয়ে দিয়েছি এবং আমরা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছি। তারা দুইভাগ হয়ে ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে আছে। সেনাবাহিনী এমন অবস্থান নিয়ে রেখেছে যে তারা বর্ডারের দিকেও যেতে পারছে না আবার নিচেও নামতে পারছে না। এর মধ্যে একজন আত্মসমর্পন করেছে। সে ১০ দিন ধরে ভাত খায়নি। আরও এচিভমেন্ট যখন আসবে তখন আমরা বিস্তারিত জানাবো।
প্রসঙ্গত, র্যাব-১১ এর সদরদপ্তরে আদালতের নির্দেশ মোতাবেক জেলার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বেগম ফারহানা ফেরদৌস, সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এবং জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের (প্রসিকিউশন) উপস্থিতিতে প্রায় ৩৭ কোটি টাকার বিদেশি মদ ধ্বংস করা হয়।
এ সময় সেখানে আরো উপস্থিত ছিলেন র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক খন্দকার আল মঈন, র্যাব-১১ এর অধিনায়ক তানভীর মাহমুদ পাশা, জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল প্রমুখ।