শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে রাবি শিক্ষকের অনশন

রাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ৩১ অক্টোবর ২০২২, ১৯:১৪

শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে প্রতীকী অনশন। ছবি: রাবি প্রতিনিধি
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (রামেক) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে প্রতীকী অনশন করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান।
আজ সোমবার (৩১ অক্টোবর) সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে জোহা চত্বরে তিনি এই অনশন শুরু করেন৷ বিকেল ৫ টায় এই কর্মসূচি সমাপ্ত করেন তিনি৷
কর্মসূচিতে অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খানের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এসময় সারাদেশে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা সেবার অনিয়ম, অবহেলা ও রোগীর স্বজনদের সাথে অশোভন আচরণের প্রতিবাদও জানানো হয়৷
এসময় অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, সারাদেশে ডাক্তারদের অনীহা ও অবহেলায় সাধারণ মানুষেরা ভোগান্তির স্বীকার হচ্ছেন। হাসপাতালে কোনো দুর্ঘটনায় রোগীর স্বজনরা প্রতিবাদ জানালে তারা দলবেঁধে তাদের ওপর চড়াও হচ্ছে। বিষয়টা ন্যক্কারজনক। সর্বশেষ রামেক হাসপাতালে আমাদের শিক্ষার্থীদের ওপর যে ঘটনা ঘটেছে তা কোনো ভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। ডাক্তার মানুষের জীবন রক্ষা করবে কিন্তু তারা অপারেশন থিয়েটারের যন্ত্রপাতি নিয়ে রাবি শিক্ষার্থীদের ওপর যে হামলা করেছে, তা খুবই নিন্দনীয়। এ ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত দরকার এবং জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত।
ওই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়ে তিনি বলেন, আসলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ফর্মালিটি মেইনটেইন করতে মামলা করেছে। শিক্ষার্থীদের স্বার্থের বিষয়ে আরো শক্ত ভূমিকা প্রশাসনের থাকা উচিত। এছাড়া তার মৃত্যুর বিষয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির কোনো সদস্য এখনো হাসপাতালের ভুক্তভোগীদের থেকে তথ্য নেয়নি। সব মিলিয়ে তদন্ত কমিটি খুব কার্যকরী ভূমিকা পালন করেছে বলে মনে হয় না।
সেদিন হাসপাতালে থাকা একজন শিক্ষার্থী হলেন রাফি। তিনি বলেন, শাহরিয়ার ভাইকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর বিভিন্ন ফরমালিটি মেইনটেইন করতে বলা হয়। সেসব না করলে চিকিৎসা শুরু হবে না বলে জানান সেখানের দায়িত্বপ্রাপ্তরা। আধাঘণ্টা পরে ডাক্তার এসে তাকে মৃত ঘোষণা করে। এই ঘটনায় চিকিৎসা অবহেলার অভিযোগ তুলে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন শুরু করে তার সহপাঠীরা। আন্দোলনে হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক ও আনসাররা মিলে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়।
উল্লেখ্য, গত ১৯ অক্টোবর রাত ৮ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ হবিবুর রহমান হলের বারান্দা থেকে পড়ে গুরুতর আহত হয় মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী এম জি এম শাহরিয়ার। আহতাবস্থায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তবে হাসপাতালে চিকিৎসা দিতে কালক্ষেপণ করার অভিযোগ তুলেন রাবি শিক্ষার্থীরা৷ পরবর্তীতে হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক, ওয়ার্ড বয় ও আনসাররা শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিচার্জ করে৷ এক পর্যায়ে তারা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন৷ এতে রাবির বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন৷