রাঙ্গামাটিতে কঠিন চীবর দানোৎসব উদযাপিত

রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৪ নভেম্বর ২০২২, ১৮:৩২

রাজবন বিহারে কঠিন চীবর দানোৎসব। ছবি: রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি
যথাযোগ্য মর্যাদা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে রাঙ্গামাটির রাজবন বিহারে কঠিন চীবর দানোৎসব উদযাপিত হয়েছে। চীবর দান উপলক্ষে আজ শুক্রবার (৪ নভেম্বর) সকালে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা দেশ-জাতি তথা জগতের সকল প্রাণির হিতসুখ মঙ্গল কামনায় বৌদ্ধ ভিক্ষুদের (ধর্মীয় গুরু) কাছ থেকে পঞ্চশীল গ্রহণ করেছেন। এরপর বৌদ্ধমূর্তি দান, সংঘ দান, অষ্ট পরিষ্কার দান, কল্পতরু দান, পিণ্ডদানসহ নানাবিধ দান সম্পন্ন হয়। বিকেলে ভান্তেদের কঠিন চীবর দানের মধ্য দিয়েই শেষ হয়েছে চীবর দানোৎসব।
পার্বত্য চট্টগ্রামের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের প্রাচীন তীর্থস্থানখ্যাত ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান রাঙ্গামাটির রাজবন বিহারে দুদিন ব্যাপী ৪৯তম দানোত্তম কঠিন চীবর দানোৎসব শুরু হয় বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর)। এদিন বিকালে বেইন কর্মীদের পঞ্চশীল গ্রহণের মধ্য দিয়ে শুরু হয় প্রথম দিনের ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান। এরপর বেইন ঘর উদ্বোধন, সুতা লাঙানো, রঙ করা, রাতভর বেইনবুনাসহ প্রথমদিনের অন্যান্য ধর্মীয় কাজ করা হয়। দ্বিতীয় দিন (৪ নভেম্বর) ভোর ৬টা থেকে শুরু হয় কঠিন দান অনুষ্ঠানের শেষ দিনের আনুষ্ঠানিকতা।
শেষ দিন কঠিন চীবর দানোৎসবে উপস্থিত ছিলেন- রাঙ্গামাটির সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার এমপি, চাকমা সার্কেল চিফ (চাকমা রাজা) ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অংসুইপ্রু চৌধুরী, রাঙ্গামাটি জেলাপ্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, চাকমা সার্কেল চিফের সহধর্মিণী (চাকমা রাণী) য়েন য়েন প্রমুখ।
চীবর দান উৎসবে রাঙ্গামাটির বিভিন্ন উপজেলা ছাড়াও খাগড়াছড়ি-বান্দরবানসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে ধর্মপ্রাণ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা ছুটে এসেছেন। এসময় সাধু, সাধু, সাধু ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে রাজবন বিহার। চীবর দানকে কেন্দ্র করে পুরো বিহার এলাকায় অর্ধলক্ষাধিক মানুষের জনসমাগম হয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।
প্রসঙ্গত, পার্বত্য চট্টগ্রামের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের প্রাচীন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান রাঙ্গামাটির রাজবন বিহার। আয়তনে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বৌদ্ধ বিহার এটি। মূলত তিনমাস বর্ষাবাস শেষে প্রবারণা পূর্ণিমার পর থেকে পাহাড়ের বিভিন্ন গ্রামে-গ্রামের বিহারে চলে কঠিন চীবর দানোৎসব। কঠিন চীবর দান উৎসব শুরুর শেষ দিকেই রাঙ্গামাটির রাজবন বিহারে চীবর দান হয়ে থাকে। তবে রাজবন বিহারের পরও দুয়েকটি বিহারে এই উৎসব উদযাপিত হয়।