বিএম কলেজ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ৬০০ টাকা ফি মওকুফ

বরিশাল প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১০ নভেম্বর ২০২২, ১৮:১১
-636cea5774ccb.jpg)
ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা। ছবি: বরিশাল প্রতিনিধি
দ্বিতীয় বর্ষের মওকুফকৃত ৬০০ টাকা ফি তৃতীয় বর্ষে আদায়ের প্রতিবাদে সকল পরীক্ষা বর্জন করে বরিশাল কেন্দ্রীয় বাসটার্মিনালে অবস্থান নিয়ে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজের শিক্ষার্থীরা।
আজ বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর দুইটা পর্যন্ত বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কসহ পৃথক স্থানে সড়ক অবরোধের ফলে দীর্ঘ ভোগান্তিতে পড়তে হয় বাস যাত্রী এবং পথচারীদের। সীমাহীন যানজটের সৃষ্টি হয় নগর জুড়ে। দুপুর দুইটার দিকে ৬০০ টাকা ফি মওকুফের ঘোষণা দিলে অবরোধ তুলে নেন শিক্ষার্থীরা।
এর আগে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বিএম কলেজ ক্যাম্পাসে ফি মওকুফের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। তারা সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তাদের দাবি তুলে ধরার পরে প্রথমে বিএম কলেজের সামনের সড়ক এবং পরে নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস স্ট্যান্ড সংলগ্ন বরিশাল-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করেন তারা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, গতবছর (২০২১) সম্মান ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থীদের করোনাকালীন সময়ে বেতন-ফিসহ সকল অকার্যকর ফি মওকুফের দাবিতে ছাত্র আন্দোলন সংগঠিত হয় এবং আন্দোলনের চাপে কলেজ প্রশাসন অকার্যকর ফি বাবদ ৬০০ টাকা মওকুফ করতে বাধ্য হয়। কিন্তু এখন আবার সেই মওকুফকৃত ফি দিতে শিক্ষার্থীদের বাধ্য করা হচ্ছে।
এরই প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯ টায় বিএম কলেজ জিরো পয়েন্টে সম্মান তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা সংবাদ সম্মেলন করেন। বৃহস্পতিবার তাদের সেমিস্টার ও টেস্ট পরীক্ষা ছিল। কলেজ থেকে জানানো হয়, যারা ফি দেয়নি তারা পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে না। এরপরই শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা বর্জন করে কলেজের সামনের সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।
শিক্ষার্থী বিজন সিকদার জানান, কলেজ কর্তৃপক্ষ করোনাকালীন সময়ে দ্বিতীয় বর্ষে থাকাকালে বিভিন্নখাতের ৬০০ টাকা মওকুফ করেন। সেই শিক্ষার্থীরা তৃতীয় বর্ষের উঠে বৃহস্পতিবার ইনকোর্স ও টেস্ট পরীক্ষা দিতে এসে জানতে পারে ৬০০ টাকা ফি দিয়ে পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। অথচ টাকা দেওয়ার বিষয়টি পরীক্ষার আগের দিন রাতে ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট দিয়ে জানিয়েছেন। এতে প্রায় পাঁচ হাজার শিক্ষার্থী চরম বিপাকে পরেছেন। আমরা পরীক্ষায়ও অংশগ্রহণ করিনি।
তিনি বলেন, আমরা প্রথমে বিষয়টি অধ্যক্ষ স্যারকে জানিয়েছিলাম, তিনি বিষয়টিতে গুরুত্ব দেননি। পরে কলেজের সামনের সড়ক অবরোধ করলেও আমাদের ভুল বোঝানো হয়। পরে বাধ্য হয়ে মহাসড়ক অবরোধ করি। আমাদের দাবি দাওয়া মেনে নেওয়ায় আমরা সড়ক থেকে সরে এসেছি।
শিক্ষার্থী মো. আরিফ মিয়া বলেন, কলেজের প্রশাসনিক ভবনে সব ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে টাকা তুলছে। এবার তারা আমাদের করোনাকালে মওকুফ করা ফি পুনরায় দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে। যে ফি মওকুফ করা হয়েছে তা আবার কেন শিক্ষার্থীদের দিতে হবে ? তাই আমরা পরীক্ষা বর্জন করে বিক্ষোভ করেছি।
অপর শিক্ষার্থী হানিফ বলেন, আমাদের আন্দোলনের পর কলেজ অধ্যক্ষ কথা দিয়েছেন বাড়তি ৬০০ টাকা ফি আর নেওয়া হবে না। বিষয়টি নোটিশ আকারেও জানিয়ে দেওয়া হবে। তাই আমরাও আন্দোলন থেকে সরে এসেছি।
বিএম কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. গোলাম কিবরিয়া বলেন, শিক্ষার্থীরা একটি ফি নিয়ে আন্দোলন শুরু করে। কিন্তু ওই সময় ৬০০ টাকা মওকুফ করা হয়নি। বলা হয়েছিল করোনার কারণে পরে দেবে। এখন আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি শিক্ষার্থীদের ওই ৬০০ টাকা মওকুফ করার। শিক্ষার্থীরা রাস্তা ছেড়ে দিয়েছে। শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার ফজলুল করিম বলেন, শিক্ষার্থীরা সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে অবরোধ করে। পরে তাদের দাবি মেনে নেওয়া হলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। নগরী ও মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।