সবুজে ছেয়ে গেছে তিস্তার বিস্তীর্ণ চরাঞ্চল

নীলফামারী প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৬ নভেম্বর ২০২২, ১৬:০৪

ডিমলা তিস্তাপাড়ে ভুট্টা ক্ষেত। ছবি: প্রতিবেদক
সবুজে ছেয়ে গেছে তিস্তার বিস্তীর্ণ চরাঞ্চল। যেদিকে চোখ যায় সেদিকে সবুজে ঘেরা ভুট্টার খেত আর খেত। যদিও ধান চাষাবাদ হয় না এখানকার মাটিতে। তাতে কোনো দুঃখ কষ্ট নেই ডিমলা তিস্তাপাড়ের কৃষকের। কারণ তিস্তার বিস্তীর্ণ বালুচরে যে পরিমাণ ভুট্টা চাষাবাদ হচ্ছে তাতে করে এই এলাকার কৃষকের জীবনযাত্রায় এসেছে আমূল পরিবর্তন।
স্থানীয়রা জানান, ডিমলা তিস্তাপাড়ের এই অভাবনীয় পরিবর্তনের পেছনে রয়েছে ডিমলা উপজেলা কৃষিদপ্তরের সহযোগিতা। কৃষি কর্মকর্তারা মাঠে গিয়ে কৃষককে পরামর্শ দেওয়া থেকে শুরু করে চাষের খোঁজখবর নেওয়ার কারণেই এই সাফল্য এসেছে। এখানকার পলি মিশ্রিত বালু মাটিতে বিভিন্ন ধরনের ফসল ফলানো যায়। তাছাড়া অল্প সময়ে কম খরচে অধিক ফলন হয় কেবল ভুট্টারই। এ কারণে ভুট্টা চাষ স্থানীয় কৃষকদের কাছে বেশি জনপ্রিয়। তারা সেই সুফলও ভোগ করছেন।
জানা গেছে, ফলন ও দাম ভালো পাওয়ায় চরের চাষিরা ভুট্টা চাষে ঝুঁকে পড়েছে অনেক আগে থেকেই। আর ফিড কোম্পানিগুলো সরাসরি চাষিদের কাছ থেকে ভুট্টা খরিদ করায় তাদের তেমন কোন সমস্যায় পড়তে হয় না।
পূর্ব খড়িবাড়ী এলাকার কৃষক হুকুম আলী বলেন, ‘এক একর জমিতে বীজ, সার ও শ্রমিক মজুরি মিলে খরচ হয় ৬০-৬৫ হাজার টাকা। প্রতি শতক জমি থেকে ৫০-৫৫ কেজি ভুট্টা পাওয়া যাবে। প্রতি মণ ভুট্টা ৭২০-৮০০ টাকায় বিক্রি করা হয়।’
তিনি আরো বলেন, ‘গত ১০ বছর ধরে তিস্তার চরে ভুট্টা চাষাবাদ করছি। প্রথমে তেমন ফলন না পেলেও বিগত দুই থেকে তিন বছর ধরে ভালো ফলন পাচ্ছি।’
উপজেলার চর খড়িবাড়ী গ্রামের জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘চরাঞ্চলে ভুট্টার আবাদ আসার আগে চরের জমি পতিত ছিল। অন্য ফসলের আশানুরূপ ফলন না হওয়ায় এসব জমিতে ফসল ফলানো হয়নি এতোদিন। তবে বেশ কয়েক বছর ধরে ভুট্টার ফলন ভালো হওয়ায় সবাই ভুট্টা চাষে মনোযোগী হয়েছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে আমরা ভুট্টা চাষে আশানুরূপ ফলন ও দাম পাচ্ছি। শুধু ভুট্টা চাষ করেই চরের কৃষকরা টিকে আছেন। গত বছর পাঁচ বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করেছিলাম। এ বছর চাষ করেছি ১০ বিঘা। আশা করছি, ভালো ফলন ও দাম পাবো।
তিনি আরো বলেন, নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে ভুট্টার চাষ শুরু হয়। আর ফসল ঘরে তোলা হয় এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকে। ভুট্টা চাষে তেমন খরচ নেই। কিন্তু রয়েছে আশানুরূপ লাভ।
উপজেলা কৃষি অফিসার (কৃষিবিদ) সেকেন্দার আলী বলেন, এ বছর ১৩ হাজার চারশো ৫৮ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ হয়েছে। কৃষি অফিস থেকে চাষিদের ভুট্টার ভালো ফলনে নানা পরামর্শ ও পরিচর্যার দিক নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে।