ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ২৫ টন চাল আত্মসাতের অভিযোগ

পঞ্চগড় প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৭ নভেম্বর ২০২২, ২১:৪১

দেবীগঞ্জে ইউনিয়ন পরিষদ। ছবি: প্রতিবেদক
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে এক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ভালনারেবল উইমেন বেনিফিট (ভিডব্লিউবি) কর্মসূচির ২৫ টন চাল আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম এমুর বিরুদ্ধে এই আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।
উপকারভোগীরা অভিযোগ করে বলেন, গত জুলাই ও আগস্ট মাসের বরাদ্দের চাল একসাথে উত্তোলন করা হলেও শুধু এক মাসের চাল বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও অনেকের ভিডব্লিউবি কার্ডে ২২ মাস পার হলেও চাল পেয়েছেন মাত্র দুই বস্তা (৩০ কেজি প্রতি বস্তা)। অনেকেই আবার জানেন না, তার নাম ভিডব্লিউবি কার্ডের তালিকায় রয়েছে।
সূত্র জানায়, দেবীগঞ্জ সদর ইউনিয়নে ২০২১-২২ অর্থবছরের ভিডব্লিউবি আওতাধীন কর্মসূচির কার্ডধারী উপকারভোগীর সংখ্যা ৮৪৫ জন। তার বিপরীতে মাসে চাল বরাদ্দ পায় ২৫.৩৫০ মেট্রিক টন। স্থানীয়দের মাঝে কার্ড ভাগাভাগির জটিলতায় ২০২১ সালে জানুয়ারি থেকে চাল বিতরণ না করে, মার্চ মাস থেকে শুরু হয় চাল বিতরণ। তারপরও ২০২১ সালে ১০ মাসের মধ্যে আট মাস দেয়া হয়েছে চাল।
এদিকে ২০২২ সালের জুলাই ও আগস্ট মাসের চাল একসাথে ২৪ আগস্ট চাল উত্তোলন দেখিয়ে এক মাসের চাল বিতরণ করা হয়েছে এবং সবার কাছ থেকে কার্ড নিয়ে রেখে দেন চেয়ারম্যান। তিন চার মাসেও কার্ড ফেরত পায়নি ভুক্তভোগীরা।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, এক মাসের ২৫.৩৫০ মেট্রিকটন ভিডব্লিউবি কার্ডের চাল খাদ্য গুদামের যোগসাজশে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, ট্যাগ অফিসার আত্মসাৎ করেছেন।
উপজেলা সমবায় ও ভিজিডি কার্ডের চাল বিতরণের দেবীগঞ্জ সদর ইউনিয়নের ট্যাগ অফিসার আল মামুন জানান, দুইটা ডিও একসাথে উত্তোলন করা হয়েছে এমনটা মনে নাই। আর চোর চুরি করলে কেউ ঠেকাতে পারবে না। আমার পক্ষে শতভাগ নিশ্চয়তা দেওয়া সম্ভব না।
ডাঙ্গাপাড়া এলাকার আনোয়ারা বেগম জানান, ২০২১ সালের মার্চ মাস থেকে ২২ সালের অক্টোবর মাস পর্যন্ত, আমি দুই মাসের চাল পেয়েছি। পরে ফারুক মেম্বারকে বার বার বলেছি আমার চাল দেন কিন্তু মেম্বার কোন কথা শুনেননি। এসময় ২০ মাসের চাল উদ্ধার করে, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিচারের দাবী জানান তিনি।
একই এলাকার নাছরিন আক্তার জানান, আলাল নামে এক ব্যক্তিকে দুই হাজার টাকা দিয়েছেন ভিডব্লিউবি কার্ডের জন্য। পরে খবর নিয়ে জানতে পেরেছি আমার কার্ড হয়েছে। কার্ড নম্বর ১০৭, কিন্তু চাল এখন পর্যন্ত এক ছটাকও পাই নাই।
এছাড়াও ২০ মাসেও কোন চাল পায়নি জাহানারা বেগম। জুলাই ও আগস্ট মাসে মরিয়ম আক্তার, হাছিনা বেগম, শিউলি বেগম, আনজু, দুলালি বেগমসহ একাধিক কার্ডধারী দুই বস্তা চাল পাওয়ার কথা থাকলেও চাল পেয়েছেন এক বস্তা করে।
দেবীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আশরাফুল আলম এমু জানান, যা বরাদ্দ পেয়েছি তাই দিয়েছি। কিছু মানুষ পৌরসভায় পড়েছে তাদেরকে শুধু দেওয়া হয়নি। বলা আছে নভেম্বরে জাতীয় পরিচয় পত্র ছাড়া চাল দিব না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. গোলাম ফেরদৌস জানান, বিষয়টি আগেই শুনেছি খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে, প্রমাণিত হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।