Logo
×

Follow Us

জেলার খবর

পাবনায় মাছ ধরা উৎসব: বিলে উপচে পড়া ভিড়

Icon

ফজলুল হক,পাবনা

প্রকাশ: ০৪ ডিসেম্বর ২০২২, ১৬:৫২

পাবনায় মাছ ধরা উৎসব: বিলে উপচে পড়া ভিড়

চলনবিলে চলে মাছ ধরা উৎসব। ছবি: পাবনা প্রতিনিধি

পাবনায় মাছ ধরা উৎসব উপলক্ষে রুহুল বিলে মানুষের উপচে পড়া ভিড়। শীতের কুয়াশা ভেদ করে বর্ষা পরবর্তী বিলের পানিতে নেমে মাছ ধরতে জড়ো হয়েছে হাজারো মানুষ। শুধু তাই নয়, সুদূর টাঙ্গাইল থেকে প্রায় একশ জন এ উৎসবে অংশ নেন। 

আজ রবিবার (৪ ডিসেম্বর) রুহুল বিলের এমনই চিত্র দেখা মিলেছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, রবিবার সকালে হাতে পলো, ঠেলা জাল, চাকি জাল, খুইরা জাল, বাদাই জালসহ মাছ ছাড়াও নানান ধরনের দেশীয় মাছ ধরার সরঞ্জাম হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে হাজার হাজার মানুষ। সেখানে শিশু, কিশোর, যুবক, বৃদ্ধসহ বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ উপস্থিতি। এই কাক ডাকা ভোরে তারা সকলে জড়ো হয়েছেন শুধু একটায় উদ্দেশ্য বর্ষা পরবর্তী বিলের পানিতে নেমে মাছ ধরবে। যেটা আঞ্চলিকভাবে প্রচলিত নাম বাউত উৎসব। যা আবহমানকাল ধরে পাবনার ভাঙ্গুড়ার চলনবিলাঞ্চলে চলে আসছে। 


সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বিগত বছর গুলোতে উপজেলার এই বিলাঞ্চলে প্রাকৃতিক পদ্ধতির বদলে বিলের পানিতে বিষ প্রয়োগ বা বিলের পানি সেঁচে মা মাছ তুলে নেয়ায় দেশীয় মাছের প্রজনন ছিলো খুবই কম। কিন্তু সম্প্রতি কয়েক বছরে উপজেলার বৃহৎ রুহুল বিলের গভীর অংশটুকু মৎস্য অভয়াশ্রম ঘোষণা করায় বেড়েছে দেশীয় মাছের প্রজনন। ফলে এবার মহোৎসবে রূপ নিয়েছে বাউত উৎসব। দেশের দূর-দূরান্ত থেকে শৌখিন মাছ শিকারিরা দল বেঁধে এসে অংশ নিয়েছেন মাছ ধরতে। 

সুদূর টাঙ্গাইল থেকে বাস ভাড়া করে প্রায় একশ জনের একটি দল এসেছেন শুক্রবার রাতেই। উদ্দেশ্য বিলের পানিতে মাছ ধরা। এই দলের সমন্বয়ক আলেফ সরকার জানান, আমার বোনের শ্বশুর বাড়ি এই উপজেলার রাঙ্গালিয়া গ্রামে। গতবছর বোনের বাড়িতে এসে দেখেছিলাম এই মাছ ধরার উৎসব তখন থেকে ইচ্ছা ছিলো মাছ ধরতে আসবো। বিষয়টি নিয়ে এলাকার বন্ধুদের সাথে আলোচনা করলে সবাই আগ্রহ পোষণ করে। এভাবেই একশ জন অংশ নেওয়ার ইচ্ছা পোষণ করে।

এছাড়াও বিভিন্ন পেশার মানুষও অংশ নিয়েছেন এই মহোৎসবে। বিশেষ করে পার্শ্ববর্তী জেলা নাটোর, কুষ্টিয়া, সিরাজগঞ্জ থেকেও অংশ নিয়েছেন।

বিলের পানিতে সাধারণত ধরা পরে শোল, বোয়াল, রুই, গজার, ফলি, (চিতল) কাতলা ইত্যাদি মিঠা পানির মাছ। এছাড়া বাউতদের চলাচলে পানি কাদায় ঘোলা হয়ে উঠলে শুরু হয় ঘোলা পানিকে ভেসে ওঠা দেশীয় পুঁটি মাছ ধরা। সাধারণত ঠেলা জালি দিয়ে ধরা হয় এই পুঁটি। কখনো কখনো এই জালে ধরা পরে যায় বিশালাকার কোনো মাছ। সকাল গড়িয়ে দুপুর, দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত চলে এই মাছ ধরা। 


এদিকে বিলের ঠান্ডা পানিতে কাতর হয়ে যাওয়ায় স্বাভাবিক করতে কেউ কেউ বিলের ধারে থাকা শুকনো খড় কুটোয় আগুন দিয়ে তাপ নিচ্ছেন। এছাড়া পানিতে নামার সময় কেউ কেউ শরীর গরম রাখতে খাচ্ছেন কাঁচা সুপারী ও মধু। 

এ বিষয়ে ভাঙ্গুড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাহিদ হাসান খান বলেন, ভাঙ্গুড়া ও চাটমোহর উপজেলার বেশ কিছু অংশ নিয়ে গঠিত রুহুল বিল। প্রতি বছর বর্ষা পরবর্তী সময়ে শৌখিন মাছ শিকারিরা এ উৎসব পালন করে থাকেন। দেশীয় মাছ রক্ষার্থে বর্তমান সরকার বিভিন্ন কাজও করছে। এই ঐতিহ্য যেন বিলুপ্ত না হয়ে যায় সবাইকে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫