
কৃষিপণ্য পরিবহনেও একমাত্র যোগাযোগের মাধ্যম ঘোড়ার গাড়ি। ছবি: প্রতিনিধি
গাইবান্ধা চরাঞ্চলের মানুষের বাহন হিসেবে একমাত্র ভরসা ঘোড়ার গাড়ি। শুধু তাই নয় কৃষিপণ্য পরিবহনেও একমাত্র যোগাযোগের মাধ্যম ঘোড়ার গাড়ি। রাস্তাঘাট না থাকায় অধিকাংশ ঘোড়ার গাড়ির চালকরা জীবনের ঝুঁকি নিয়েই ছুটে বেড়াচ্ছে এক চর থেকে আরেক চরে।
ফলে চরের উৎপাদিত কৃষিপণ্য আনা-নেওয়ার জন্য বিশেষ ভূমিকা রাখছে ঘোড়ার গাড়ি। তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদ-নদীগুলো শুকিয়ে যাওয়ার কারণে বিচ্ছিন্ন গাইবান্ধা সদর, সুন্দরগঞ্জ, সাঘাটা, ফুলছড়িসহ চার উপজেলার কামারজানি, চন্ডিপুর, ফজলুপুর, এরেন্ডাবাড়ী, ফুলছড়ি, উড়িয়া ও গজারিয়া ইউনিয়ন।
এসব ইউনিয়নের খাটিয়ামারি, জিগাবাড়ি, পেপুলিয়া, গাবগাছি, গলনা, জিয়াডাঙ্গা, সাতারকান্দি, রসুলপুর, ফুলছড়ি, টেংরাকান্দি, চর উত্তর খোলাবাড়ী, বাজে ফুলছড়ি, চর কালাসোনাসহ ১৬৫টি চর-দ্বীপচর এলাকায় কোনো যানবাহন চলাচল করে না।
এ কারণে চরের প্রায় ৪ লাখ মানুষ বালুময় পথে মাইলের পর মাইল হেঁটে বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করে। একই সঙ্গে উৎপাদিত কৃষিপণ্য নিজের কাঁধে করে আনা-নেওয়া করতে হয় তাদের। এসব উপজেলার চরাঞ্চলে ঘোড়ার গাড়ি চালিয়ে স্বাবলম্বী হয়েছে শতাধিক পরিবার।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে দিন দিন শুকিয়ে যাচ্ছে নদ-নদীগুলো। শুকনো মৌসুমে চোখে পড়ে শুধুই বালুচর। জীবন-জীবিকা রক্ষায় চরের মানুষ এই ঘোড়াগাড়ির উদ্ভাবন করে। এতে মানুষের দুর্ভোগ অনেক কমেছে। এখন আর তপ্ত বালির ওপর দিয়ে হেঁটে দীর্ঘ চর পাড়ি দিতে হয় না। একই সঙ্গে দূর হয়েছে হাটবাজারে পণ্য নিয়ে যাওয়ার কষ্ট।
এসব চর এলাকার কয়েকজন ঘোড়ার গাড়িচালকের সঙ্গে কথা হলে সাম্প্রতিক দেশকালকে তারা বলেন, ঘোড়াগাড়ি চালিয়ে প্রতিদিন আয় করি ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা। ঘোড়ার খাওয়ার জন্য প্রতিদিন খরচ হয় ২০০ টাকা। বাকি টাকা দিয়ে আমাদের সংসার ভালোই চলছে।