Logo
×

Follow Us

জেলার খবর

সরকারিভাবে ধান-চাল সংগ্রহ শূন্যের কোঠায়

Icon

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৮ ডিসেম্বর ২০২২, ১৫:৫২

সরকারিভাবে ধান-চাল সংগ্রহ শূন্যের কোঠায়

কাজে ব্যস্ত কৃষক। ছবি: সংগৃহীত

চুয়াডাঙ্গার চার উপজেলায় চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার অধিক আমন ধান আবাদ হয়েছে। এ জেলায় ১ লাখ ২৩ হাজার ১১৯ দশমিক ৩১ মেট্রিক টন ধান উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে।

তবে গত ১৭ নভেম্বর থেকে সরকারিভাবে ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান শুরু হলেও ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত সংগ্রহের পরিমাণ রয়েছে শূন্যের কোঠায়।

চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, চলতি মৌসুমে এ জেলায় মোট ৩৪ হাজার ৯২০ হেক্টর জমিতে আমন ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু মোট আবাদ হয়েছে ৩৫ হাজার ১৮৭ হেক্টর। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৬৭ হেক্টর বেশি। চুয়াডাঙ্গা জেলার সদর উপজেলায় ৫ হাজার ৩২০ হেক্টর, আলমডাঙ্গা উপজেলায় ১৬ হাজার ৫১২ হেক্টর, দামুড়হুদা উপজেলায় ৭ হাজার ১৫৫ হেক্টর ও জীবননগর উপজেলায় ৬ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে আমন ধান আবাদ হয়েছে। হেক্টরপ্রতি গড় ফলন ৩ দশমিক ৪৯৯ মেট্রিক টন ধরা হয়েছে। সেই মোতাবেক এ জেলায় ১ লাখ ২৩ হাজার ১১৯ দশমিক ৩১ মেট্রিক টন আমন ধান উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে।

তথ্যে আরও জানা যায়, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ব্রি-ধান ও বিনা-৭ এবং স্বর্ণা জাতের ধান আবাদের জন্য গত ২০২০ সালে ৩ হাজার বিঘা জমিতে ফসল ফলানোর প্রক্রিয়া করে ৩ হাজার কৃষককে বীজ ও সারসহ ২৪ লাখ ৬ হাজার টাকা প্রণোদনা দেয়। ২০২১ সালে ২ হাজার বিঘা জমিতে ধান আবাদের জন্য ২ হাজার কৃষককে ৭ লাখ ৮২ হাজার টাকা ও ২০২২ সালে ১০ হাজার ৫০০ বিঘা জমিতে ধান আবাদের জন্য ১০ হাজার ৫৫০ কৃষককে ২৮ লাখ ৩৫ হাজার টাকা প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। এর ফলে ধানের আবাদ বেড়েছে বলে অধিদপ্তর দাবি করেছে।

চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা জানান, এবার বৃষ্টির কারণে ধানের ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা করা হচ্ছিল। কিন্তু পরে আবহাওয়া স্থিতিশীল হওয়ায় সমস্যা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়েছে। তাছাড়া পোকামাকড়ের উপদ্রব ছিল না বললেই চলে। পরিকল্পিত কৃষি ব্যবস্থার কারণে এবার আমন ধান উৎপাদন ভালো হবে।

এদিকে চুয়াডাঙ্গা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ২০২২-২০২৩ আমন মৌসুমে এ জেলার ৪টি উপজেলায় মোট ২ হাজার ২৫৫ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। সদর উপজেলায় ৩৪১ মেট্রিক টন, আলমডাঙ্গা উপজেলায় ১ হাজার ৫৮ মেট্রিক টন, দামুড়হুদা উপজেলায় ৪৫৯ মেট্রিক টন ও জীবননগর উপজেলায় ৩৯৭ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল। ৪টি উপজেলায় চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৩ হাজার ৮৩৪ মেট্রিক টন। সদর উপজেলায় ৪৮৩ মেট্রিক টন, আলমডাঙ্গা উপজেলায় ৬১২ মেট্রিক টন, দামুড়হুদা উপজেলায় ৩২৫ মেট্রিক টন ও জীবননগর উপজেলায় ২ হাজার ৪১৪ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। প্রতি কেজি ধানের সংগ্রহ মূল্য ২৮ ও চালের সংগ্রহ মূল্য ৪২ টাকা। ২০২২ সালের ১৭ নভেম্বর থেকে শুরু হয়ে ২০২৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে। তবে গত ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত ধান-চাল সংগ্রহ শূন্যের কোঠায় রয়েছে। 

সরকারি খাদ্য গুদামে ধান সরবরাহ করা প্রসঙ্গে সদর উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামের কৃষক নূরুজ্জামান বলেন, সরকার নির্ধারিত ধানের দাম প্রতিমণ ১ হাজার ১০০ টাকা করেছে। কিন্তু গ্রামের আড়তে প্রতিমণ ধান আমরা বিক্রি করছি ১ হাজার ২০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৩৫০ টাকা দরে। এর ফলে আমাদের পরিবহন ব্যয় বেঁচে যাচ্ছে, তেমনি সরকারি গুদামে ধান বিক্রি করতে গিয়ে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে না। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন চালকল মালিক বলেন, সরকারের সঙ্গে চাল সরবরাহের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছি। বর্তমান বাজার দরের সঙ্গে সরকার নির্ধারিত দামের বিস্তর ফারাকের কারণে চাল সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। 

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫