প্রতিনিধি, বরিশাল
প্রকাশ: ০৯ নভেম্বর ২০১৯, ০৪:৩৬ পিএম | আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০১৯, ০৫:১১ পিএম
ছবি: সাম্প্রতিক দেশকাল
প্রবল শক্তি নিয়ে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’। তাই বরিশাল তথা দক্ষিণাঞ্চলের উপকূলীয় এলাকার মানুষদের নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে।
এরই মধ্যে দক্ষিণাঞ্চলের ২ হাজার ১১৪টি সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় নিয়েছে কয়েক হাজার মানুষ। যারা আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে চাচ্ছে না তাদের জোর করে নেয়া হচ্ছে।
বরিশাল নগরীর সার্কিট হাউস মিলনায়তনে আজ শনিবার দুপুরে ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ মোকাবেলায় বিভাগীয় দুর্যোগ বিষয়ক জরুরি সভায় বিভাগীয় কমিশনার মুহাম্মদ ইমামুন চৌধুরী সাংবাদিকদের এই তথ্য জানিয়েছেন।
বিভাগীয় কমিশনার বলেন, আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী সন্ধ্যার পরে দক্ষিণাঞ্চলের উপকূলীয় এলাকায় ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ আঘাত হানতে পারে। তাই এরই মধ্যে বিভাগের ছয়টি জেলার দুই হাজার ১১৪টি সাইক্লোন শেল্টার সেন্টার প্রস্তুত করা হয়েছে। যেখানে ১৭ লাখ ৮৩ হাজার মানুষ আশ্রয় নিতে পারবে।
এর বাইরে দূর্যোগকালীন ও দুর্যোগ পরবর্তী সময়ে চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে ৩১৭টি জরুরি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। যারা বিভাগের ছয়টি জেলার উপকূলীয় এলাকায় ২৪ ঘণ্টা সেবা দেবেন। তাছাড়া বাতিল করা হয়েছে জেলা, উপজেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি।
বিভাগীয় কমিশনার বলেন, উপকূলের ঘূর্ণিঝড়ে সম্ভাব্য ক্ষতির আশঙ্কায় থাকা মানুষগুলোকে দুপুর ২টার মধ্যে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে পৌঁছাবার জন্য বলা হয়েছে। সে অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই উপকূলের অনেক মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে ফিরতে শুরু করেছে। যারা না যাচ্ছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও সিপিপির সহযোগিতায় জোর করে নেয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, মানুষের জীবন রক্ষার জন্যই আমরা তাদের জোড় করে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে যাচ্ছি। কারণ উপকূলীয় অঞ্চলের অনেক মানুষ রয়েছে যারা মালামাল ছেড়ে আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে যায় না। এ কারণেই আমরা তাদের জোর করছি। তাছাড়া উপকূলের মানুষের গৃহপালিত পশু, পাখি ও প্রার্ণীদের জন্যও নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মানুষের জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে পর্যাপ্ত শুকনো খাবারের।
তিনি আরো বলেন, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী আমাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করছে। আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। যেসব পরিবার আশ্রয়ন কেন্দ্রে যাবে তাদের মালামালের নিরাপত্তা এবং আশ্রয় কেন্দ্রে যাতে কোনো দুর্ভোগ না হয় সে বিষয়টি লক্ষ্য রাখছেন তারা। এছাড়া উপকূলীয় এলাকা বিশেষ করে যেসব এলাকায় বাঁধ নেই, বা জলোচ্ছ্বাসের সম্ভাবনা রয়েছে সেখানে সিপিপিসহ স্বেচ্ছাসেবক সংগঠনগুলো সচেতনতামূলক কাজ করছে। আমরা চাই এই দুর্যোগে একটি মানুষও যাতে ক্ষতিগ্রস্থ না হয়।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ মোকাবেলায় বিভাগের ছয়টি জেলা ও বরিশাল সিটি করপোরেশনে পৃথক সাতটি কন্ট্রোল রুম খেলা হয়েছে। এর বাইরে বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার ও বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ে খোলা হয়েছে আরো দুটি কন্ট্রোল রুম। যেখান থেকে দুর্যোগ সংক্রান্ত সকল বিষয়ে তথ্য-আদান প্রদান করা হচ্ছে।
জরুরি সভায় অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার, অতিরিক্ত ডিআইজি, বরিশালের জেলা প্রশাসক, সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা, ঝালকাঠি, পিরোজপুর ও বরগুনা জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া বেলা ১২টার দিকে বরিশাল জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে দুর্যোগ মোকাবেলা ও দুর্যোগ পরবর্তী ব্যবস্থার বিষয়ে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তাছাড়া বিকাল ৬টায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে একই বিষয়ে পুনরায় জরুরি সভা ডাকা হয়েছে।
অপরদিকে ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবল’ এর প্রভাবে সকাল থেকেই বরিশালে থেমে থেমে কখনো গুড়ি গুড়ি আবার কখনো প্রবল বৃষ্টিপাত হচ্ছে। তবে নদীর পানি এখনো বিপদসীমা অতিক্রম করেনি। অবশ্য দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে নদীবন্দরে ২ নম্বর সতর্কতা এবং পটুয়াখালী পায়রা বন্দরে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখানো হচ্ছে। এ কারণে সকাল থেকে বরিশাল নদীবন্দর এবং পায়রা বন্দর এলাকায় সকল প্রকার নৌযান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নির্দেশ বহাল থাকবে বলে জানিয়েছেন বরিশাল বন্দর কর্মকর্তা আজমল হুদা মিঠু সরকার।
ABOUT CONTACT ARCHIVE TERMS POLICY ADVERTISEMENT
প্রধান সম্পাদক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ | প্রকাশক: নাহিদা আকতার জাহেদী
প্রধান সম্পাদক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ
প্রকাশক: নাহিদা আকতার জাহেদী
অনলাইন সম্পাদক: আরশাদ সিদ্দিকী
অনলাইন সম্পাদক: আরশাদ সিদ্দিকী | ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭
© 2021 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh