রাজশাহী প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১০ জানুয়ারি ২০২১, ০৯:১৭ পিএম
বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক বলেছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ড প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর সেই স্মৃতিকে ধরে রেখে রেশম শিল্পকে এগিয়ে নিতে হবে। রেশম বাংলাদেশের ঐতিহ্য।
রবিবার (১০ জানুয়ারি) বিকেলে রাজশাহী রেশম উন্নয়ন বোর্ডের সম্মেলন কক্ষে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, রেশমের উৎপাদন ব্যয় হ্রাস করে উন্নতমানের সুতা তৈরি করতে হবে। যাতে অল্প দামে ভালো মসৃণ কাপড় তৈরি করা যায়। জনগণ সাশ্রয়ী মূল্যে রেশমের কাপড় পরতে পারে। রাজশাহী মানে রাজশাহীর সিল্ক। এটাকে ধরে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করতে হবে।
গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, কিভাবে রেশম শিল্পকে লাভজনক শিল্প হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা যায় এখন আমাদেরকে সে বিষয়ে সাধনা করতে হবে। এটা নিয়ে আমাদেরকে অনেক কাজ করে যেতে হবে। যেন আমরা রেশম ঐতিহ্য ধরে রাখতে পারি।
তিনি বলেন, আমরা রেশম শিল্পকে একটি মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। যাতে ভবিষ্যতে অনেকে এই মডেল অনুসরণ করতে পারে।
সভায় সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, রেশম শিল্পকে টিকিয়ে রাখার জন্য যা যা করা প্রয়োজন আমাদের তাই করতে হবে। রাজশাহী রেশম কারখানা হবে একটি মডেল কারখানা। এখানে উন্নত কাপড় উৎপাদনের পাশাপাশি নতুন নতুন ডিজাইনের ওপর জোর দিতে হবে। প্রয়োজনে ইন্টারনেট থেকে ডিজাইন সংগ্রহ করতে হবে। ভালো ডিজাইন এবং কাপড় উৎপাদন হলে ক্রেতারা আকৃষ্ট হবেন। রাজশাহীর রেশম তাহলে আবার প্রাণ ফিরে পাবে।
সভার শুরুতে বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক মুহাম্মদ আবদুল হাকিম পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনার মাধ্যমে রেশম বোর্ডের প্রধান কার্যাবলী, এই শিল্পের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ ও সমস্যা, সম্ভাবনা, সমস্যা মোকাবেলায় বোর্ডের প্রস্তুতি এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরেন।
মতবিনিময় শেষে মন্ত্রী রাজশাহী রেশম কারখানায় আনুষ্ঠানিকভাবে কাপড় উৎপাদনের উদ্বোধন করেছেন। মোট ১৯টি লুম নিয়ে এখন থেকে কারখানাটি চলবে। এর ফলে বছরে উৎপাদন হবে ২৫ থেকে ২৬ হাজার মিটার রেশম কাপড়।
রেশম কারখানার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের সময় রাজশাহী-২ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ডের সিনিয়র সহসভাপতি ফজলে হোসেন বাদশা, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য আদিবা আনজুম মিতা, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. লোকমান হোসেন মিয়া, রেশম উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক মুহাম্মদ আবদুল হাকিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
রাজশাহী মহানগরীর শিরোইল বাস টার্মিনাল এলাকায় ১৯৬১ সালে সাড়ে ১৫ বিঘা জমির ওপর স্থাপিত হয় এই রেশম কারখানা। ২০০২ সালে তৎকালীন বিএনপি সরকার কারখানাটি বন্ধ করে দেয়। এতে বেকার হয়ে পড়েন কারখানার প্রায় ৩০০ জন শ্রমিক। সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা রেশম বোর্ডের সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার পর কারখানাটি চালুর উদ্যোগ নেন। তার আন্তরিক প্রচেষ্টায় ২০১৮ সালের ২৭ মে পরীক্ষামূলকভাবে কারখানার ৫টি লুম চালু করা হয়। এরপর আরো ১৪টি লুম পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়। মুজিববর্ষ উপলক্ষে মন্ত্রী এসব লুমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করলেন। পর্যায়ক্রমে কারখানার আরো ২৩টি লুম চালুর পরিকল্পনা রয়েছে।
রেশম কারখানার আনুষ্ঠানিক উৎপাদনের উদ্বোধন শেষে মন্ত্রী রেশম কারখানায় উৎপাদিত কাপড়ের বিক্রয় কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। এ সময় মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য আদিবা আনজুম মিতা এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. লোকমান হোসেন মিয়া সেখান থেকে রেশম কাপড় কেনেন।
মতবিনিময় শেষে মন্ত্রী রেশম গবেষণা প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, পি-৩ কেন্দ্র ও রাজশাহী রেশম কারখানা ঘুরে দেখেন। রেশম গবেষণা প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে তিনি একটি আধুনিক পলুপালন ঘরও উদ্বোধন করেন। এরো আগে বেলা সাড়ে ১১টায় তিনি রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার মৌগাছীর চাঁদপুরে রেশম ব্লক, সম্প্রসারণ এলাকা এবং মোহনপুর চাকী সেন্টার পরিদর্শন করেন।
সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত আসনের সদস্য আদিবা আনজুম মিতা, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব লোকমান হোসেন মিয়া প্রমুখ।
ABOUT CONTACT ARCHIVE TERMS POLICY ADVERTISEMENT
প্রধান সম্পাদক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ | প্রকাশক: নাহিদা আকতার জাহেদী
প্রধান সম্পাদক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ
প্রকাশক: নাহিদা আকতার জাহেদী
অনলাইন সম্পাদক: আরশাদ সিদ্দিকী
অনলাইন সম্পাদক: আরশাদ সিদ্দিকী | ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭
© 2021 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh