বাগেরহাটে কঠোর অবস্থানে প্রশাসন, বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ

বাগেরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৪ জুন ২০২১, ১৮:৪৪

বাগেরহাট সেন্ট্রাল ট্রাফিক রোড
করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে বাগেরহাটে চলছে লকডাউনের প্রথম দিন। বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) ভোর ৬টা থেকে লকডাউন বাস্তবায়নে কঠোর অবস্থানে রয়েছে জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বসানো হয়েছে পুলিশের চেকপোস্ট। বেশিরভাগ রাস্তাঘাট রয়েছে ফাকা। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় জরুরি প্রয়োজনে রাস্তায় এসে যানবাহন না পেয়ে বিপাকেও পড়েছেন অনেকে। বাধ্য হয়ে হেঁটে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা দিতে দেখা গেছে অনেককে। বিপাকে পরেছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। লকডাউনের সময় দিনমজুর ও হতদরিদ্রদের খাদ্য সহায়তা দেয়ার দাবি জানিয়েছেন ইজিবাইক ও রিকশা চালকরা।
বাগেরহাট কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড, ট্রাফিক মোড়, সাধণার মোড়, মিঠাপুকুরপাড়সহ বিভিন্ন স্থানে পুলিশের চেকপোস্ট দেখা যায়। রোগী ও জরুরি পরিবহন ছাড়া অন্য যেকোনো পরিবহনকে বাড়িতে ফিরিয়ে দিতে দেখা যায় পুলিশকে।
বাগেরহাট সদর উপজেলার পুটিমারি এলাকার বিউটি দাস বলেন, রাতে লকডাউনের খবর শুনেছি। মনে করেছি শুধু বাস বন্ধ থাকবে। কিন্তু বাসস্ট্যান্ডে এসে দেখি রিকশা, অটো, মাহিন্দ্রা, ইজিবাইকসহ সবই বন্ধ। কয়রা থানায় জরুরি কাজ, যেতেই হবে। তাই হেটেই রওনা দিয়েছি।
বাবা ও ভাইকে নিয়ে হেটে খুলনা রওনা দেয়া শিহাব রহমান বলেন, দুইদিন আগে আত্মীয়ের বাড়িতে এসেছিলাম। লকডাউন হওয়ায় খুব বিপদে পড়ে গেছি। তাই হেটে রওনা দিয়েছি। পথি মধ্যে যদি কোনো বাহন পাই তাতে উঠে পরব।
আজিজ, সুমন শরীফ, মো. আলিফসহ কয়েকজন ইজিবাইক চালক বলেন, করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে দেয়া লকডাউন আমরা মানি। সরকার যেভাবে বলবে আমরা সেভাবে চলব। তবে রাস্তায় না বের হলে, গাড়ি না চালালে আমরা খাব কি। লকডাউনের সময় রিকশা চালক, ইজিবাইক চালক, মাহিন্দ্রা চালকসহ দিনমজুরদের খাদ্য সহায়তা দেয়ার দাবি জানান তারা।
রিকশা চালক মো. আব্দুল কুদ্দুস বলেন, রিকশা না চালালে, রান্না হয় না ঘরে। তাইতো রিকশা নিয়ে বের হয়েছি। বুঝে শুনে চালাচ্ছি। যেসব জায়গায় পুলিশের চেকপোস্ট রয়েছে, তা এড়িয়ে চলছি।
বাগেরহাটের পুলিশ সুপার কেএম আরিফুল হক বলেন, লকডাউন বাস্তবায়নে আমরা জেলার ১৩টি স্থানে চেকপোস্ট বসিয়েছি। রোগী এবং জরুরি কাজে ব্যবহৃত পরিবহন ছাড়া অন্য কোনো পরিবহন চলতে দেয়া হচ্ছে না। এছাড়াও পুলিশের ভ্রাম্যমাণ টিম কাজ করছে। যেসব মানুষ অতিপ্র্য়োজনে রাস্তায় বের হয়েছে, তাদেরকে মাস্ক পড়া নিশ্চিত করতে পুলিশ কাজ করছে।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মাদ আজিজুর রহমান বলেন, স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে এবং বিধি নিষেধ কার্যকর করার জন্য জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি সব উপজেলায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে। মানুষকে সচেতন করার জন্য মাইকিংও করা হচ্ছে। মাস্কের ব্যবহার নিশ্চিত করতে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। সব শ্রেণি পেশার মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।