ভোগান্তিতে আশ্রয়ণকেন্দ্রের বাসিন্দারা

মো. মামুন চৌধুরী, হবিগঞ্জ
প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২১, ০৮:২৪

হবিগঞ্জের আশ্রয়ণ কেন্দ্র
হবিগঞ্জের পানছড়ি আশ্রয়ণ কেন্দ্রে তীব্র পানি সংকট দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া এই আশ্রয়ণকেন্দ্রের সিংগভাগ বসতঘরের টিনের চাল ছিদ্র হয়ে গেছে। ফলে একটু বৃষ্টি এলেই এইসব ঘরের চাল দিয়ে পানি পড়ে, যার ফলে চরম ভোগান্তিতে আছেন এখানকার বাসিন্দারা।
পানছড়ি আশ্রয়ণ কেন্দ্রটি জেলার চুনারুঘাট উপজেলার শানখলা ইউনিয়নের রঘুনন্দন পাহাড়ি এলাকায় অবস্থিত। ২০০০ সালে এখানে প্রায় ৫০ একর পাহাড়ি জমি নিয়ে এই আশ্রয়ণকেন্দ্রের যাত্রা শুরু হয়। সে সময় ৫০টি ব্যারাকে বিভিন্ন স্থানের দরিদ্র ৫০০ ভূমিহীন পরিবারকে এখানে পুনর্বাসন করা হয়েছিল। বর্তমানে এখানে থাকা পরিবারগুলো তীব্র পানি সংকটে আছেন। এখানে পর্যাপ্ত পরিমাণে গভীর পুকুর ও নলকূপ নাই। এর মধ্যে বেশির ভাগ নলকূপই নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। আবার অনেকগুলো দিয়ে পানি আসছে না। আর যে কয়েকটি আছে, তা দিয়ে হচ্ছে না সংকুলান। পুকুরগুলো ভরাট হয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় অনেক দূর থেকে তাদেরকে পানির সংগ্রহ করতে হয়। একই সঙ্গে তাদের বসতঘরের টিনের চাল ছিদ্র হয়ে গেছে। এতে অল্প বৃষ্টি হলেই ঘরগুলোতে পানি পড়ে। তখন তদের ভোগান্তির সীমা থাকে না। রাতে বৃষ্টি হলে তাদেরকে নির্ঘুম কাটাতে হয়। যাদের নুন আনতে পানতা ফুরোয় তাদের কাছে ঘর মেরামত করাটা যেন এক ধরনের বিলাসিতা।
আশ্রয়ণের বাসিন্দা নিবাস বণিক জানান, এই আশ্রয়ণের বাসিন্দারা জ্বালানি কাঠ (লাকড়ি), সবজি চাষ, গাড়ি চালানোসহ বিভিন্ন পেশায় কাজ করেন। এ থেকে যা আয় হয় তা দিয়ে কোনো রকমে তারা খেয়ে পড়ে বেঁচে আছি। তাদের অনেকেই তিনবেলা পেটভরে খেতেও পারি না। কিভাবে ঘর মেরামত করব?
আশ্রয়ণের বাসিন্দা রুপচরণ দেবনাথ, সুরন্দ দেবনাথ, অর্পনা পালরা বলেন, এখানে পর্যাপ্ত পরিমাণে নেই সুপেয় পানি। আমরা পুকুর খনন তো দূরের কথা গভীর নলকূপই বসাতে পারি না। গোসলের জন্যও যেতে হয় অনেক দূরে। না হলে পানি নিয়ে এসে বাড়িতে গোসল করতে হয়। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। যদিও সরকারিভাবে অগভীর নলকূপ স্থাপন করে দেওয়া হয়েছিল। সেগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ চাই আমরা।
স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার তাউস মিয়া বলেন, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নলকূপ দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। এ ছাড়া ঘর মেরামত করে দেওয়ার জন্য উপজেলা প্রশাসনের কাছে দাবি জানানো হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সত্যজিত রায় দাশ জানান, আশ্রয়ণের ঘরগুলোর টিনের চাল মেরামত করে দেওয়ার জন্য বাসিন্দারা দাবি জানিয়েছেন। বরাদ্দ সাপেক্ষে দ্রুত মেরামত করে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। একইসঙ্গে ব্যবহারের জন্য পানির সংকট দূর করতে নলকূপ ও পুনরায় পুকুর খননের জন্য আলোচনা করা হয়েছে।