অশ্লীল ভিডিওর জন্যই খুন হয় ঝিনাইদহের রিয়াদ

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৩ ডিসেম্বর ২০২১, ২০:৪৯

সংবাদ সম্মেলন
ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে এক স্কুল শিক্ষার্থীকে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যার অভিযোগে প্রধান অভিযুক্ত মিলন দাশকে (২১) আটক করেছে পুলিশ।
বুধবার (২২ ডিসেম্বর) রাত ৯ টার দিকে প্রযুক্তির (মোবাইল ট্র্যাকিং) মাধ্যমে বাগডাঙ্গা রাস্তা পাড়া বাড়ির পাশ থেকে তাকে আটক করা হয়। বৃহস্পতিবার বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কোটচাঁদপুর সার্কেল) মোহাইমিনুল ইসলাম।
এসময় তিনি সাংবাদিকদের জানান, আটক মিলন দাশ উপজেলার বাগডাঙ্গা গ্রামের সলেমান আমিনের ছেলে স্কুল শিক্ষার্থী রিয়াদ হোসেন খুনের প্রধান আসামি। বুধবার রাতে সে বাগডাঙ্গা গ্রামের ঝিঁনুর আম বাগানের পাশে রিয়াদকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করে কপোতাক্ষ নদে ফেলে দেয়। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে খুনের রহস্য ও লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়েছেন আসামি মিলন দাশ।
পুলিশ জানায়, দীর্ঘদিন ধরে আসামি মিলন দাশ ও ভিকটিম রিয়াদ খান একসাথে মাদক সেবন করে। সে সুবাদে আসামির মা অঞ্জলি দাশের সাথে এক ব্যক্তির অনৈতিক ও অসামাজিক একটি ভিডিও ধারণ করে রিয়াদ খান। দীর্ঘদিন ধরে সেই ভিডিও দেখে আসামি মিলনকে ব্লাকমেইল করে আসছিল রিয়াদ। মিলন সে ভিডিওটি রিয়াদকে ডিলেট করতে বলে। এরপরও ভিকটিম সেই ভিডিওটি ডিলেট না করে তাকে নানা ভাবে ব্লাকমেইল করছিল। এতে সে রিয়াদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে উচিত শিক্ষা দেয়ার কথা ভাবে। যার ফলশ্রুতিতে বুধবার রাতে তাকে নৃশংসভাবে হত্যা করে লাশ পানিতে ভাসিয়ে দেয়।
যেভাবে হত্যা করা হয়
হত্যার পরিকল্পনায় আসামি মিলন দাশ তার মায়ের ব্যবহৃত একটি দা চৌকাঠে ধার দিয়ে ঘটনাস্থলে রেখে আসে। হত্যার রাতে সে রিয়াদকে মাদক সেবনের জন্য ডেকে নেয়। রাত ৯টার দিকে আসামি ও ভিকটিম দুই জনেই মাদক সেবন করে। রিয়াদকে অতিরিক্ত মাদক সেবন করায়। এক পর্যায়ে অতিরিক্ত সেবনে রিয়াদ অচেতন হলে তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে উপর্যুপরি কোপাতে থাকে। এসময় রিয়াদ আত্মরক্ষার চেষ্টা চালায় ও দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে। এতে উভয়ের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়।
পুলিশ জানায়, মিলন দাশের ধারালো দায়ের কোপে রিয়াদের একটি হাতের কব্জি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এক পর্যায়ে রিয়াদ দুর্বল হয়ে পড়ে মাটিতে লুটে পড়ে। আসামি মিলন দাশ রিয়াদের মৃত্যু নিশ্চিত করতে তাকে জবাই করে এবং মুখ ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষত-বিক্ষত করে নৃশংসভাবে হত্যা করে পানিতে ফেলে রাখে। পরদিন সকালে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় নিহতের পিতা সলেমান খান বাদী হয়ে কোটচাঁদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ প্রযুক্তি ব্যবহার করে হত্যার মূল আসামি মিলন দাশকে আটক করে।
আটক মিলন দাশ উপজেলার বাগডাঙ্গা গ্রামের রাস্তা পাড়ার মৃত মুকুল দাশের ছেলে, সে পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- থানার অফিসার ইনচার্জ মঈন উদ্দিন, ওসি (তদন্ত) ইমরান আলম, সেকেন্ড অফিসার আব্দুল মান্নান।