ধর্ষণচেষ্টার মামলায় সেই ছাত্রলীগ নেতা রিমান্ডে

ময়মনসিংহের নান্দাইলে নারী ফুটবলারকে ধর্ষণ চেষ্টার মামলায় সেই ছাত্রলীগ নেতা ওয়াহিদুল আলম ফয়সাল ফকিরের দুইদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

ফয়সাল ফকির উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। সে পৌর শহরের পাছপাড়া গ্রামের লাল মিয়া ফকিরের ছেলে।

আজ বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল) বিকেল ৩ টার দিকে চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তুলা হলে বিচারক রাজিব হাসান দুইদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের কোর্ট পরিদর্শক প্রসুন কান্তি দাস বলেন, ডিবি পুলিশ ওই আসামির পাঁচদিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে তুললে বিচারক দুইদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এর আগে সকাল ১১ টার দিকে ওই কিশোরীর ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ।

এ বিষয়ে নান্দাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান আকন্দ বলেন, ওই কিশোরী ধর্ষণ নাকি ধর্ষণচেষ্টার শিকার হয়েছেন, বিষয়টি নিশ্চিত হতে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। 

এবিষয়ে জেলা গোয়েন্দা শাখার ওসি সফিকুল ইসলাম বলেন, গতরাতে মামলাটি থানা থেকে ডিবিতে হস্তান্তর করা হয়েছে। ওই আসামিকে রিমান্ডে নেয়া হবে।

এর আগে শুক্রবার (২২ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে পৌর শহরের নান্দাইল সরকারী শহীদ স্মৃতি আদর্শ ডিগ্রি কলেজের পিছনে ওই কিশোরী ফুটবলারকে ধর্ষণ করেছেন বলে অভিযোগ উঠে।

এই ঘটনায় শনিবার (২৩ এপ্রিল) ওই নারী ফুটবলার নিজে বাদী হয়ে ফয়সাল ফকির ও তার দুই সহযোগীকে অভিযুক্ত করে ধর্ষণের অভিযোগ করেন। তবে ওই কিশোরী ফুটবলারের অভিযোগ গত সোমবার (২৫ এপ্রিল) পুলিশ ধর্ষণ মামলা রুজু না করে ধর্ষণচেষ্টার মামলা রুজু করে।

এই নিয়ে বুধবার (২৭ এপ্রিল) বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে বিষয়টি নিয়ে সমালোচনার সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে ওই দিন দুপুর দুইটার দিকে নান্দাইল উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল ফকিরকে গ্রেপ্তার করে।

ওই মেয়ে জানায়, কলেজে যাওয়া আসার সময় ফয়সালের সাথে তার পরিচয় হয়। ঘটনার দিন সকালে ফয়সাল ফোন করে বলে, উপবৃত্তির ফরমে স্বাক্ষর দিতে হবে, তাড়াতাড়ি নান্দাইলের সরকারী শহীদ স্মৃতি আদর্শ কলেজে আসতে হবে। এমন কথা শুনে সরল বিশ্বাসে আমি বাবা-মাকে বলে কলেজের গেইটে গিয়ে তাকে ফোন করি। ফোন করলে আমাকে কলেজের পিছনে যেতে বলে। আমি কলেজের পিছনে যেতেই মুখ চেপে ধরে ফয়সাল। তার সহযোগী আলামিন পা ধরে রাখে আরেকজন ধর্ষণের ভিডিও করে।

এসময় চিৎকার করলে কলেজের পিয়ন আব্দুর রহিম আমার চিৎকার শুনে কাছে আসতে চাইলে তাকেও চাকু দেখিয়ে ভয় দেখালে তিনি সেখান থেকে পালিয়ে যান।

ধর্ষণের পর ফয়সাল হুমকি দিয়ে বলে কাউকে এই ঘটনা জানালে ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়া হবে। পরে সেখান থেকে বাড়িতে ফিরে মা-বাবাকে বিষয়টি জানালে পরদিন শনিবার (২৩ এপ্রিল) সকালে থানায় গিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ করি। 

জেলা পুলিশ সুপার মোহা. আহমার উজ্জামান বলেন, ওই মামলাটি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। ভিকটিমের ফরেনসিক পরীক্ষা করা হয়েছে। ধর্ষণের আলামত পেলে সেই অনুযায়ী অভিযোগপত্র দেয়া হবে। সেখানে থানা পুলিশের কোনো গাফিলতি আছে কিনা সেটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //