প্রেমের টানে মালয়েশিয়ান তরুণী এসেছেন গাজীপুরে। আর ভিনদেশী এই মেয়ের বিয়ে দেখতে বিভিন্ন এলাকার মানুষ ভিড় করছেন গাজীপুর মহানগরের ২১ নম্বর ওয়ার্ডের জোলারপাড়ার মৃত আবুল কাশেমের ছেলে মো. জাহাঙ্গীর আলমের বাড়িতে।
গতকাল শুক্রবার এলাকাবাসী ও পরিবারের পক্ষ থেকে আয়োজন করা হয় বিয়ের। কনের আবেদনের প্রেক্ষিতে স্থানীয় মসজিদে নিয়ে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতার কাজ সম্পন্ন করা হয়। দীর্ঘ ৭ বছরের প্রেমের সম্পর্ক বিয়েতে পরিণত হওয়ায় খুশি বর কনে দুই জনেই। দুই পরিবারের আলোচনার মাধ্যমে নিজ কর্মস্থলে যোগ দিবেন বলে জানিয়েছেন, মালয়েশিয়ান ওই নববধূ।
স্থানীয়রা জানায়, গাজীপুর মহানগরের ২১ ওয়ার্ডের জোলারপাড় এলাকার মৃত আব্দুল কাশেমের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম ২০১২ সালে মালয়েশিয়ার লিঙ্কন ইউনিভার্সিটিতে চাকরি পাওয়ার সুযোগে দেশ ছেড়ে পাড়ি জামান বিদেশে। একই ইউনিভার্সিটির স্টুডেন্ট কাউন্সিলর হিসেবে চাকরি করতেন মালয়েশিয়ান তরুণী নূর কারমিলা বিনতে হামিদ। প্রথমে দুইজনের মধ্যে গড়ে ওঠে বন্ধুত্ব, পরে একে অপরের সাথে প্রেমের সম্পর্কে জড়ায়। প্রায় ৪ বছর চুটিয়ে প্রেম করেন বাংলাদেশী যুবক জাহাঙ্গীর আলম ও মালয়েশিয়ান তরুণী নূর কারমিলা বিনতে হামিদ।কিন্তু জাহাঙ্গীরের বাবা অসুস্থ হওয়ার কারণে তাকে ফিরে আসতে হয় বাংলাদেশে। দেশে ফিরে করোনাভাইরাসের কারণে আটক পড়তে হয় জাহাঙ্গীরকে। অবশ্য ৪ মাস আগে তার বাবা মারা যান। কিন্তু দুইজনের মধ্যে যোগাযোগ অব্যাহত থাকায়, পাঁচদিন আগে বাংলাদেশে ছুটে আসেন মালয়েশিয়ান ওই তরুণী। পরে দুই পরিবারের সম্মতিতে শুক্রবার তাদের বিবাহ সম্পন্ন হয় স্থানীয় মসজিদে।
জাহাঙ্গীর আলমের বড় বোন ফেরদৌসী আক্তার জানান, দুই ভাই-বোনের মধ্যে জাহাঙ্গীর আলম ছোট। বাবা ৪ মাস আগে মারা গেছেন। তার পরিবারে এখন মা ও বড় বোন রয়েছেন। মালয়েশিয়ান মেয়ে চলে আসায় তার পরিবারের সকলের সাথে এবং প্রতিবেশীদের সাথে আলোচনার মাধ্যমে তাদের বিয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাদের বিয়েতে প্রতিবেশীসহ সকলেই খুশি। বাংলাদেশি রীতি মেনেই বিয়ের সকল আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা হয়েছে। বিয়ের দেন মোহর হিসেবে নির্ধারণ করা হয় ১০ হাজার রিঙ্গিত। দুই পরিবারের সাথে আলোচনার মাধ্যমেই দেনমোহর নির্ধারণ করা হয়েছে বলেও জানান, ফেরদৌসী আক্তার।
প্রতিবেশী আয়েশা বেগম জানান, বিদেশি মেয়ের বিয়ে দেখতে ভিড় করেন আশেপাশে এলাকার লোকজন। বিয়ের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিচ্ছেন প্রতিবেশীরাও। গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানসহ বিয়ের সব রকমের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। প্রতিদিনই আশপাশের এলাকার মানুষ বিদেশ থেকে আশা নববধূকে দেখতে আসছেন।
বর জাহাঙ্গীর আলম জানিয়েছেন, মালয়েশিয়ান রীতি ও ওই তরুণীর ইচ্ছে অনুযায়ী দুইজনের বিয়ে হয় স্থানীয় মসজিদে। ৭ বছরের প্রেমের সম্পর্ককে বিয়েতে রূপ নেয়ায় খুশি দুইজন। দাম্পত্য জীবন সুখের জন্য সকলের কাছে দোয়া চান তিনি। স্ত্রীর সাথে আলোচনার মাধ্যমে দুই দেশেই থাকবেন তিনি। মায়ের সাথে এবং স্ত্রী কারমিলা পূর্বের প্রতিষ্ঠানে চাকরিতে যোগদান করলে সেখানে থাকবেন তিনি। তবে, ব্যবসা চালিয়ে যেতে চান জাহাঙ্গীর আলম।
মালয়েশিয়ান ওই নববধূ নূর কারমিলা বিনতে হামিদ জানিয়েছেন, বর হিসেবে জাহাঙ্গীরকে পেয়ে খুশি তিনি। তিনি একজন ভালো মনের মানুষ। তার সাথে প্রায় ৭ বছরের বেশি সময় প্রেমের সম্পর্ক থেকে বিয়ের পিঁড়িতে বসেছেন।
এর আগে বাংলাদেশে এসে এবছরের ২৯ মে আমেরিকান যুবক রাইয়ান কফম্যান ভালবেসে বিয়ে করেন গাজীপুরের ভোগড়া এলাকা মেয়ে সাইদা ইসলামকে। ১১ জুলাই আমেরিকান তরুণী লিডিয়া এ লোজা বিয়ে করেন গাজীপুরে শ্রীপুরের ইমরানকে।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
© 2022 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh