কুড়িগ্রামে ২৫ গ্রামের ৩০ হাজার পরিবার পানিবন্দি

উজান থেকে নেমে আসা ভারতীয় পাহাড়ি ঢলে কুড়িগ্রামের রৌমারী ও চর রাজিবপুরে ২টি উপজেলার ২৫টি গ্রামের ৩০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়েছে। অপর দিকে কৃষকের বীজতলা, শাকসবজি ও রোপাআমন ধানসহ নানান প্রকার ফসল তলিয়ে গেছে। চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চল তলিয়ে যাওয়ায় গো-খাদ্যর তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।

আজ শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পানিবন্দি হয়েছে রৌমারী উপজেলার ফলুয়ারচর, পালেরচর, গোয়ালেরচর, ঠাকুরেরচর, বাইশপাড়া, কান্দাপাড়া, সুখেরবাতি, খেরুয়ারচর, পাখিউড়া, ধনারচর চরের গ্রাম, গুচ্ছগ্রাম ও রাজিবপুর উপজেলার চরসাজাই, ডাটিয়ারচর, কোদালকাটি, শংকর মাধবপুর, কোদালকাটি, বড়চর, নাওশালা, জালছিড়া, সাজাই মন্ডলপাড়াসহ ২৫টি গ্রাম। বন্যার পানি বৃদ্ধি হওয়ায় ব্রহ্মপুত্র নদী উপচে গিয়ে ওইসব এলাকা প্লাবিত হয়। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়ে ২৫টি গ্রামের প্রায় ৩০ হাজার পরিবার। ইতোমধ্যে ওইসব এলাকার রাস্তা তলিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ফলে মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌকা বা ভেলা দিয়ে পারাপার হচ্ছে। অনেক বাড়ির উঠানে পানি উঠায় রান্না করতে পারছেনা তারা। স্ত্রী সন্তান নিয়ে খেয়ে না খেয়ে দিনাতিপাত করছেন পরিবারগুলো।

কোদালকাটি গ্রামের শাহিদুল ইসলাম বলেন, নদীর পানির স্রোতে আমার বসতবাড়ি ভেঙ্গে গেছে। অন্যের একটু জায়গায় ছাপরা তোলে বসবাস করছি। আমরা কোন ত্রাণ পাইনি।


চরসাজাই গ্রামের রফিকুল ইসলাম বলেন, আমার বাড়িতে পানি উঠেছে। শিশুদের নিয়ে চরম বিপাকে আছি। চর রাজিবপুর উপজেলার নির্বাহী অফিসার তানভির আহমেদ বলেন, নদ-নদীর পানি বিপদসীমার নিচে রয়েছে। ফলে এখন পর্যন্ত মানুষের জানমালের উপর তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি। তবে নদ-নদীতে পানি এখনো বৃদ্ধি পাচ্ছে।  

রৌমারী উপজেলার ফলুয়ারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সবুর বলেন, বন্যার পানি বৃদ্ধি হওয়ায় আম্রা স্কুল মাঠে পানি উঠেছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসা যাওয়া করছে।

বন্দবেড় ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাদের সরকার বলেন, বন্যার পানিতে আমার ইউনিয়নের পশ্চিম দিকে বেশ কয়েকটি গ্রামে পানি উঠেছে। এভাবে পানি বৃদ্ধি থাকলে বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়বে। শনিবার ২ সেপ্টেম্বর প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস কার্যালয় থেকে কয়েকটি পরিবারকে কিছু শুকনা খাবার দেওয়া হয়েছে।

রৌমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় আক্রান্ত রোপাআমন ধান ৭৮০ হেক্টর, শাকসবজি ৪৬ হেক্টর ও বীজতলা ৮ হেক্টর তলিয়ে গেছে। পানি বৃদ্ধি হতে থাকলে ক্ষতির পরিমাণ আরো বাড়তে পাড়ে। 

রৌমারী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মেশকাতুর রহমান বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় চাউল ও শুকনা খাবার বিতরণ দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি এরকম থাকলে শুকনা খাবার বিতরণ চলমান থাকবে।

রৌমারী উপজেলার নির্বাহী অফিসার নাহিদ হাসান খান বলেন, ইতোমধ্যে বন্যাকবলিত এলাকায় চাউল ও শুকনা খাবার  বিতরণ চলছে। 

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2023 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //