ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নির্মাণাধীন জেলা মডেল মসজিদে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মুজাহিদ (১৮) নামের এক নির্মাণ শ্রমিক মারা গেছেন।
আজ সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকাল পৌনে ১১টার দিকে পৌরসভার সামনে নির্মাণাধীন জেলা মডেল মসজিদ প্রাঙ্গণে এই ঘটনা ঘটে। নিহত নির্মাণ শ্রমিক মুজাহিদ সরাইল উপজেলার উচালিয়া পাড়ার অলিউর রহমান।
এই ঘটনার জেলা সদর হাসপাতাল থেকে নিহতের মরদেহ সরিয়ে শহরের কুমারশীল মোড়ে দি নিউ ল্যাব এইড হাসপাতালে নিয়ে যায় ঠিকাদারের লোকজন। সেখানে বসেই তাৎক্ষণিক আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি তাজ মোহাম্মদ ইয়াছিনের নেতৃত্বে ৪ লাখ টাকায় বিষয়টি মীমাংসা করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। সেখানে তাজ মোহাম্মদ ইয়াছিন ছাড়াও পশ্চিম মেড্ডার বকুল নামের এক নেতাও ছিলেন বলে জানা গেছে। এসময় খবর পেয়ে যাওয়া কয়েকজন সাংবাদিককেও সংবাদ প্রকাশ করতে নিষেধ করা হয়।
তারা জানান, সরকারীভাবে দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় মডেল মসজিদ নির্মাণ করা হচ্ছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা মডেল মসজিদও নির্মাণের প্রায় শেষ দিকে। সেখানে দ্রুততার সাথেই কাজ চলছে। সোমবার সকালে মসজিদে কাজ করার সময় পাইপ দিয়ে পানি দিচ্ছিল শ্রমিক মুজাহিদ। এসময় নিচে পড়ে থাকা বৈদ্যুতিক তারে জড়িয়ে পড়ে মুজাহিদ। অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে ২৫ শয্যাবিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত শ্রমিকের মামী লিপি বেগম অভিযোগ করে বলেন, শুধু বিদ্যুৎস্পৃষ্টে একজন মানুষের শরীরের এই অবস্থা হতে পারে না। তারা কেউ এগিয়ে এসে মুজাহিদকে ধরেনি। তাদের গাফলতি ছিল।
এদিকে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মুজাহিদকে মৃত ঘোষণা করার পর লাশ কাউকে কিছু না বলে ময়নাতদন্ত না করে হাসপাতাল থেকে সরিয়ে নিয়ে গেছে।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের স্টাফরা জানান, অস্বাভাবিক মৃত্যুর ক্ষেত্রে, নিয়ম অনুযায়ী চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করার পর জরুরি বিভাগ থেকে পুলিশকে অবগত করে মরদেহ মর্গে পাঠানো হয় এবং মৃত্যু সনদ প্রদান করা হয়। কিন্তু বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মারা যাওয়া শ্রমিকের মরদেহটি গোপনে হাসপাতাল থেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
২৫০ শয্যাবিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গের ইনচার্জ আশরাফুল ইসলাম সুমন বলেন, জরুরি বিভাগ থেকে ফোন দেওয়া হয় একটি লাশ মর্গে নিয়ে যেতে। মাত্র ৫ মিনিটের ভেতরে মর্গ থেকে ট্রলি নিয়ে এসে দেখি জরুরি বিভাগে লাশ নেই। বিষয়টি আমি হাসপাতালের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবগত করেছি।
এই বিষয়ে হাসপাতালে খবর পেয়ে আসা ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এস.আই) আতিকুল ইসলাম জানান, বিদ্যুৎস্পৃষ্টে নির্মাণ শ্রমিক মারা যাওয়ার খবর পেয়ে এসেছি। হাসপাতাল থেকে বলা হয়েছে কাউকে কিছু না বলে মরদেহটি নিয়ে গেছে৷ মরদেহটি কোথায় আছে আমরা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
বিষয় : ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিদ্যুৎস্পৃষ্ট মৃত্যু
© 2023 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh