‘প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নিয়োগবিধি শিক্ষা ক্যাডারের অস্তিত্বের ওপর আঘাত’

ক্যাডার কম্পোজিশনের সুরক্ষা, পদোন্নতি, পদ সৃজন, স্কেল আপগ্রেডেশন ও আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসনসহ নানান দাবি আদায়ে রাঙ্গামাটিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি জেলা কমিটি।

আজ মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাঙ্গামাটি সরকারি কলেজের সম্মেলন কক্ষে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেছেন- রাঙ্গামাটি সরকারি কলেজের ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক এসএম আবুল হাশেম। শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন- কলেজের অধ্যক্ষ ও বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি জেলা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক তুষার কান্তি বড়ুয়া।

লিখিত বক্তব্যে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির নেতা এসএম আবুল হাশেম বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষা ক্যাডারের তফসিলভুক্ত পদ থেকে শিক্ষা ক্যাডার বহির্ভূতদের অপসারণের দাবি জানিয়ে আসলেও সেই দাবি মানা হয়নি। আমরা লিখিতভাবে আপত্তি জানাবার পরেও বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের তফসিলভুক্ত প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ৫১২টি পদ শিক্ষা ক্যাডারের তফসিল বহির্ভূত করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নিয়োগবিধি চূড়ান্ত করা হয়েছে; এটি সুস্পষ্টই শিক্ষা ক্যাডারের অস্তিত্বের ওপর আঘাত। এ ধরণের কর্মকাণ্ড সরকারের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার সামিল। শিক্ষা ক্যাডারকে অন্ধ রেখে এই বিধি করার এখতিয়ার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নেই।’

তিনি আরো বলেন, ‘শিক্ষা ক্যাডারের ১৬ হাজার কর্মকর্তা কাজ করে যাচ্ছে কিন্তু প্রাপ্য অধিকার ও সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। কোনো কারণ ছাড়াই পদোন্নতি বন্ধ আছে দুই বছর। বর্তমানে শিক্ষা ক্যাডারে পদোন্নতিযোগ্য কর্মকর্তার সংখ্যা ৭ হাজারের বেশি। এরমধ্যে অধ্যাপক পদে ১২০০, সহযোগী অধ্যাপক পদে ৩০০০, সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি যোগ্য আছেন প্রায় ৩০০০ জন শিক্ষক। এই পদোন্নতির জন্য সরকারের কোন অতিরিক্ত অর্থ প্রয়োজন নেই। ক্যাডার সার্ভিসে শূন্য পদ না থাকলেও পদোন্নতি দেওয়া যাবে না- এমন কোনো বিধান নেই। অথচ শিক্ষা ক্যাডারকে শূন্য পদের অজুহাতে পদোন্নতি বঞ্চিত রাখা হয়। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসনের নির্দেশ দিয়েছেন বারবার; কিন্তু সেই নির্দেশনা মানা হচ্ছে না।’

সংবাদ সম্মেলন থেকে জানানো হয়েছে- বর্তমানে সরকারি কলেজসহ শিক্ষা প্রশাসনে কর্মরত শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তার সংখ্যা ১৬ হাজার। শিক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি খাতে ১২ হাজার ৪৪৪টি পদ সৃজনের প্রস্তাব আটকে আছে দীর্ঘ ৯ বছর। এসময় বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির নেতৃবৃন্দ আগামী ২ অক্টোবর সারাদেশে একদিনের কর্মবিরতি পালন এবং শিক্ষা ক্যাডারদের ন্যায্য দাবি পূরণে দৃশ্যমান অগ্রগতি না হলে আগামী ১০, ১১ এবং ১২ অক্টোবর টানা তিনদিনের কর্মবিরতি পালন করা হবে ঘোষণা দেন।

লিখিত বক্তব্য পাঠ শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন- কলেজের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান রনজিত বিশ্বাস, একই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ সোহরাব হোসেন, রাঙ্গামাটি সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষক পরিষদ সম্পাদক রবিউল হোসাইন। সমাপনী বক্তব্য রাখেন- রাঙ্গামাটির সরকারি কলেজের পদার্থবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও কলেজ শিক্ষক পরিষদ সম্পাদক শান্তনু চাকমা।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2023 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //