ভোটের আগে গাইবান্ধায় অগোছালো জাপা

আতিকুর রহমান আতিক, গাইবান্ধা
প্রকাশ: ১০ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৯:১০

জাতীয় পার্টির গাইবান্ধা অফিস। ছবি: গাইবান্ধা প্রতিনিধি
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে গাইবান্ধার ৫টি সংসদীয় আসনে প্রার্থী দিয়েছে জাতীয় পার্টি। জাতীয় পার্টির রাজনীতির মাঠ দখলের খেলায় গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করা হয় এ জেলাকে। একসময় এ জেলা ছিল জাতীয় পার্টির ঘাটি। জেলার সবকটি আসনেই এমপি নির্বাচিত হয়েছিল জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা। তবে দীর্ঘদিন থেকে অগোছালো অবস্থায় রয়েছে জাতীয় পার্টির এ জেলার রাজনীতি। যার কারণে ক্ষোভ ও হতাশা ঘিরে ধরেছে নেতাকর্মীদের মাঝে।
গত ৫ বছর যাবত এ জেলায় পূনার্ঙ্গ কমিটি নেই তাদের। দীর্ঘ ১১ বছর পর সম্মেলন হয় গত ১৯ অক্টোবর। সম্মেলনে নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছিল।
নেতাকর্মীরা আশা করেছিলেন এই সম্মেলন গাইবান্ধা জেলার জাতীয় পার্টিকে সাংগঠনিকভাবে আরো শক্তিশালী করবে। তবে সম্মেলনের দীর্ঘদিন পার হলেও এখন পর্যন্ত কমিটি গঠন হয়নি। এ নিয়ে অনিশ্চয়তা ও চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে নেতাকর্মীদের মাঝে।
বর্তমানে নির্বাচনের মাঠে জেলা কমিটি না থাকার কারণে বড় ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। জেলা কমিটি না থাকায় এখন পর্যন্ত আসন ভিত্তিক মনিটরিং টিম গঠন করতে পারেনি তারা।
এদিকে সম্মেলনের পর দীর্ঘদিনেও কমিটি না হওয়ায় ক্ষুব্ধ ও হতাশ পদপ্রত্যাশীরা। বেশ কয়েকজন জাতীয় পার্টির জেলাল শীর্ষ পদপ্রত্যাশী নেতা জানান, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হয়েছে, জাতীয় পার্টিও এ জেলার সবকটি আসনে প্রার্থী দিয়েছে। নির্বাচনের আগেই কমিটি দিতে হবে। এতে ব্যর্থ হলে দলীয় শৃঙ্খলা ভেঙে পড়ার শঙ্কা রয়েছে। কারণ নির্বাচনে কার নেতৃত্বে কর্মী-সমর্থকরা কাজ করবেন তা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্ব সৃষ্টি হতে পারে। নেতৃত্ব দেওয়াকে কেন্দ্র করেও নেতায় নেতায় বিভক্তি দেখা দেবে। কারণ পদপ্রত্যাশী সবাই মনে করছেন তিনিই শীর্ষ পদ পাবেন। যার প্রভাব পুরোপুরি নির্বাচনের মাঠে পড়তে পারে।
উপজেলা ও জেলার সাবেক নেতাকর্মীদের দাবি গাইবান্ধার ৫টি আসন জাতীয় পার্টির দখলে আনতে হলে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এ কমিটি ঘোষণা করতে হবে। তবে নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত হবে, আর নেতাকর্মীরা চাঙ্গা হলে এর বড় প্রভাব পড়বে নির্বাচনের মাঠে।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মো. মাসরুর মওলা বলেন, আমরা অনেক আগেই খসড়া কমিটি প্রস্তুত করেছি। শুধু ঘোষণা দেওয়া বাকি, আশা করছি দ্রুতই কমিটি ঘোষণা করা হবে।
এ বিষয়ে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. সরওয়ার হোসেন শাহীন বলেন, নির্বাচনের আগে কমিটি গঠন নিয়ে স্থানীয় নেতাকর্মীরা আমাদেরকে চাপ দিচ্ছেন। ভোটের আগে কমিটি গঠন হলে নেতাকর্মীদের মাঝে আরো গতি আসবে। সংগঠনও আরো সুসংগঠিত হবে। কমিটি দ্রুত ঘোষণা দেওয়ার জন্য দলের মাননীয় চেয়ারম্যান ও মহাসচিবের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করেছি আশা করছি দ্রুতই সিদ্ধান্ত নেবেন।
এদিকে জেলা সম্মেলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এমন বেশ কয়েকজন দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা বলেন, কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান, মহাসচিব ও অন্যান্য নেতাদের উপস্থিতিতে জেলা সম্মেলন জাঁকজকমপূর্ণ হয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয়, সম্মেলনের পর এখন পর্যন্ত কমিটি না হওয়ায় আমরা হতাশ হয়েছি।