ইউপিডিএফের দাবি: পাহাড়ে একবছরে ২৫ হত্যা

ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) ২০২৩ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ওপর একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে ঠ্যাঙাড়ে বাহিনী (ইউপিডিএফ-গণতান্ত্রিক), জেএসএস ও অজ্ঞাত দুর্বৃত্তদের হাতে বিচারবহির্ভুত হত্যার শিকার হয়েছেন ২৫ জন; গ্রেপ্তারের শিকার হয়েছেন ৪৯ জন; শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ২১ জন; অপহৃত হয়েছেন ৪৩ জন; যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছেন ২৩ জন নারী ও শিশু। সংগঠনটির মানবাধিকার পরিবীক্ষণ সেলের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই তথ্য ওঠে এসেছে বলে দাবি করেছে ইউপিডিএফ।

আজ বুধবার (১০ জানুয়ারি) এই প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়।

প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ২০২৩ সালে ১৪ জন গ্রামবাসীর বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়েছে, ১৩টি স্থানে ভূমি বেদখল অথবা বেদখলের চেষ্টা হয়েছে। পাহাড়িদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে ৭টি; ধর্মীয় পরিহানির ঘটনা ঘটেছে ৩টি; হয়রানির শিকার হয়েছেন পাঁচজন। গণতান্ত্রিক অধিকারে হস্তক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে ৯টি; রাষ্ট্রীয়বাহিনীর বেপরোয়া গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ৬টি, যাতে চারজন নারী-পুরুষ গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন।

রিপোর্টে বলা হয়েছে, পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতির বর্তমান বিশেষত্ব হচ্ছে নিপীড়িত—নির্যাতিত অধিকারহারা জুম্ম জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার গণতান্ত্রিক আন্দোলন দমনের লক্ষ্যে নব্যমুখোশ বাহিনী, মগপার্টি, সংস্কারবাদীর (জেএসএস-এমএন লারমা) মতো ঠ্যাঙাড়ে বাহিনীর ব্যবহার। এদের মাধ্যমে আন্দোলনের নেতা-কর্মী ও তাদের সমর্থকদের খুন, গুম, অপহরণ করে পুরো পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকা জুড়ে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করা হয়েছে। এই বাহিনীগুলো ছাড়াও জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) সন্তু গ্রুপও প্রায় সময় সাধারণ জনগণের মানবাধিকার লঙ্ঘন করে থাকে।

জেএসএসের (সন্তু লারমা) মানবাধিকার লঙ্ঘনের তথ্য তুলে ধরে রিপোর্টে বলা হয়, জেএসএস সন্তু গ্রুপও মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত। গত বছর তারা ইউপিডিএফ’র এক সদস্যকে হত্যা, বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া এক ছাত্রীসহ পাঁচজনকে অপহরণ, চারজনকে শারীরিক নির্যাতন ও রাঙ্গামাটিতে সমাবেশে বাধা প্রদান করে। রিপোর্টে ইউপিডিএফ-গণতান্ত্রিকের বিষয়ে বলা হয়, মদতপুষ্ট ঠ্যাঙাড়ে নব্যমুখোশ বাহিনী ও অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা ইউপিডিএফের পাঁচ নেতা-কর্মীসহ ২২ জনকে হত্যা ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের নেতা-কর্মীসহ ৩৮ জনকে অপহরণ করে এবং ছয়জনের ওপর শারীরিক নির্যাতন চালায়। এছাড়া তারা ৪টি ছিনতাই ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিল এবং ইউপিডিএফ কর্মীদের ওপর একটি হামলাসহ (হতাহত হয়নি) কয়েকটি স্থানে সশস্ত্র অপতৎপরতা চালায়। বরাবরের মতো প্রশাসন এসব ঠ্যাঙাড়ে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আইনগত কোন পদক্ষেপ নেয়নি।

ইউপিডিএফের প্রচার ও প্রকাশনা বিভাগের নিরন চাকমার সই করা বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পার্বত্য চট্টগ্রামের সীমান্তবর্তী সমতলের চট্টগ্রাম জেলার রাউজানে আগস্ট মাসে একটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে পাহাড়িদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক প্রচার চালানো হয়। এছাড়া এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার সন্দেহে আটক হওয়া এক পাহাড়ি যুবককে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে হত্যা করা হয় ও আরো কয়েকজন পাহাড়ি যুবককে পুলিশের সহায়তায় আটক করে শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2025 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh