
শেরপুরে জেকে বসেছে শীত। ছবি: সাম্প্রতিক দেশকাল
ভারতের মেঘালয় রাজ্যের সীমান্তঘেষা গারো পাহাড়ের শেরপুর জেলায় তীব্র শৈত প্রবাহে জেকে বসেছে শীত। ঘন কুয়াশা আর কনকনে হিমেল হাওয়ায় জনজীবনে নেমে এসেছে স্থবিরতা। উত্তরের হিম বায়ুর প্রভাবে হার কাঁপানো শীতে কাজে যোগদান করতে পরেছেন না শ্রমিকরা।
তীব্র শীতে কষ্ট বেড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষের। শীতবস্ত্রের অভাবে কষ্টে রয়েছেন। ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কম্বল বিতরণ করা হলেও তা পর্যাপ্ত নয় বলে শীতার্তরা জানান।
গত ৫ দিন ধরে জেলার আকাশে সূর্যের দেখা মিলছে না। দুপুরের পরে দুই এক ঘণ্টা হালকা রোদ উঠলেও সাথে বাইতে থাকে হিমেল হাওয়া। বর্তমানে জেলার সীমান্তবর্তী পাহাড়ি জনপদের নালিতাবাড়ি, ঝিনাইগাতি ও শ্রীবর্দী উপজেলার গ্রামগুলোতে শীতের তীব্রতা বেশি অনুভূত হচ্ছে। দিনের বেলায় তাপমাত্রা থাকে ১২ থেকে ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর রাতের বেলায় ৮ থেকে ১০ ডিগ্রিতে নেমে আসে। তীব্র শীতের কারণে এসব অঞ্চলের বৃদ্ধ ও শিশুরা ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। শীতের কবল থেকে রেহাই পাচ্ছে না গবাদি পশু। কৃষকরা তাদের পশুদের চটের বস্তা গায়ে জড়িয়ে শীত নিবারনের চেষ্টা করছেন। কনকনে শীতে চলমান বোরো আবাদে ধান লাগাতে পারছেন না কৃষকরা। একইসাথে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে কৃষকের বীজতলা।
এবিষয়ে জেলা কৃষি বিভাগের উপ পরিচালক ড. সুকল্প দাস জানান, শীতের কারণে বীজতলার ক্ষতির সম্ভাবনা থাকলেও ক্ষতি রোধে কৃষকদের সে বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। এছাড়া ঠান্ডার কারণে জমি তৈরি করে বোরো চারা রোপন কিছুটা ধির গতিতে হচ্ছে। তবে আজ রবিবার (১৪ জানুয়ারি) পর্যন্ত জেলায় বোরো চারা রোপন করা হয়েছে ৪ হাজার ৮৭৬ হেক্টর জমিতে। এবার আবাদের লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে ৯১ হাজার ৯৪০ হেক্টর জমিতে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক আব্দুল্লাহ আল খায়রুম জানান, এবছর শীতের তীব্রতা ক্রমেই বাড়ছে। সর্বশেষ আমাদের শেরপুরে তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রীতে নেমেছে। এতে অসচ্ছল মানুষের শীত জনিত কষ্ট বেড়েছে। এই শীতার্তদের শীত নিবারনের জন্য আমরা সরকার থেকে এ পর্যন্ত ৩১ হাজার ৬৫০ পিছ কম্বল বরাদ্দ পেয়ে ইতিমধ্যে বিভিন্ন উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে বিতরণ কাজ চলমান রয়েছে। এছাড়া সরকারের পাশাপাশি বিত্তবানদেরও শীতার্ত মানুষের পাশে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান জেলা প্রশাসক।