বরিশালে ছুরিকাঘাতে হত্যার দায়ে যুবকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

বরিশাল প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৬ মে ২০২৪, ২০:০১

প্রতীকী ছবি
বরিশালের বাকেরগঞ্জে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে যুবককে ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনায় এক আসামিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো দুই মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (১৬ মে) বরিশাল জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক টিএম মুসা এই দণ্ডাদেশ দিয়েছেন। তবে অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় পাঁচ অভিযুক্তকে মামলা থেকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. সবুজ এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, ‘রায় ঘোষণার সময় দণ্ডিত আসামি আদালতে অনুপস্থিত ছিলেন। তাকে গ্রেপ্তারে পরোয়ানা জারির আদেশ দিয়েছেন আদালত।
দণ্ডপ্রাপ্ত যুবক মো. সাইফুল ইসলাম মুন্না (২৭) বাকেরগঞ্জ উপজেলার কবাই ইউনিয়নের লক্ষ্মীপাশা গ্রামের মো. রাজ্জাক হাওলাদারের ছেলে।
আদালতের বরাত দিয়ে বেঞ্চ সহকারী মো. সবুজ জানিয়েছেন, ‘২০১৫ সালের ২৩ জুলাই বিকেল ৫টার দিকে লক্ষ্মীপাশা মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় উত্তম চন্দ্র খরাতির ছেলে উজ্জল চন্দ্র খরাতির সাথে একই গ্রামের সাইফুল ইসলাম মুন্নার সাথে কথা কাটাকাটি এবং হাতাহাতি হয়। পরে সেখানেই বিষয়টি মীমাংসা করেন মাঠে উপস্থিত লোকেরা।
এর জের ধরে একইদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে লক্ষ্মীপুর বাজারের উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হয় উজ্জল খরাতী। পথিমধ্যে লক্ষ্মীপুর জামে মসজিদের সামনে পূর্বে থেকে ওৎ পেতে থাকা সাইফুল ইসলাম মুন্না ও তার সহযোগিতা উজ্জলের পিঠে এলোপাথাড়ি ছুরিকাঘাত করে। এতে সে রক্তাক্ত জখম হলে মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে বাকেরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে ওই রাতেই চিকিৎসকদের পরামর্শে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৫ জুলাই রাত সোয়া পৌনে চারটার দিকে উজ্জলের মৃত্যু হয়।
এই ঘটনায় উজ্জলের বাবা উত্তম চন্দ্র খরাতী বাদী হয়ে বাকেরগঞ্জ থানায় ৬ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরো ৪-৫ জনকে অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের করেন। এতে অভিযুক্ত করা হয় একই গ্রামের সাইফুল ইসলাম মুন্না, মো. বশির সরদার, জসিম সরদার, জলিল সরদার, অলিল সরদার ও নাসির সরদার। এর প্রেক্ষিতে একই বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর মামলার প্রধান অভিযুক্ত সাইফুল ইসলাম মুন্নাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ। পরে জামিনে মুক্ত হন তিনি।
এদিকে একই বছরের ২ ডিসেম্বর মামলার প্রধান অভিযুক্ত মো. সাইফুল ইসলাম মুন্নাকে একমাত্র অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা, বাকেরগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মঞ্জুর তালুকদার। আদালত সাক্ষগ্রহণ শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সাইফুল ইসলামকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন।