Logo
×

Follow Us

জেলার খবর

জেলের জালে মাছের ‘আকাল’

Icon

নাসিম আনসারি, ঝিনাইদহ

প্রকাশ: ২৯ মে ২০২৪, ২০:০৩

জেলের জালে মাছের ‘আকাল’

শৈলকুপার কুমার নদ। ছবি: ঝিনাইদহ প্রতিনিধি

ঝিনাইদহের শৈলকুপার কুমার নদে পানি নেই। মাছের দেখা মিলছে না জেলের জালে। নদের পাড়ে জেলেদের অলস সময় কাটছে। হতাশ জেলেদের কেউ কেউ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ছেঁড়া-ফাটা জাল মেরামত করছেন। কেউবা জাল গুটিয়ে স্তূপ দিয়ে রাখছেন। আবার কেউ নৌকা বা ডিঙি সংস্কারে ব্যস্ত।

মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, নদের নাব্যতা কমেছে। পানি না থাকায় স্রোত নেই। চর জেগে ওঠায় মাছের দেখা মিলছে না। তবে জেলেরা আশা করছেন, শিগগিরই আবার নদে পানি বাড়বে, মাছের দেখাও মিলবে।

এমন অবস্থায় বাজারগুলোতে চাষের মাছ ছাড়া অন্য মাছের দেখা মেলা ভার। শেষ ভরসা পুকুর ও হাওড়-বাঁওড়ে চাষ করা পাঙ্গাশ আর হাইব্রিড তেলাপিয়া। তবে কুমার নদে মাছের সংকট দেখা দেওয়ার পেছনে রয়েছে অসাধু জেলেদের হাত। ‘চায়না দুয়ারি’ নামের সূক্ষ্ম জালের ফাঁদে পড়ে কুমার নদ হয়েছে মাছশূন্য। শুধু মাছই না, কোন জলজ প্রাণীও রক্ষা পায় না এ জাল থেকে।

ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়নের দামুকদিয়া এলাকায় দেখা যায়, নদ শুকিয়ে নালায় পরিণত হয়েছে। নদের বুক হয়েছে চাষের জমি আর গরু-ছাগলের চারণভূমি।

নদের পাড়ে বসে জেলে চঞ্চল ছেঁড়া জাল মেরামত করছেন। তিনি বলেন, ‘আগে কুমার নদে প্রচুর মাছ ছিল। এই মাছ ধরে, বাজারে বিক্রি করে আমরা সংসার চালাতাম। কিন্তু এখন আমরা সংসার চালাতে পারছি না। কারণ কুমার নদে এখন আর মাছ পাই না। ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া করাতেও কষ্ট হচ্ছে। অসুখ-বিসুখ নিয়েই আছি। কুমার নদের পানি এমনভাবে শুকিয়েছে যে কোথাও কোথাও হাঁটুপানিতে ঠেকেছে।’

জেলে আব্বাস বলেন, ‘নদে পানি থাকলে মাছের আকাল হয়না, সারাবছরই কমবেশি মাছ পাওয়া যায়। তবে এবছর পানি এমনভাবে শুকিয়েছে, তাতে পায়ে হেটে কুমার নদ পার হওয়া যাচ্ছে। জালে তো মাছের দেখা-ই নেই। তাই জাল নদ থেকে তুলে বাড়িতে রেখে দিয়েছি। যদি পানি বাড়ে আর মাছের দেখা মেলে তবে নদে নামাবো জাল। নদের যে অবস্থা তাতে খনন না করলে আর মাছের দেখা মিলবে না। খুবই অভাব-অনটনে দিনাতিপাত করছি। না খেয়ে মরা লাগবে।’

জেলে পথিক শেখ বলেন, ‘আগে প্রতিদিন ২/৩ কেজি দেশী মাছ পেয়েছি। তাতে সংসার খুবই ভাল চলেছে। কোন অভাব হয়নি। কিন্তু এখন পরিবার নিয়ে অনেক সমস্যায় আছি।’

কুমার নদে মাছ সংকটের ব্যাপারে শৈলকুপা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, ‘কুমার নদে পানি সংকট তো আছেই। আবার অসাধু জেলেরা ‘চায়না দুয়ারি’ জাল দিয়ে অবাধে মাছ ধরার কারণে নদে মাছের সংকট দেখা দিয়েছে। চলতি মাসেও কয়েকবার অভিযান চালিয়ে এই জাল জব্দ করে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। অভিযান অব্যাহত থাকবে এবং দেশীয় মাছ রক্ষার্থে যথাযথ ভূমিকা পালন করা হবে।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫