ইউপি চেয়ারম্যান ও স্ত্রীর পরকীয়ার জেরে বাড়ি ছাড়া স্বামী

পঞ্চগড় প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১ জুন ২০২৪, ১৫:৪৮

পঞ্চগড় জেলার মানচিত্র
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে ইউপি চেয়ারম্যান ও সাবেক নারী ইউপি সদস্যের মধ্যে পরকীয়া সম্পর্কের জেরে বাড়ি ছাড়া স্বামী। এমন অভিযোগ এনে ২৩ মে দেবীগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ করেন আবু সাঈদ নামে এক ব্যক্তি। আবু সাঈদ পামুলী ইউনিয়নের কাঁঠালতলী এলাকার হাবিবুর রহমানের ছেলে।
অভিযোগের তীর উপজেলার পামুলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মনি ভূষণ রায় ও একই ইউনিয়নের সাবেক নারী ইউপি সদস্য রাশেদা বেগমের দিকে। পরকীয়ার সম্পর্কে জড়িয়ে রাশেদা বেগম এখন ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা বলে অভিযোগ করেন তার স্বামী আবু সাঈদ।
আবু সাঈদ লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন ২০১৭ সালে তিনি ওমানে যান। সেখানে চার বছর অবস্থানকালীন সময়ে দেশে স্ত্রীর ব্যাংক একাউন্টে টাকা পাঠাতেন তিনি। কিন্তু এরমধ্যে প্রতিবেশীদের মাধ্যমে জানতে পারেন৷ চেয়ারম্যান দিনে ও রাতে বিভিন্ন সময়ে সময় কাটাতে আসতেন রাশেদার বাসায়। শুধু তাই নয়, স্বামী না থাকার সুযোগে রাশেদা চেয়ারম্যানের সাথে শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন বলে অভিযোগ করেন আবু সাঈদ।
বিষয়টি জানার পর সাঈদ ২০২১ সালে দেশে ফিরেন। দেশে এসে তিনি বিদেশ থেকে প্রেরিত অর্থ ও পরকীয়ার সম্পর্কের বিষয়ে স্ত্রী রাশেদাকে প্রশ্ন করলে তিনি সম্পর্কের বিষয়টি স্বীকার করে ক্ষমা যান। সাঈদ প্রথমবার শুধরানোর সুযোগ দেন স্ত্রীকে। যদিও চার বছরে বিদেশ থেকে প্রেরিত টাকার সঠিক হিসেব দিতে পারেননি।
এরপর চাকরীর উদ্দেশ্যে ঢাকায় চলে যান সাঈদ। সেখানে কাজের ব্যস্ততার জন্য ৮-১০ মাস পরপর বাসায় আসতেন। ঢাকায় অবস্থানকালীন সময়ে গত সাত মাস আগে মণি ভূষণ রাশেদাকে নিয়ে ভারতে যান বলে জানতে পারেন। বিষয়টি নিয়ে পরে চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলে রাশেদার সাথে সম্পর্ক না রাখার ব্যাপারে অনুরোধ জানিয়ে ঢাকায় ফিরে যান সাঈদ। তবে এতেও কাজ হয়নি। বরং তাদের পরকীয়ার সম্পর্ক এখনো টিকে আছে।
গত ২০ মে সাঈদ ঢাকা থেকে বাড়িতে এলে তাকে আর বাড়িতে প্রবেশ করতে দেননি রাশেদা। উলটো চেয়ারম্যানকে ফোনে বিষয়টি জানালে চেয়ারম্যান নিরাপত্তার জন্য জগন্নাথ রায় নামে একজন গ্রাম পুলিশকে সার্বক্ষণিক সেখানে নিযুক্ত করেন।
আবু সাঈদ বলেন, এলাকার সবাই চেয়ারম্যান আর আমার স্ত্রীর পরকীয়ার সম্পর্কের ব্যাপারে বলবে। আমার রক্ত পানি করা পরিশ্রমের টাকায় আমার স্ত্রী আমার নামে জমি না কিনে নিজের নামে চার বিঘা জমি কিনেছে।
অভিযোগের বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান মণি ভূষণ রায় বলেন, সাবেক ইউপি সদস্য ছিল রাশেদা বেগম। এইজন্য প্রয়োজনে মাঝে মাঝে যাওয়া হতো তবে গত ৬ মাস থেকে যাইনি।
রাশেদা বেগম বলেন, সংসারে একটু কলহ হতেই পারে। আমার স্বামী অন্যের কথায় এইসব করছেন। আর বসত ভিটা আমি আমার টাকায় কিনেছি। সুদের ব্যবসা এবং ভাই-বোনদের কাছ থেকে এই টাকা এসেছে বলে জানান রাশেদা। বাসায় চেয়ারম্যানের আসা-যাওয়ার বিষয়টিও তিনি অস্বীকার করেন।
দেবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ সরকার ইফতেখারুল মোকাদ্দেম অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।