
মাদ্রাসার খেলার মাঠে বালু স্তূপ। ছবি: ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
নতুন প্রজন্মকে মাঠমুখী করতে বর্তমান সরকার স্কুল পর্যায় থেকে শুরু করে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু খেলার মাঠই যখন দখল হয়ে যায় তখন শিশু-কিশোর শিক্ষার্থীরা খেলবে কোথায়? এমনই প্রশ্ন উপজেলার খামারমুন্দিয়া গ্রামের সচেতন মহলের। ‘‘ক্রীড়াই শক্তি ক্রীড়াই বল-সুস্থ দেহ সুন্দর মন’’-এই প্রবাদটি যেন ভেস্তে যেতে বসেছে ওই গ্রামে।
সরেজমিনে যেয়ে দেখা যায়, ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার রায়গ্রাম ইউনিয়নের খামারমুন্দিয়া গাজেম আলী দাখিল মাদ্রাসার খেলার মাঠটিতে বালু স্তূপ করে দখল করে রাখা হয়েছে। ফলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও এলাকার শিশু কিশোররা খেলাধুলার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রায়গ্রাম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলী হোসেন অপু সম্প্রতি নিজ ইউনিয়নের একটি রাস্তার ঠিকাদারি কাজ করছেন। ওই রাস্তা নির্মাণে ব্যবহার করা বালু তিনি সংশ্লিষ্ট রাস্তায় না ফেলে রাতের আঁধারে মাদ্রাসার মাঠে স্তূপ করে রাখেন। মাদ্রাসাটির পরিচালনা পরিষদের সদস্য এবং প্রতিষ্ঠান প্রধান বালু স্তূপ করে রাখার ব্যাপারে কিছুই জানেন না বলে জানিয়েছেন। মাদ্রাসাটির শিক্ষার্থীরা স্কুল চলাকালীন সময় ক্লাস না থাকলে মাঠে খেলাধুলা করে থাকে। আবার এলাকার স্থানীয় কিশোর ও যুবক ছেলেরা নিয়মিত ফুটবল খেলে থাকে মাঠটিতে। দীর্ঘদিন ধরে বালু স্তূপ করে রাখাই কেউই আর মাঠটিতে খেলাধুলা করতে পারছে না। আবার বাতাসে বালু উড়ে অফিস ও শ্রেণীকক্ষের পরিবেশ নষ্ট করছে। একই সাথে বাতাসে উড়ে আসা বালি শিক্ষার্থীদের শরীরেও লাগছে।
মাদ্রাসাটিতে যেয়ে দেখা যায়, দৃষ্টিনন্দন নতুন চারতলা ভবনের সামনে তথা প্রধান ফটকের সামনে বিশাল বালির স্তূপ করে রাখা হয়েছে। মাদ্রাসা মাঠে বালু নামাতে আসা বালি বোঝায় গাড়ির চাকায় মাঠটির অনেক জায়গার মাটি নিচু হয়ে গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যক্তি জানান, খেলার মাঠে এভাবে বালু স্তূপ করে রাখলে ছেলেপেলেরা খেলবে কোথায়? ইউপি চেয়ারম্যান তার প্রভাব খাটিয়েই এই কাজ করছেন।
এ ব্যাপারে খামারমুন্দিয়া গাজেম আলী দাখিল মাদ্রাসার সুপারিন্টেনডেন্ট রবিউল ইসলাম বলেন, হঠাৎ করে একদিন মাদ্রাসায় যেয়ে দেখি মাঠে বালুর স্তূপ। খোঁজ নিয়ে জানতে পারলাম ইউপি চেয়ারম্যান আলী হোসেন অপু বালু রেখেছেন। এ ব্যাপারে কথা বলতে তার মোবাইলে যোগাযোগ করলে তিনি আমাকে জানান, বৃষ্টির কারণে ২/৩ দিনের জন্য রেখেছি। দ্রুত সরিয়ে নেব। এতো দিন হয়ে গেলো অথচ আজ অব্ধি তিনি বালু মাদ্রাসা মাঠ থেকে সরাননি। বালু রাখার কারণে শিক্ষার্থীরা মাঠে খেলাধুলা করতে পারছে না। আমরা খুব সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি। দ্রুত বালু অপসারণের দাবি জানাচ্ছি।
ঝিনাইদহ জেলা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা নাজমা সামাওয়াত বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের খেলার মাঠ দখলের কোন নিয়ম নেই। ওই প্রতিষ্ঠানের খেলার মাঠে বালু ফেলে কেনো দখল করে রাখা হয়েছে তা খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।