পঞ্চগড়ে কৃষকলীগ নেতার গ্রেপ্তারে এলাকায় ক্ষোভ

পঞ্চগড় প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৪, ১১:২১

ফাইল ছবি
পঞ্চগড়ে সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য ও জেলা কৃষকলীগের সদস্য হারুন অর রশিদকে গ্রেপ্তারে এলাকায় ক্ষোভ বিরাজ করছে। স্থানীয়রা দাবি করেছেন, ভিত্তিহীন অভিযোগে ও পুলিশের কিছু দুর্নীতীবাজ অফিসারের যোগসাজসে তাকে আটক করা হয়েছে।
জানা গেছে, হারুন অর রশিদকে প্রধান আসামী করে আরো তিনজনের নাম উল্লেখ ও ৪ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে আদালতে মামলা দায়ের করেন সোহেল রানা নামে এক ব্যক্তি।
এ বিষয়ে পুলিশের ভাষ্য, তারা আদালতের নির্দেশে তদন্ত করেই আসামীকে গ্রেপ্তার করেছেন।
আদালতে দায়েরকৃত অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত ৬ জুন অভিযোগকারী সোহেল রানার ট্রাক্টরে করে গড়েয়া থেকে ২৪৫ বস্তা চাল নিয়ে আসছিলেন চালক মাসুদ রানা। দুপুর আনুমানিক একটা থেকে দেড়টার দিকে ট্রাক্টরটি নতুন হাট-গড়েয়া সড়কের পার্শ্ববর্তী গ্রামীণ ফোন টাওয়ারের সামনে আসার পর হারুন অর রশিদসহ ৭ জন ট্রাক্টরটিকে আটকিয়ে চালককে এলোপাতাড়ি মারধর করতে থাকেন। এরপর চালকের গলায়, পিঠে, বুকে ড্রেগার ধরে তার হাত থেকে ট্রাক্টরের চাবি কেড়ে নেওয়া হয়। পরে চালের বস্তাসহ ট্রাক্টরটি নিয়ে সেখান থেকে অভিযুক্তরা চলে যান বলে মামলার নথিতে উল্লেখ করা হয়।
মামলার এজারের উল্লেখ করা ঘটনার প্রায় এক মাস পর গত ১ জুলাই আদালতে অভিযোগ দায়ের করেন সোহেল রানা। পরে বিজ্ঞ বিচারক মামলাটি দেবীগঞ্জ থানার ওসিকে এজাহার হিসেবে গ্রহণ করার এবং তিন কার্যদিবসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
আদালতের নির্দেশের পর ওসি মামলাটি রেকর্ড করেন এবং এসআই মাসুদ মিয়াকে তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে নিযুক্ত করেন। সেই মামলায় গত বুধবার (৩ জুন) হারুন অর রশিদকে তার বাসা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এদিকে হারুন অর রশিদকে আটকের ঘটনাকে সাজানো নাটক বলে অভিহিত করেছেন স্থানীয়রা। তারা বলছেন, যে ঘটনায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, সেই ঘটনা ঘটেইনি।
নতুন হাট বাজারের গ্রামীন ফোন টাওয়ার সংলগ্ন গোপাল নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, সকাল ৯টায় দোকান খুলে রাতে বাসা যাই। এমন কোন ঘটনা ঘটলে অবশ্যই চোখে পড়তো।
বাজারের কৃষ্ণ নামে এক সাইকেল মেকানিক বলেন, ২৫ বছর ধরে এখানে দোকান আছে আমার। কখনই এমন কোন ঘটনার কথা শুনিনি।
নতুন হাটের বাসিন্দা রশিদুল ইসলাম বলেন, আমরা সব সময় হাটে চলাফেরা করি। এমন কোন ঘটনা আজ পর্যন্ত হয়নি।
এইদিকে পঞ্চগড় জেলা ট্রাক্টর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম বলেন, আমাদের কোন শ্রমিকের উপর হামলা হলে আমাদের কাছে অভিযোগ দেয় ভুক্তভোগী। এই ঘটনায় কেউ আমাদের কাছে অভিযোগ দেয়নি। আমাদের কানেও এমন ঘটনা আসেনি। নতুন হাটে আমাদের শাখা অফিস আছে। ঘটনা ঘটলে অবশ্যই শাখা অফিসে খবর যেত।
অন্যদিকে এ বিষয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা মাসুদ মিয়া বলেন, স্বাক্ষীদের সাথে কথা হয়েছে। তদন্তে সত্যতা পেয়েছি আসামী গ্রেপ্তার করেছি। এই বিষয়ে ওসি কথা বলবেন।
দেবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ সরকার ইফতেখারুল মোকাদ্দেমকে এ বিষয়ে ফোন দিলে তিনি বলেন, তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত করেই গ্রেফতার করেছেন। সাক্ষাতে আসেন কথা বলবো।