উখিয়া ক্যাম্পে ৫ আরসা সন্ত্রাসী গ্রেপ্তার, অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার
 
													কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১১ জুলাই ২০২৪, ২২:০৬
 
					৫ জন আরসা সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। ছবি: কক্সবাজার প্রতিনিধি
কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার মোছারখোলা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অভিযান পরিচালনা করে ৫ জন আরসা সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। এসময় বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়।
আজ বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) ভোর রাতে ১৫নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মোছারখোলা এলাকায় এই অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।
গ্রেপ্তাররা হলো- উখিয়া ক্যাম্প-১৫ এর বাসিন্দা মৃত আব্দুল মোতালেব এর ছেলে মোঃ নেছার (৩০), একই ক্যাম্পের আব্দুল জব্বারের ছেলে রবি আলম (১৮), মো. শাকের আহমেদ এর ছেলে মো. আবুল কালাম (২৮), বাশার এর ছেলে মো. আইয়ুব (২২) এবং উখিয়ার স্থানীয় বাসিন্দা আব্দু রহমানের ছেলে আবুল হোসেন (২০)।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাব -১৫ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও সিনিয়র সহকারী পরিচালক ( আইন ও গণমাধ্যম) মো. আবুল কালাম চৌধুরী।
তিনি বলেন, র্যাব-১৫ গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১৫ এ সন্ত্রাসী সংগঠন আরসার একদল সদস্য বিপুল পরিমাণ অস্ত্রসহ ক্যাম্পে নাশকতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে অবস্থান করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-১৫ এর একটি চৌকস আভিযানিক দল ১১ জুলাই ভোরে ১৫নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মোছারখোলা নামক স্থানে একটি অভিযান পরিচালনা করে। উক্ত অভিযানে র্যাবের আভিযানিক দল কর্তৃক সন্ত্রাসী সংগঠন আরসার ৫ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার এবং ৬টি আগ্নেয়াস্ত্র ও বেশ কিছু বিভিন্ন অস্ত্রের অ্যামুনিশন জব্দ করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, ইউনুস মাঝি, মৌলভী ইব্রাহিম ও আরাফাতের নেতৃত্বে ২৫-৩০ জনের আরসার একটি গ্রুপ ক্যাম্প-১৫ এ অবস্থান করে। তারা উখিয়া ও হ্নীলার পাহাড়ী এলাকায় স্থানীয় কৃষকসহ নিরীহ লোকদের অপহরণপূর্বক মোটা অংকের টাকা আদায় করে থাকে। যে সকল স্থানীয় কৃষক পাহাড়ী এলাকায় কৃষিক্ষেতে কাজ করতে বা গরু চড়াতে অথবা বনে কাঠ সংগ্রহ করতে যায় ওই সন্ত্রাসী গোষ্ঠী সুযোগ বুঝে এ সকল নিরীহ কৃষকদের অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে গহীন পাহাড়ে নিয়ে গিয়ে অমানবিক নির্যাতন করে এবং নির্যাতনের ভিডিও দেখিয়ে ও ভিকটিমের চিৎকার শুনিয়ে তার পরিবারের নিকট থেকে মুক্তিপণের টাকা আদায় করে থাকে। গ্রেপ্তারকৃতরা আরো জানায় যে, তাদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনা ও ব্যবহৃত অস্ত্রের অর্থের যোগানের জন্য মূলত তারা এই অপহরণের মাধ্যমে মুক্তিপণ আদায় করে আসছে।
গ্রেপ্তারকৃত ৫ আসামীর মধ্যে আবুল হোসেন স্থানীয় বাঙ্গালী। সে মূলত আরসা সন্ত্রাসীদের অপহরণ সংক্রান্তে তথ্যদাতা। কোন কৃষকের আর্থিক সামর্থ্য রয়েছে, কাকে অপহরণ করলে মুক্তিপণ পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এই সংক্রান্তে তথ্য আরসা সন্ত্রাসীদের নিকট প্রদান করতো। তাছাড়া টেকনাফ, মহেশখালীসহ অন্যান্য জায়গা থেকে লোকাল অস্ত্র সংগ্রহে সে আরসার সদস্যদের সহযোগিতা করতো বলে জানায়।
র্যাব সুত্রে জানা গেছে, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠী বিশেষ করে আরসা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আতঙ্ক সৃষ্টি, হামলা, খুন, অপহরণ, ডাকাতি, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন ধরণের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে থাকে। এরই প্রেক্ষিতে র্যাব-১৫ গত ২০২৩ সালে ৯৪ জন এবং ২০২৪ সালে ২৪ জন আরসা সদস্য মোট ১১৮ জন আরসা সন্ত্রাসীকে ৭১টি আগ্নেয়াস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করা হয়। সম্প্রতি মোছারখোলা, উনচিপ্রাং রোহিঙ্গা ক্যাম্পসংলগ্ন এলাকাগুলোতে অপহরণের মাত্রা বেড়ে যায়। তাছাড়া বিভিন্ন ক্যাম্পে হত্যাকাণ্ডের সংখ্যাও বাড়তে থাকে ফলে ক্যাম্পসমূহে গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করা হয়।

