ঝিনাইদহে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এসময় পুলিশ প্রায় দুই শতাধিক রাউন্ড গুলি, সাউন্ড গেনেড ও টিয়ারশেল ছুড়েছে বলে দাবি করেছেন স্থানীয় জনগণ।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা সরকার পতনের এক দফা দাবিতে রবিবার (৪ আগস্ট) সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলন চলাকালে ঝিনাইদহ সদর থানার সামনে এ ঘটনা ঘটে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, সংঘর্ষের ফলে পুরো শহর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। বন্ধ হয়ে গেছে দোকানপাট, আতঙ্ক বিরাজ করছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। এ ঘটনায় ঝিনাইদহ থেকে ঢাকা, যশোর, কুষ্টিয়া ও চুয়াডাঙ্গাসহ সব রুটে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে চলে দফায় দফায় এ সংঘর্ষ।
এর আগে কোটা বিরোধীরা সকাল ১১টার সময় শহরের প্রেরণা একাত্তুর চত্বর থেকে বিশাল মিছিল বের করে মুল শহরে ঢোকে। এসময় তাদের হাতে ব্যানারের পাশাপাশি ছিল বিভিন্ন ধরনের ফেস্টুনসহ লাঠি-সোটা। এরপর তারা পায়রা চত্বরে এসে সমাবেশ করাকালিন সময় শহরের বিভিন্ন ব্যানার পোস্টার ভাংচুর শুরু করে। একপর্যায়ে তারা ঝিনাইদহ বাস-টার্মিনাল এলাকায় মিছিলসহকারে যেয়ে আবারো সমাবেশ করে। এরপর তারা আবারো ঝিনাইদহ মুল শহরে মিছিল সহকারে ঢুকে পড়ে। এসময় ছাত্ররা জানায় তাদের দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ। এরপর মিছিলটি পুনরায় শহরের প্রবেশ করে সদর থানার সামনে আসলে থানায় ইট-পাটকেল নিক্ষেপ শুরু হয়। তখন পুলিশও পাল্টা আক্রমণ চালায়। এ দফায় দফায় সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা চলতে থাকে। একদিক থেকে কোটা আন্দোলনকারীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। অন্যদিক থেকে থানার প্রধান ফটক লাগিয়ে পুলিশ থানার মধ্যে থেকে বিভিন্ন ধরনের সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ার শেল, রাবার বুলেট মারতে থাকে। একপর্যায়ে পুলিশ থানা থেকে বের হয়ে আন্দোলনকারীদের উপর ধাওয়া করতে করতে গুলি করতে থাকে। এসময় আন্দোলনকারীদের বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। প্রায় দুই ঘণ্টা চলে এ সংঘর্ষ। এরপর পরিবেশ একটু স্বাভাবিক হলে কোটা আন্দোলনকারীরা সংঘবদ্ধ হয়ে বেরিয়ে যায়।
পুরো শহরে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। সাধারণ মানুষের চলাচল একেবারেই কমে গেছে। বেশির দোকানপাট বন্ধ রয়েছে।
ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সৈয়দ রেজাউল ইসলাম জানান, হাসপাতালে ২৪ জন শিক্ষার্থীকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে কয়েকজন গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আসে। তারা চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছে।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. নুসরাত জানান, যে ছাত্ররা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছে তাদের শরীরে ইটপাটকেলের আঘাত, ছররা গুলির চিহ্নসহ বিভিন্ন ধরনের আগতের চিহ্ন রয়েছে।
ঝিনাইদহ পুলিশ সুপার আজিম উল আহসান জানান, শহরের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে পুলিশ।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh